মানুষের মনের কথা জানার প্রযুক্তি উদ্ভাবনে কাজ করছেন স্যাম অল্টম্যান
Published: 27th, October 2025 GMT
মানুষের চিন্তার সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে মনের কথা জানতে চান চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্যাম অল্টম্যান। এ জন্য অস্ত্রোপচার ছাড়াই মানুষের মস্তিষ্কের স্নায়ু সংকেতের অর্থ শনাক্ত করতে সক্ষম ব্রেন কম্পিউটার ইন্টারফেস (বিসিআই) প্রযুক্তি উদ্ভাবনের সঙ্গে যুক্ত ‘মার্জ ল্যাবস’ নামের একটি স্টার্টআপে বিনিয়োগও করেছেন তিনি। নতুন এই প্রযুক্তিতে শব্দতরঙ্গ ও চৌম্বকক্ষেত্র ব্যবহার করে মস্তিষ্কের সংকেত বিশ্লেষণের মাধ্যমে মানুষের মনের কথা জানা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইলন মাস্কের নিউরালিংক মস্তিষ্কে চিপ বসানোর পদ্ধতি অনুসরণ করলেও মার্জ ল্যাবস চাইছে কোনো ধরনের অস্ত্রোপচার ছাড়াই সেই লক্ষ্য অর্জন করতে। আর তাই মার্জ ল্যাবসের এই প্রযুক্তি উন্নয়নের জন্য শীর্ষ গবেষকদের নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ দলও গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন অল্টম্যান। দলটিতে আলট্রাসাউন্ডের সাহায্যে মস্তিষ্কের নিউরন শনাক্ত ও নিয়ন্ত্রণের উদ্ভাবনী কাজের জন্য পরিচিত যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (ক্যালটেক) বায়োমলিকুলার প্রকৌশলী মিখাইল শাপিরো যোগ দেবেন বলে জানা গেছে। টুলস ফর হিউম্যানিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যালেক্স ব্লানিয়াও থাকবেন দলটিতে।
মার্জ ল্যাবসে শাপিরোর ভূমিকা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি, তিনি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবেই যুক্ত হবেন এবং বিনিয়োগ আলোচনায় নেতৃত্ব দেবেন বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। শাপিরো দীর্ঘদিন ধরে এমন প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা করছেন, যেখানে কোনো অস্ত্রোপচার ছাড়াই আলট্রাসাউন্ড প্রয়োগ করে মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষের কার্যক্রম দূর থেকে পর্যবেক্ষণ বা উদ্দীপিত করা যায়। পাশাপাশি জিনভিত্তিক পদ্ধতির মাধ্যমে স্নায়ুকোষকে শব্দতরঙ্গের প্রতি আরও সংবেদনশীল করে তোলার গবেষণাও করছেন তিনি। এই পদ্ধতিতে মানবদেহের কোষ নিজেই হয়ে উঠতে পারে তারহীন যোগাযোগমাধ্যম।
আরও পড়ুনএআইয়ের দেওয়া সব তথ্য বিশ্বাস করা ঝুঁকিপূর্ণ, সতর্ক করলেন স্বয়ং স্যাম অল্টম্যান২৮ জুন ২০২৫মার্জ ল্যাবস প্রায় ২৫ কোটি ডলার তহবিল সংগ্রহের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সহপ্রতিষ্ঠাতা হিসেবে অল্টম্যানের নাম থাকলেও প্রতিষ্ঠানটির দৈনন্দিন কার্যক্রমে তিনি যুক্ত থাকবেন না। বিশেষজ্ঞদের মতে, মস্তিষ্ক ও যন্ত্রের মধ্যে যোগাযোগের জন্য এটি এ পর্যন্ত অন্যতম উচ্চাভিলাষী উদ্যোগ। প্রযুক্তিটি বাণিজ্যিকভাবে সফল হলে ভবিষ্যতে শুধু মনে মনে ভাবলেই এআই সহকারী তা বুঝে উত্তর জানিয়ে দিতে পারবে।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম র জ ল য বস
এছাড়াও পড়ুন:
চ্যাটজিপিটিতে সরাসরি অ্যাডোবি ফটোশপ, এক্সপ্রেস ও অ্যাক্রোব্যাট ব্যবহার করার সুযোগ
চ্যাটজিপিটিতেই এখন ব্যবহার করা যাবে অ্যাডোবির জনপ্রিয় তিন অ্যাপ—ফটোশপ, অ্যাডোবি এক্সপ্রেস ও অ্যাক্রোব্যাট। ওপেনএআইয়ের সঙ্গে যৌথ ঘোষণায় অ্যাডোবি জানায়, ব্যবহারকারীরা নির্দেশ দিলেই ছবি সম্পাদনা, ডিজাইন তৈরি কিংবা পিডিএফ নথি গোছানোর মতো কাজ চ্যাটজিপিটির মধ্যেই সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
চাইলেই ব্যবহারকারীরা চ্যাটজিপিটি থেকে অ্যাডোবির নেটিভ অ্যাপে গিয়ে আগের কাজ অব্যাহত রাখতে পারবেন। তবে চ্যাটজিপিটির ভেতরে অ্যাডোবির অ্যাপ ব্যবহার করে তৈরি বা সম্পাদিত কোনো কনটেন্ট ব্যবহারকারীর অ্যাডোবি ক্রিয়েটিভ ক্লাউড বা অ্যাক্রোব্যাট অ্যাকাউন্টে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংরক্ষণ হবে না।
অ্যাডোবি জানায়, অ্যাপগুলো বিনা খরচে উন্মুক্ত করা হয়েছে এবং ওপেনএআইয়ের অ্যাপস এসডিকি যেসব দেশে চালু রয়েছে, সেসব দেশেই এগুলো ব্যবহার করা যাবে। তবে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ব্যবহারকারীরা আপাতত এই সুবিধার বাইরে থাকছেন। প্রতিষ্ঠানের দাবি, এই উদ্যোগের ফলে চ্যাটজিপিটির ৮০ কোটির বেশি বৈশ্বিক ব্যবহারকারী এখন সরাসরি অ্যাডোবির সৃজনশীল টুলগুলোয় প্রবেশাধিকার পাচ্ছেন।
চ্যাটজিপিটিতে ফটোশপ, অ্যাক্রোব্যাট বা অ্যাডোবি এক্সপ্রেস ব্যবহার শুরু করতে কেবল ‘Adobe Photoshop’, ‘Adobe Acrobat’ বা ‘Adobe Express’ লিখে নিজের অনুরোধ জানাতে হবে। অ্যাডোবি এক্সপ্রেস ও অ্যাক্রোব্যাট ব্যবহারের জন্য অ্যাডোবি অ্যাকাউন্টে সাইন–ইন প্রয়োজন হলেও মূল ফটোশপ–সুবিধা ব্যবহার করতে আলাদা অ্যাডোবি অ্যাকাউন্ট প্রয়োজন নেই।
এর আগে ক্যানভা, ফিগমা, কোরসেরা, এক্সপিডিয়া, স্পটিফাই, পেলোটন, ট্রিপঅ্যাডভাইজার, জিলো, বুকিং ডটকম ও ইনস্টাকার্ট এ ধরনের আরও বেশ কয়েকটি অ্যাপ চ্যাটজিপিটির অ্যাপস এসডিকিতে যুক্ত হয়েছে। এসব অ্যাপ সরাসরি চ্যাটজিপিটির ভেতর থেকেই খুলে কাজ করা যায়।
অ্যাডোবি বলছে, তাদের ফায়ারফ্লাই এআই মডেল নিরাপদ ও লাইসেন্স করা ডেটায় প্রশিক্ষিত, যা বর্তমান এআই প্রতিযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটির অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে। ওপেনএআইয়ের সঙ্গে অংশীদারত্ব নিয়ে কিছু প্রশ্ন থাকলেও অ্যাডোবি দাবি করে, তাদের লক্ষ্য সৃজনশীল পেশাজীবীদের কাজকে আরও সহজ করা, তাঁদের ভূমিকা কমিয়ে দেওয়া নয়।
প্রতিষ্ঠানটি আরও জানায়, স্বতন্ত্র অ্যাপ হিসেবেই অ্যাডোবি এক্সপ্রেস ও অ্যাক্রোব্যাট প্রতি মাসে ৭০ কোটির বেশি মানুষ ব্যবহার করেন। অ্যাডোবির ধারণা, চ্যাটজিপিটির মতো ব্যবহৃত সহজ প্ল্যাটফর্মে অ্যাপগুলো যুক্ত হওয়ায় নতুন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়বে এবং বিদ্যমান ব্যবহারকারীদের কাজও দ্রুত গতির হবে।
চ্যাটজিপিটিতে অ্যাডোবির অ্যাপগুলো দিয়ে যা করা যাবে—
ফটোশপ ফর চ্যাটজিপিটি: ছবি সম্পাদনা, নির্দিষ্ট অংশ সংশোধন, উজ্জ্বলতা ও কনট্রাস্ট সমন্বয়, ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন, গ্লিচ বা গ্লোর মতো সৃজনশীল ইফেক্ট যোগ করা—এসব কাজ মূল ছবির মান বজায় রেখেই করা যাবে।
অ্যাডোবি এক্সপ্রেস ফর চ্যাটজিপিটি: ডিজাইন তৈরি ও কাস্টমাইজ, টেমপ্লেট পরিবর্তন, টেক্সট ছবি বদলানো, ব্যাকগ্রাউন্ড এবং প্রয়োজন হলে ডিজাইনে অ্যানিমেশন যোগ করার সুযোগ থাকবে।
অ্যাক্রোব্যাট ফর চ্যাটজিপিটি: চ্যাটজিপিটির মধ্যেই পিডিএফ আপলোড করে সম্পাদনা, সংকুচিত করা, অন্য ফরম্যাটে রূপান্তর, টেক্সট বা টেবিল আলাদা করে বের করা এবং একাধিক ফাইল একত্র করা যাবে।
অ্যাডোবি জানিয়েছে, চ্যাটজিপিটিতে অ্যাপগুলোর সুবিধা ধাপে ধাপে আরও সম্প্রসারণ করা হবে।