ইসলাম ধর্মকে বিকৃত করে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা জনগণ মেনে নেবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “দেশকে আর বিভ্রান্তির দিকে ঠেলে না দিয়ে জনপ্রিয়তা যাচাইয়ে ভোটের মাঠে আসতে হবে।”

আরো পড়ুন:

ব্যানার নিয়ে চট্টগ্রামে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ হয়ে যুবদলকর্মী নিহত

দল যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে, তাদের ভোট চাওয়ার দরকার নেই: ফরিদ আহমেদ

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী ওলামা দল আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াতকে বন্ধু হিসেবে থাকার আহ্বান জানিয়ে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, “কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকুন। রাজনীতিবিদদের বেহেশতের কথা না বলাই ভালো।”

রাজনৈতিক বিভেদ সৃষ্টি না করার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা আরো বলেন, “কর্মসূচি নিয়ে মাঠে যান, মানুষের আস্থা অর্জন করুন। সাহস থাকলে নির্বাচনে আসুন।”

বিরোধীদলের সাবেক এই চিফ হুইপ বলেন, “বেহেশতে নিয়ে যাবে বলে ভোট নেওয়া এত সহজ নয়। শেখ মুজিবও ভোট চুরি করেছেন। শেখ মুজিবের মেয়ে শেখ মুজিবকেই কপি করে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছেন। তাই আর হিংসা নয়, বিদ্বেষ নয়—আসুন আমরা সবাই ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই বিপ্লবের চেতনা স্মরণ করে ভাই ভাই মিলে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিই।”

জাতীয়তাবাদী ওলামা দল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক মাওলানা মুফতি মো.

আলমগীর হোসাইন খলিলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এটিএম আব্দুল বারী ড্যানী, জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাওলানা মো. আবুল হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

ঢাকা/রায়হান/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র আহ ব

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বিলুপ্ত করা হবে: আমীর খসরু

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বিলুপ্ত করা হবে। এই বিভাগ তৈরি করা হয়েছে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে। এর উদ্দেশ্য ছিল এমডি নিয়োগ ও পর্ষদে পছন্দের লোক বসিয়ে লুটপাট করা। বিএনপি আগের বার ক্ষমতায় এসে এটি তুলে দিয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা এটি আবার ফিরিয়ে এনেছিলেন। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আবার এটি বিলুপ্ত করবে।

আর্থিক খাতে সংস্কার করা ও শৃঙ্খলা ফেরাতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংককে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে। শুধু স্বায়ত্তশাসন যথেষ্ট নয়, পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে। এ ছাড়া বিনিয়োগ বাড়াতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সংস্কার করা হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এ কথা বলেছেন। আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ইকোনমিক রিফর্ম সামিটে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দুই ভাগ করে কী লাভ হয়েছে, এই প্রশ্ন তোলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তাঁর ধারণা, এতে কোনো লাভ হবে না। কারণ, দুই ভাগেই আমলারা আছেন। এনবিআর নিয়ে বিএনপির ভিন্ন পরিকল্পনা আছে বলে জানান তিনি।

আমলাতন্ত্র প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আমলাতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ করবে না, জবাবদিহিরও কিছু নেই। বরং আমলাদের দায়িত্ব কমিয়ে আনা হবে। সরকার পরিচালনার সব ক্ষেত্রে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ হবে। সেই সঙ্গে নীতিনির্ধারণের দায়িত্ব আমলাতন্ত্র নয়, নীতিনির্ধারকদের হাতেই থাকবে।

অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচনায় জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম তামিম বলেন, ‘আমরা বর্তমানে তীব্র জ্বালানিসংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। গত ১৫ বছরে নিজস্ব জ্বালানি উৎস কাজে লাগাতে বিনিয়োগ হয়নি, বরং বিনিয়োগ হয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র স্থাপনে। গত ১৫ বছরে প্রায় ৩০ বিলিয়ন বা ৩ হাজার কোটি ডলার ব্যয় হয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে, কেননা, এখানেই সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির সুযোগ ছিল।’

অতীত সরকারের প্রবৃদ্ধির মডেলে দারিদ্র্য ও বেকারত্ব সৃষ্টি হয়েছিল। তাদের তথাকথিত অর্থনৈতিক অলৌকিকতার গল্পের আড়ালে লুকিয়ে ছিল কঠিন বাস্তবতা। আজ সেই বাস্তবতা প্রকাশ্যে এসেছে বলে মন্তব্য করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর। বলেন, মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে, দারিদ্র্য বেড়েছে। ইতিমধ্যে বলা হচ্ছে, আরও ৩০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাবে। ১৩ লাখ তরুণ-তরুণী বেকার। স্নাতক পর্যায়ে প্রতি তিনজনের একজন কর্মহীন।

রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে। হয় আমরা এই স্থবিরতা মেনে নেব, না হয় অভূতপূর্ব সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাব। সে জন্য প্রয়োজন নতুন অর্থনৈতিক মডেল।’

পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ বলেন, বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাবে পিছিয়ে আছে। দেশে জাতীয় বিনিয়োগনীতি নেই। ফলে বিদেশি ও স্থানীয় বিনিয়োগের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য ও পরিকল্পনা নেই। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে একটি পদ্ধতিগত বিনিয়োগ উন্নয়ন কৌশল থাকা উচিত—জাতীয় বাণিজ্য, রপ্তানি ও আমদানি নীতির সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে এটি।

দেশে গণতন্ত্র ফিরেছে

মূল অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দাবিদাওয়া বা সংস্কারের প্রয়োজন হলে রাস্তায় নয়, জনগণের দুয়ারে যেতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবিদাওয়া নিয়ে জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদে এসে পাস করিয়ে নিতে হবে।’

আমীর খসরু আরও বলেন, ‘দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন না আনতে পারলে শত সংস্কার করেও সুফল মিলবে না। আমাদের মধ্যে সহনশীলতা আনতে হবে, অন্যের মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। দ্বিমত থাকলেও পরস্পরের প্রতি সম্মান বজায় রাখা উচিত।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য মনজুর হোসেন, জামায়াতে ইসলামীর যুক্তরাষ্ট্রের মুখপাত্র নকিবুর রহমান, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ, হিসাববিদ স্নেহাশীষ বড়ুয়া, কাউন্টারপার্টের নির্বাহী সম্পাদক জ্যোতি রহমান, চালডালের সিইও ওয়াসিম আলিম প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তাইওয়ানের রোল মডে ইসরায়েল: প্রেসিডেন্ট লাই চিং
  • উন্নয়নের বয়ান ও মেগা প্রকল্পের রাজনীতি
  • ‘শেখ হাসিনার কাঠামোয় নির্বাচন হলে জনগণ মেনে নেবে না’
  • কোটি টাকার অব্যবহৃত যানে গজিয়েছে গাছ 
  • দল যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে, তাদের ভোট চাওয়ার দরকার নেই: ফরিদ আহমেদ
  • অবৈধ অর্থ উদ্ধারে আইন বাস্তবায়নের দাবি রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও অহিংস গণ–অভ্যুত্থান বাংলাদেশের
  • এনবিআর নিয়ে বিএনপির ভিন্ন পরিকল্পনা আছে: সালাহউদ্দিন
  • টাঙ্গাইলে গণসংযোগে বিএনপি নেতার মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর মাঠে নামলেন স্ত্রী
  • বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বিলুপ্ত করা হবে: আমীর খসরু