উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যেতে যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন
Published: 28th, October 2025 GMT
বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন থাকে অনেকেরই। এই স্বপ্ন পূরণে প্রয়োজন সঠিক প্রস্তুতি ও নির্ভুল কাগজপত্র। ভর্তিপ্রক্রিয়া থেকে শুরু করে ভিসাপ্রাপ্তি পর্যন্ত সবকিছু নির্ভর করে প্রয়োজনীয় নথিগুলো সঠিকভাবে প্রস্তুত ও জমা দেওয়ার ওপর। কোনো একটি কাগজপত্র ভুল বা অসম্পূর্ণ থাকলে আবেদন বাতিল হয়ে যেতে পারে। তাই বিদেশে উচ্চশিক্ষার পরিকল্পনা করার আগেই জানা জরুরি কী কী কাগজপত্র লাগবে এবং কেন সেগুলো গুরুত্বপূর্ণ।
১.
বিদেশে পড়াশোনার সবচেয়ে মৌলিক নথি হলো বৈধ পাসপোর্ট। এটি ছাড়া আন্তর্জাতিক ভ্রমণ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি—কোনোটাই সম্ভব নয়। পাসপোর্টের মেয়াদ যেন অন্তত পড়াশোনার মেয়াদ পর্যন্ত বৈধ থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে পাসপোর্ট নবায়ন করে নিতে হবে।
২. অফার লেটার
আপনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেছেন, সেখান থেকে প্রাপ্ত ভর্তি নিশ্চিতকরণ চিঠিই আপনার ‘অফার লেটার’। এটি প্রমাণ করে যে আপনি ওই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার অনুমতি পেয়েছেন। ভিসা–প্রক্রিয়ার সময় এই লেটার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৩. অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্ট
আপনার পূর্ববর্তী শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র হিসেবে এসএসসি, এইচএসসি, ব্যাচেলর বা মাস্টার্স ডিগ্রির সার্টিফিকেট ও মার্কশিট জমা দিতে হয়। এগুলো অফিশিয়ালি অনুবাদ ও সত্যায়িত করা জরুরি, বিশেষ করে ইংরেজি ছাড়া অন্য ভাষায় লেখা থাকলে।
আরও পড়ুনজেনে নিন বিশ্বের সেরা ১০ স্কলারশিপ সম্পর্কে২৬ অক্টোবর ২০২৫৪. ভাষা দক্ষতার প্রমাণ
বিদেশের বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়েই ইংরেজি ভাষায় পড়াশোনা হয়। তাই ইংরেজিতে দক্ষতার প্রমাণ হিসেবে আইইএলটিএস, জিআরই, জিম্যাট, এসএটি বা টোয়েফল স্কোর জমা দিতে হয়। নির্দিষ্ট দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে স্কোরের মানদণ্ড আলাদা হতে পারে।
৫. আর্থিক প্রমাণ
বিদেশে পড়ার খরচ বহন করার সক্ষমতা প্রমাণ করতে হয় ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা স্পনসরশিপ লেটারের মাধ্যমে। এতে বোঝানো হয় যে আপনি টিউশন ফি ও জীবনযাত্রার খরচ নির্বিঘ্নে মেটাতে পারবেন। কিছু দেশের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ব্যাংকে জমা হিসেবে দেখাতে হয়।
৬. স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন
অনেক দেশেই শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। মেডিকেল রিপোর্ট বা হেলথ সার্টিফিকেটের মাধ্যমে বোঝানো হয় যে আপনি সুস্থ এবং বিদেশে বসবাসের উপযুক্ত। বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও নিউজিল্যান্ডের ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
৭. ভিসা আবেদনপত্র ও ফি
সঠিকভাবে পূরণকৃত ভিসা আবেদন ফরম এবং নির্ধারিত ফি জমা দেওয়া ভিসা প্রক্রিয়ার প্রধান ধাপ। ফরম পূরণের সময় সতর্ক থাকতে হবে যেন কোনো ভুল না থাকে। ভুল তথ্য ভিসা বিলম্ব বা বাতিলের অন্যতম কারণ।
আরও পড়ুনবিদেশে উচ্চশিক্ষা: মাস্টার্স থেকে পিএইচডি ও রিসার্চের সাতসতেরো২৭ অক্টোবর ২০২৫৮. ছবি
পাসপোর্ট সাইজের ছবি প্রায় সব আবেদনেই প্রয়োজন হয়। ছবির আকার, ব্যাকগ্রাউন্ড ও ফরম্যাট প্রতিটি দেশের নিয়ম অনুযায়ী ঠিক রাখতে হবে। সাধারণত ফটো স্টুডিওগুলোয় বললেই ওরা সংশ্লিষ্ট দেশের জন্য সাইজ অনুসারে আপনার ছবি তুলে দেবে।
৯. সুপারিশপত্র
‘রিকমেন্ডেশন লেটার’ বা সুপারিশপত্র হলো এমন একটি নথি, যা আপনার অ্যাকাডেমিক দক্ষতা, মনোভাব ও সম্ভাবনা সম্পর্কে শিক্ষক বা কর্মক্ষেত্রের সুপারভাইজার লিখে দেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আবেদনকারীর যোগ্যতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে এই চিঠিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। সাধারণত দুই থেকে তিনটি সুপারিশপত্র জমা দিতে হয়।
১০. স্টেটমেন্ট অব পারপাস
‘স্টেটমেন্ট অব পারপাস’ হলো আপনার পড়াশোনার উদ্দেশ্য, আগ্রহ, পূর্বের অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যসংবলিত নথি। এটি বিশ্ববিদ্যালয়কে বোঝায় কেন আপনি সেই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে চান এবং ভবিষ্যতে কীভাবে, সেই শিক্ষা কাজে লাগাবেন।
১১. লেটার অব মোটিভেশন
‘লেটার অব মোটিভেশন’ মূলত একটি ব্যক্তিগত বিবৃতি, যেখানে প্রার্থী নিজের লক্ষ্য, পড়াশোনার আগ্রহ, পেশাগত দৃষ্টিভঙ্গি এবং নির্বাচিত প্রোগ্রামের সঙ্গে তাঁর সামঞ্জস্য তুলে ধরেন। এটি আবেদনের প্রক্রিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী অংশ; কারণ, এর মাধ্যমেই বিশ্ববিদ্যালয় আপনার চিন্তাভাবনা ও মানসিক প্রস্তুতি সম্পর্কে ধারণা পায়।
বিদেশে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন সফল করতে সঠিক কাগজপত্র প্রস্তুত করা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। প্রতিটি নথি যাচাই, অনুবাদ ও সময়মতো জমা দেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। প্রস্তুত হোন যত্নসহকারে; কারণ, এই নথিগুলোর মাধ্যমেই শুরু হবে আপনার নতুন শিক্ষাযাত্রার পথচলা।
আরও পড়ুনবিদেশে উচ্চশিক্ষা: কোন দেশে কেন পড়বেন২৭ অক্টোবর ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক গজপত র প রস ত ত প রক র য় আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
৪৬তম বিসিএস: মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ
৪৬তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় সাময়িকভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। প্রথম পর্যায়ে সাধারণ ক্যাডারের ৯৭৫ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা ২৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাসুমা আফরীন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এই পরীক্ষাগুলো ঢাকার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত পিএসসির প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে।
মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি
তারিখ বার সময় প্রার্থীর সংখ্যা রেজিস্ট্রেশন নম্বর (সাধারণ ক্যাডার)
২৮ ডিসেম্বর রোববার সকাল ১০টা ১৯৫ জন ১১০০০৬৭৫ থেকে ১৮০২৫৯১৭ পর্যন্ত
২৯ ডিসেম্বর সোমবার সকাল ১০টা ১৯৫ জন ১১০০১৩৭৬ থেকে ১৮০২৫৯৩৬ পর্যন্ত
৩০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকাল ১০টা ১৯৫ জন ১১০০০৬৪৩ থেকে ১৮০২৪৮৩২ পর্যন্ত
৩১ ডিসেম্বর বুধবার সকাল ১০টা ১৯৫ জন ১১০০১৮৬৫ থেকে ১৮০২২৭৮০ পর্যন্ত
প্রার্থীর জন্য নির্দেশনা
* Form-1 এবং Form-3 জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক: লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সব প্রার্থীকে কমিশনের ওয়েবসাইট (www.bpsc.gov.bd) থেকে BPSC Form-1 ডাউনলোড করে হাতে পূরণ করতে হবে। এই ফরমের তিনটি কপি এবং আনুষঙ্গিক সব কাগজপত্রের তিনটি সত্যায়িত কপি মৌখিক পরীক্ষার দিন বোর্ডে জমা দিতে হবে।
* মৌখিক পরীক্ষার আগে BPSC Form-3 অনলাইনে বাংলায় পূরণ করে জমা দিতে হবে। এই ফরমের দুটি কপিও মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডে জমা দিতে হবে। ফরম পূরণের বিষয়ে টেলিটক থেকে এসএমএসের মাধ্যমে নির্দেশনা দেওয়া হবে।
* মৌখিক পরীক্ষার আগেই সব কাগজপত্রের স্ক্যান করা কপি গুগল ফরমে একটি ফাইলে আপলোড করতে হবে।
* কোনো প্রার্থীর কাছে ডাকযোগে সাক্ষাৎকারপত্র পাঠানো হবে না। কমিশন কর্তৃক মৌখিক পরীক্ষার সূচি ঘোষণার পর প্রার্থীদের ওয়েবসাইট থেকে সাক্ষাৎকারপত্র ডাউনলোড করে নিতে হবে।
* BPSC Form-1 ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র মৌখিক পরীক্ষা বোর্ডে জমা দিতে ব্যর্থ হলে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হবে এবং তিনি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না।
আরও পড়ুনপরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ২৭ পদের চাকরি পেতে আর কত অপেক্ষা৭ ঘণ্টা আগেমেডিকেল ও অন্যান্য সনদ
* মেডিকেল/বিডিএস ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন সনদ এবং অন্যান্য ডিগ্রির সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশন সনদের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে।
* ‘অ্যাপিয়ার্ড’ (Appeared) প্রার্থীদের ক্ষেত্রে পরীক্ষা শুরু ও শেষ হওয়ার তারিখ উল্লেখসহ প্রত্যয়নপত্র অবশ্যই জমা দিতে হবে।
* ওজন, উচ্চতা ও বুকের মাপসংক্রান্ত বিএমডিসি রেজিস্ট্রার্ড মেডিকেল প্র্যাকটিশনারের প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে, যেখানে প্র্যাকটিশনারের রেজিস্ট্রেশন নম্বর উল্লেখ থাকবে।
* সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত থাকলে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র (Clearance Certificate) অবশ্যই জমা দিতে হবে।
* ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী এবং তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থীদের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দেওয়া সনদের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে।
* BPSC Form-1 যথাযথভাবে যাচাইয়ের পর শুধু ত্রুটিমুক্ত আবেদনপত্রের বিপরীতেই প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হবে।
আরও পড়ুনসকালের অ্যালার্ম, না ফোনভীতি? জেন–জিরা কর্মজীবনের চ্যালেঞ্জ জয় করবেন যেভাবে৫ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনসহকারী শিক্ষক নিয়োগে দুই ধাপের লিখিত পরীক্ষা ২ জানুয়ারি১০ ডিসেম্বর ২০২৫