খুলনা নগরে সাম্প্রতিক সময়ে খুন, হত্যাচেষ্টা, ছিনতাই ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে খুলনা মহানগর বিএনপি।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে খুলনা বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে মহানগর বিএনপির নেতারা বলেন, খুলনা নগরের জননিরাপত্তা এখন ভয়াবহ হুমকির মুখে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দৃশ্যমান তৎপরতা না থাকায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, দিনের পর দিন নগরের বিভিন্ন এলাকায় খুন, ছিনতাই, চুরি, মাদক ও সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটছে। তবু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। নাগরিক নিরাপত্তা রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর উদাসীনতায় খুলনা নগরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

বিবৃতিদাতারা হলেন—বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম (বকুল), তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম (মনা), সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম (তুহিন), সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাদী, মাসুদ পারভেজ বাবু ও চৌধুরী হাসানুর রশিদ (মিরাজ) প্রমুখ।

খুলনা মহানগর বিএনপির নেতারা বলেন, প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণেই অপরাধীরা এখন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষ ঘরে-বাইরে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। রাতের নগরে আতঙ্ক, আর দিনের বেলায় অজানা শঙ্কা—এটাই এখন খুলনার বাস্তব চিত্র।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিএনপি সব সময় শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিশ্বাসী। কিন্তু খুন, ছিনতাই, গুম, চাঁদাবাজি ও মাদকচক্রের বিস্তার খুলনা নগরের সামাজিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলছে। এই পরিস্থিতিতে দলটি নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের প্রতি অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানায়। প্রশাসনের আন্তরিকতা, দায়িত্বশীল ভূমিকা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা ছাড়া খুলনা নগরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা সম্ভব নয়।

বিবৃতিতে নগরবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে অপরাধ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র অপর ধ নগর র

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সর্বাগ্রে: স্বরাষ্

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সর্বাগ্রে ও সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।”

সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাজধানী ঢাকায় পুলিশ হেডকোয়ার্টারের ‘হল অব প্রাইডে’ বাংলাদেশ পুলিশ আয়োজিত বিশেষ অপরাধ পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আরো পড়ুন:

ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবন সাময়িকভাবে ‌‘কারাগার ঘোষণা’

আইনশৃঙ্খলার অনেক উন্নতি হয়েছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “এ দেশের আপামর জনগণ, রাজনৈতিক দলসহ সর্বমহলের প্রত্যাশা পূরণের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব পুলিশের কাঁধে। সবার প্রত্যাশা-বাংলাদেশ পুলিশ সামনের জাতীয় নির্বাচনে এমন এক মানদণ্ড স্থাপন করবে, যা শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রশংসিত হবে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ পুলিশসহ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করে যাচ্ছে।”

উপদেষ্টা বলেন, “আইনের প্রয়োগ শুধু শক্তি দিয়ে নয়, ন্যায়, নিষ্ঠা ও মানবিকতা দিয়েও প্রতিষ্ঠিত হয়।’

পুলিশকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “নির্বাচনী মাঠে আপনারা কেবল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী নন; আপনারা জনগণের নিরাপত্তা, আস্থা ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার প্রতীক।”

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “সামনে নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনা ও সংলাপ শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে পুলিশ সদস্যদের কেউ কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষাবলম্বন, বিশেষ সুবিধা প্রদান ও গ্রহণ এবং নিজেকে রাজনৈতিক কর্মী ভাবা যাবে না।”

উপদেষ্টা বলেন,“ফ্যাসিস্টদের তালিকা পুলিশের কাছে রয়েছে। তারা সমাজ ও রাষ্ট্রে অস্থিরতা সৃষ্টিতে সরাসরি জড়িত। তাছাড়া অনেক অপরাধী জামিনে ছাড়া পেয়ে অপরাধ করছে। তিনি বলেন, ফ্যাসিস্টদের অপকর্ম, অপপ্রচার, অপরাজনীতি, অপরাধ ও ঝটিকা মিছিল ঠেকাতে গ্রেপ্তার বাড়াতে হবে। তবে নিরীহ মানুষকে হয়রানি করা যাবে না।”

ঊর্ধ্বতন পুলিশ অফিসারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “অধীনস্থ পুলিশ অফিসার ও ট্রুপসদের পেশাদারিত্ব, টিম স্পিরিট, শৃঙ্খলা ও মনোবল বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অধীনস্থদের মধ্যে যাদের পেশাদারিত্ব নাই, শৃঙ্খলা নাই, কমান্ড মানতে চায় না, যারা সরকার ও রাষ্ট্রের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করতে চায়; তাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।”

উপদেষ্টা বলেন, “জেলা পর্যায়ে ঘনঘন কোর কমিটির সভা আহ্বান করতে হবে। রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলাগুলো দ্রুত প্রত্যাহার, মিথ্যা মামলা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে।”

তিনি বলেন, “পুলিশের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চকে আরো সক্রিয় করতে হবে। জেলার সকল বিষয় নখদর্পণে রাখতে হবে।”

“থানা থেকে লুট হওয়া বা হারানো বা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান ত্বরান্বিত করতে হবে। জেলার কেপিআইগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। অগ্নিকাণ্ডের মত দুর্ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে পুলিশসহ সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে,” যোগ করেন তিনি।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন,“পুলিশের ওপর আক্রমণ কোনো অবস্থাতেই সহ্য করা হবে না। সাম্প্রতিককালে সাইবার অপরাধ বেড়ে যাচ্ছে। এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে তরুণ পুলিশ অফিসারদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।”

পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমের সভাপতিত্বে সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পুলিশের বিভিন্ন রেঞ্জের ডিআইজি, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও জেলার পুলিশ সুপাররা অংশগ্রহণ করেন।

এ সময় পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নৈরাজ্যের অবসান হতে হবে
  • আন্দোলনে গুলি চালানোর অভিযোগে আওয়ামী লীগ কর্মী গ্রেপ্তার
  • ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী রাজনীতির যাত্রা শুরু হয়েছিল: রিজভী
  • প্রতি ভোটকেন্দ্রে থাকবে ১৩ আনসার: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • আইডিয়াল কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, সাউন্ড গ্রেনেড
  • নীলফামারীর ইপিজেডে বন্ধ কারখানার শ্রমিকদের বিক্ষোভ
  • নির্বাচনের প্রচারে ভীতিহীন পরিবেশ নিশ্চিতে সরকার কাজ করবে, প্রত্যাশা জাতীয় পার্টির
  • নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সর্বাগ্রে: স্বরাষ্
  • ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাজিদ হত্যাকাণ্ডের ১০০ দিনেও গ্রেপ্তার নেই