জুলাই সনদের বিপক্ষে কথা বলে বাংলাদেশে রাজনীতি করা যাবে না: সামান্তা শারমিন
Published: 29th, October 2025 GMT
জুলাই সনদের বিপক্ষে কথা বলে বাংলাদেশে আর কোনো দিন রাজনীতি করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামন্তা শারমিন। আজ বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে মেট্রোরেল স্টেশনের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন। ‘নাগরিক নিরাপত্তা ও নগরে নিরাপদ পানির দাবিতে’ এ মানববন্ধনের আয়োজন করে জাতীয় নাগরিক পার্টির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা।
মানববন্ধনে সামান্তা শারমিন বলেন, আজকেও বড় বড় রাজনৈতিক দলকে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় শোডাউন করতে দেখা গেছে। তারা জুলাই সনদে তাদের পার্টির অবস্থান ব্যাখ্যা না করেই ধানের শীষে কিংবা অন্যান্য মার্কায় ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছে। তিনি তাদের উদ্দেশে প্রশ্ন রাখেন, ‘আপনারা নাগরিকদের জন্য, দেশের মানুষের জন্য গত একটা-দেড়টা বছর ধরে কী কথাটা বলেছেন? এমন কোন কথাটা বলেছেন, যার কারণে মানুষ ভালোবেসে আপনাদের একটি ভোট দেবে?’
সামান্তা শারমিন আরও বলেন, ‘মানুষ আপনাদের ভালোবাসা থেকে ভোট দেবে না। মানুষ ভোট দেবে ভয় থেকে ও পাওয়ারের (ক্ষমতার) কারণে। কারণ, তারা ভয় পায় যে আপনাদের কাছাকাছি না থাকলে তাদের ন্যূনতম মর্যাদাও কেড়ে নেওয়া হবে। এমনকি তাদের রাস্তার চায়ের দোকানটিও হয়তো দখল করে নেওয়া হবে। ভয়ে ভোট দিতে বাধ্য হলেও, ভালোবেসে আপনাদের আর ভোট দেবে না।’
সামান্তা শারমিন বলেন, ‘আপনাদের মনে হতে পারে, ন্যায্য পানির জন্য লড়াই, এটা আবার কেমন বস্তু? কিন্তু আমরা বলতে চাই, এই ন্যায্য পানির জন্য লড়াই, প্রত্যেকটা সুনাগরিকের মর্যাদা রক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য লড়াই—এটাই বাংলাদেশের আসল মর্যাদা নিশ্চিত করবে।’
ঢাকা একটি মৃত্যুকূপ মন্তব্য করে সামান্তা বলেন, এই নগরীতে প্রতিদিন শত শত মানুষ জীবন-জীবিকার জন্য ছুটে আসে। কিন্তু এখানে এসেই মানুষ জীবন হারায়। এই ঢাকা শহরকে ‘মেগা সিটি’ নাম দেওয়া হলেও, এটি এখন একটি ‘মেগা মৃত্যুকূপ’। এই মৃত্যুকূপ থেকে ঢাকাকে মুক্ত করতে হবে।
মানববন্ধনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, এনসিপি বাংলাদেশের জনগণের নাগরিক অধিকার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এই নগরে মানুষ সকালে ঘর থেকে বের হয়ে শত মৃত্যুর ঝুঁকি এড়িয়ে রাতে নিরাপদে বাড়ি ফেরে, এটাই এক বিরাট আশ্চর্য। ঢাকা শহর আজ বাসস্থানের অযোগ্য হয়ে গেছে। এখানে নাগরিকদের কোনো নিরাপত্তা নেই। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় নিরাপদে যাতায়াত করা যায় না। প্রায়ই ছিনতাইয়ের শিকার হতে হয়। আবার আধা বেলা কিংবা এক দিন বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় এবং রাস্তাগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। অর্থাৎ একটি দেশের রাজধানী এবং সর্বোচ্চ প্রশাসনিক জায়গায়ও নাগরিকেরা ন্যূনতম নাগরিকসেবা পাচ্ছে না।
আদীব বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশে প্রত্যেক নাগরিকের জীবন-জীবিকা এবং সব বিষয় নিরাপদ করে তুলতে হবে। আমরা সরকারকে অনুরোধ করব, ঢাকায় যে খালগুলো দখল হয়েছে, সেগুলো উদ্ধার করে এই জলাবদ্ধতা দূর করতে হবে।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির নিউমার্কেট থানার যুগ্ম সমন্বয়কারী মোহাম্মদ মামুন বলেন, হাসপাতালগুলোতে যেন নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করা হয়। বেশির ভাগ হাসপাতালে নাগরিকেরা অনিরাপদ পানি পান করে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হন। ঢাকা শহরের বিভিন্ন গলিতে নিরাপদে চলাচলের জন্য এবং নারীদের জন্য নিরাপদ বাসের ব্যবস্থা ও ইলেকট্রিক কার চালু করার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
মানববন্ধনে জাতীয় নাগরিক পার্টির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আপন দ র র জন য ন র পদ
এছাড়াও পড়ুন:
ডেঙ্গুতে নিহত সহপাঠীদের ছবি নিয়ে শহরে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
নারায়ণগঞ্জে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে নিহত ও আহত সহপাঠীদের ছবি নিয়ে মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীরা।
এ সময় শিক্ষার্থীদের সাথে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ নেয়। বুধবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি হয়।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, আক্রান্ত হয়ে যেসব সহপাঠীরা মারা গেছে তারা আর ফিরে আসবেনা, আমরা আর কোনো সহপাঠীকে ডেঙ্গুতে হারাতে চাই না।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের বক্তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বলেন, একের পর এক শিক্ষার্থী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। এই মৃত্যুর মিছিল ঠেকাতে হবে। নারায়ণগঞ্জ শহরের লার্ভা উৎপাদনের সবচেয়ে বড় ক্ষেত্র জিউস পুকুর।
যা এক সময়ে একটি স্বচ্ছ পানির পুকুর ছিল।এখানে মানুষ গোসল করত, সাঁতার কাটত। অবহেলার কারণে তা একটি নোংরা ডোবাতে পরিণত হয়েছে যা এখন শহরে মশা উৎপাদনের কারখানায় পরিণত হয়েছে।
এসময় ব্যানার-ফেস্টুন হাতে শিক্ষার্থীরা স্লোগান তোলে “জিউস পুকুর বাঁচাও, জীবন বাঁচাও।”
বক্তারা অভিযোগ করেন, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ঐতিহ্যবাহী জিউস পুকুরটি অবৈধ দখল ও ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এ জায়গাই এখন ডেঙ্গু বাহক এডিস মশার প্রজননক্ষেত্রে রূপ নিয়েছে।
শিক্ষকরা বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইতিমধ্যেই নারায়ণগঞ্জ শহরকে ‘ডেঙ্গু রেড জোন’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। এখন ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে।
স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক বছরে অন্তত ২৫ থেকে ৩০ জন বাসিন্দা ও শিক্ষার্থী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তারা অবিলম্বে জিউস পুকুর পরিষ্কার ও পুনর্গঠনের দাবি জানান।
কর্মসূচি শেষে এলাকাবাসীর পক্ষে একটি প্রতিনিধিদল সিটি করপোরেশন প্রশাসকের কাছে পুকুরটি দ্রুত সংস্কার ও পরিষ্কার করার দাবিতে স্মারকলিপি জমা দেন।