প্রতীক তালিকায় শাপলা কলি যুক্ত করে ইসি বুঝিয়েছে এনসিপি বাচ্চাদের দল বলে মন্তব্য করেছেন দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে অস্থায়ী কার্যালয়ে জাতীয় যুবশক্তির আয়োজনে ‘জুলাই সনদের বাস্তবায়ন এবং জাতীয় নির্বাচন কোন পথে’-শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।

আরো পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ছাড়া নির্বাচনের সুযোগ নেই: নাহিদ

এনসিপির নেতৃত্বে হতে পারে ‘মধ্যপন্থী’ জোট 

সামান্তা শারমিন বলেন, “কোনো ধরনের আইনি কারণ ছাড়া আমাদেরকে শাপলা কলি দিয়ে গেজেট দিয়েছে ইসি, তারা বুঝিয়েছে আমরা বাচ্চাদের দল।”

তিনি বলেন, “বড় দলগুলোও এনসিপিকে তেমনভাবে মূল্যায়ন করে থাকে, এটি এক ধরনের বৈষম্য।”

ঢাকা/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ত য় ন গর ক প র ট এনস প এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

চলমান বাণিজ্যযুদ্ধে নাজুক ‘যুদ্ধবিরতি’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে বৈঠককে ‘অসাধারণ’ বলে মন্তব্য করেছেন। একই সঙ্গে তিনি বৈঠককে ১০-এর মধ্যে ‘১২’ নম্বরও দিয়েছেন। তবে বিশ্লেষকেদের চোখে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের মধ্যে দুই নেতার এই সমঝোতা বা চুক্তি আসলে একধরনের নাজুক ‘যুদ্ধবিরতি’, যার মূল সমস্যাগুলো এখনো অমীমাংসিত।

গতকাল বৃহস্পতিবার যে কাঠামোতে যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন চীন কেনা আবার শুরু করবে, বিরল খনিজ রপ্তানিতে এক বছরের জন্য নিয়ন্ত্রণ স্থগিত রাখবে এবং যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর আরোপিত শুল্ক ১০ শতাংশ কমাবে—তা কার্যত দুই দেশের সম্পর্ককে ট্রাম্পের ‘লিবারেশন ডে’ অভিযান-পূর্ব অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যায়। উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২ এপ্রিল ট্রাম্প লিবারেশন ডে ঘোষণা করে চীনের ওপর বাণিজ্যিক শুল্ক আরোপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বাধীনতার সূচনা দাবি করেন।

বুসানের বৈঠকের পর ওয়াশিংটন যা চায় এবং বেইজিং যা দিতে প্রস্তুত, তার মৌলিক অমিল পাওয়া যাচ্ছে। আলোচনায় ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের মূল কারণগুলো যেমন চীনের শিল্পনীতি, অতিরিক্ত উৎপাদন এবং রপ্তানিনির্ভর প্রবৃদ্ধি মডেল—এসব বিষয় অনুপস্থিত ছিল।

নিউ আমেরিকান সিকিউরিটি সেন্টারের পরিচালক এমিলি কিলক্রিজ বলেন, ‘আসলে আমরা কী নিয়ে কথা বলছি? আমরা বলছি, দুই পক্ষের নেওয়া পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ কমানোর ব্যাপারে।’ বৈঠকের ফলাফলে দেখা যায়, সি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক মোকাবিলায় নতুন এক বাস্তববাদী পদ্ধতি নিয়েছেন। যেখানে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানতে রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের মতো নানা হাতিয়ার প্রয়োগ করা হচ্ছে।

এক কর্মকর্তা বলেন, চীনা প্রতিনিধিদলের প্রত্যাশা বাস্তবসম্মত ছিল। তারা জানত এই বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্কে মৌলিক পরিবর্তন আসবে না। তবে ট্রাম্পের ইতিবাচক মনোভাব ও বৈঠকটিকে ‘জি-টু’ বা দুই পরাশক্তির বৈঠক হিসেবে উপস্থাপন করা নিয়ে তারা সন্তুষ্ট ছিল।

কর্মকর্তা আরও বলেন, বেইজিং এই বৈঠককে বৃহত্তর এক আলোচনার সোপান হিসেবে দেখছে, যার মাধ্যমে দুই দেশ সম্পর্ক স্থিতিশীল করার সুযোগ পাবে।

বিশ্বমানের নেতা

দীর্ঘদিনের টানাপোড়েনের পর দুই নেতার উষ্ণ বৈঠক এবং আগামী বছর ট্রাম্পের বেইজিং সফরের প্রতিশ্রুতি ইতিবাচক হিসেবে দেখা হচ্ছে। এতে বাণিজ্যযুদ্ধের মাঝে থাকা বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর জন্য কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছে বলে বিশ্লেষকদের মত।

এপেক সম্মেলনের আগে বৈঠক শুরুর সময় সি বলেন, চীনের উন্নয়ন ও পুনরুত্থান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আমেরিকাকে আবার মহান করার লক্ষ্যবিরোধী নয়।

সি আরও বলেন, ‘আমি ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করতে চাই, যাতে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের জন্য দৃঢ় ভিত্তি তৈরি হয় এবং দুই দেশের উন্নয়নের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা যায়।’

বৈঠক শেষে ট্রাম্প উচ্ছ্বসিত ছিলেন। তিনি সিকে এক মহান দেশের মহান নেতা বলে প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘দুই বিশ্বশক্তির এমনভাবেই পরস্পরের সঙ্গে আচরণ করা উচিত।’

সাংহাইভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্লেনামের অংশীদার বো ঝেংইয়ান বলেন, ‘সীমিত সময়ের মধ্যে এই চুক্তি ও এর কাঠামো দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগের একটি উপায় হিসেবে কাজ করছে। এতে তারা ধীরে ধীরে পারস্পরিক স্বার্থ সামঞ্জস্য করতে পারে এবং আলোচনার ধারাবাহিকতা বজায় রাখার সুযোগ পাবে।’

কঠিন পরিস্থিতি

এই চুক্তি উভয় পক্ষকেই কিছুটা সময় দিচ্ছে। এপ্রিলের বেইজিং সফরের আগে ট্রাম্প যেমন কূটনৈতিক সাফল্য পেলেন, তেমনি যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্ক চাপ থেকে কিছুটা স্বস্তি পেলেন। তবে এই কৌশলগত যুদ্ধবিরতি সম্পূর্ণ নয়। চীনের সাম্প্রতিক বিরল খনিজ রপ্তানির লাইসেন্স নিয়ন্ত্রণ কেবল বিলম্বিত হয়েছে, বাতিল নয়। আগের নিষেধাজ্ঞাগুলো বহাল থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের কারখানাগুলো এখনো কাঁচামাল সরবরাহের অনিশ্চয়তায় ভুগছে।

ট্রিভিয়াম চায়নার ভূরাজনীতি বিশ্লেষক জো মাজুর বলেন, ‘এই বছর আমরা দেখেছি চীনের “আগে আঘাত নয়, পরে প্রত্যাঘাত” কৌশল পুরোপুরি সফল হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন পরিষ্কার, বিরল খনিজই চীনের মূল প্রভাবের অস্ত্র, যার জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলনীয় কোনো শক্তি বা বিকল্প নেই।’

চিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ও কৌশল কেন্দ্রের পরিচালক দা ওয়েই সতর্ক করে বলেন, ‘যদি এমন উত্তেজনা বারবার বাড়তে থাকে, তবে দুই নেতার ব্যক্তিগত ধৈর্য ও আস্থাও ফুরিয়ে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ধৈর্যচ্যুতি ঘটলে আমরা এক অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হব।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ