ওপেনএআইয়ের ভিডিও তৈরির অ্যাপ সোরাতে কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য নতুন সুযোগ
Published: 17th, October 2025 GMT
নিজেদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর ভিডিও তৈরির অ্যাপ ‘সোরা টু’তে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে চ্যাটজিপিটির নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান ওপেনএআই। নতুন এ সুবিধা কাজে লাগিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির মাধ্যমে আগের তুলনায় আকারে বড় ও উন্নতমানের ভিডিও তৈরি করা যাবে। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, এসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাস্তব ও কৃত্রিম ভিডিওর পার্থক্য আরও কঠিন হয়ে তুলবে।
ওপেনএআইয়ের তথ্যমতে, সোরা টু অ্যাপে দুটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। ফলে ব্যবহারকারীরা আগের তুলনায় আরও উন্নত ও বাস্তবসম্মত ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। সবচেয়ে আলোচিত পরিবর্তনটি হলো, এখন থেকে সব ব্যবহারকারী বিনা মূল্যে সর্বোচ্চ ১৫ সেকেন্ডের এআই ভিডিও তৈরি করতে পারবেন, যা আগে ছিল ১০ সেকেন্ড।
ওপেনএআই জানিয়েছে, বিনা মূল্যে সর্বোচ্চ ১৫ সেকেন্ডের ভিডিও তৈরি করা গেলেও অর্থের বিনিময়ে সোরা অ্যাপ ব্যবহারকারীরা সর্বোচ্চ ২৫ সেকেন্ডের ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। এ ছাড়া তারা ‘স্টোরিবোর্ড’ টুল কাজে লাগিয়ে একাধিক দৃশ্য বা ক্লিপ যুক্ত করে ধারাবাহিকভাবে গল্পভিত্তিক ভিডিও তৈরির সুযোগ পাবেন। ফলে পেশাদার মানের ভিডিও তৈরি আরও সহজ ও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় বসবাসকারীরা এ সুবিধা ব্যবহার করতে পারবেন।
সম্প্রতি সোরা অ্যাপে আধেয় বা কনটেন্টমালিকদের নিয়ন্ত্রণ আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে ওপেনএআই। এ উদ্যোগের আওতায় কপিরাইটধারী কনটেন্ট নির্মাতারা নির্ধারণ করতে পারবেন, তাঁদের তৈরি বিভিন্ন চরিত্র বা সৃজনশীল উপাদান কীভাবে ব্যবহার করা যাবে। একই সঙ্গে যাঁরা নিজেদের কনটেন্ট ব্যবহারের অনুমতি দেবেন, তাঁদের সঙ্গে আয় ভাগাভাগির ব্যবস্থাও চালু করার পরিকল্পনা করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
সূত্র: টেকরাডার
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কনট ন ট প রব ন
এছাড়াও পড়ুন:
দুনিয়া কাঁপানো চ্যাটজিপিটির জন্মদিন আজ
প্রযুক্তি–দুনিয়াকে পুরোপুরি বদলে দেওয়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত (এআই) চ্যাটবট ‘চ্যাটজিপিটি’-এর জন্মদিন আজ। ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর যাত্রা শুরু করা চ্যাটজিপিটি চালুর মাত্র দুই মাসের মধ্যে ১০ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। বর্তমানে বয়স-পেশানির্বিশেষে অনেকেই চ্যাটজিপিটি নিয়মিত ব্যবহার করেন, ফলে মাত্র তিন বছরের মধ্যে ৮০ কোটির বেশি সক্রিয় সাপ্তাহিক ব্যবহারকারীর মাইলফলক অর্জন করেছে চ্যাটজিপিটি।
ওপেনএআইয়ের তৈরি চ্যাটজিপিটি বাজারে আসার পর থেকে প্রযুক্তি, সমাজ ও অর্থনীতিতে এক অভূতপূর্ব পরিবর্তন হয়েছে। এটি কেবল একটি চ্যাটবট নয়; বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে এখন সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে এনে দেওয়া এক যুগান্তকারী হাতিয়ার। তাই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিজেদের তৈরি এআই চ্যাটবট বাজারে আনলেও চ্যাটজিপিটি নিজের জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে।
চ্যাটজিপিটির মূল ভিত্তি হলো বিশাল তথ্যভান্ডারযুক্ত জিপিটি কাঠামো, যা লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলের (এলএলএম) মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। তাই চ্যাটজিপিটি মানুষের মতো স্বাভাবিক ভাষায় কথোপকথনের পাশাপাশি কোড লেখা, জটিল প্রশ্নের উত্তর দেওয়া এবং সৃজনশীল লেখা তৈরি করতে পারে। দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজে ব্যবহারের কারণে বর্তমানে চ্যাটজিপিটি বিশ্বের সবচেয়ে বেশিবার ভিজিট করা ওয়েবসাইটের তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে চ্যাটজিপিটি।
চ্যাটজিপিটি যেকোনো বার্তার উত্তর দ্রুত ও নির্ভুলভাবে দিতে পারে। নিজ থেকে বার্তা, নিবন্ধ বা কবিতাও লিখে থাকে। নির্ভুল শব্দচয়ন ও ভাষা ব্যবহার করায় চ্যাটজিপিটির লেখা মানুষের মতোই হয়ে থাকে। শিক্ষার্থীদের জন্য ভার্চ্যুয়াল শিক্ষক হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি সৃজনশীল বিষয়বস্তু তৈরিসহ দ্রুত তথ্য বিশ্লেষণেও ভূমিকা রাখছে।
মানবজাতির কল্যাণে কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহারের লক্ষ্য নিয়ে ২০১৫ সালের ৮ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করে চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘ওপেনএআই’। সংস্থাটির উদ্যোক্তা সংখ্যা মোট ১১ জন, যাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন গ্রেগ ব্রকম্যান (বর্তমান প্রেসিডেন্ট), স্যাম অল্টম্যান (বর্তমান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা) ও ইলন মাস্ক (পেপাল, টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা) অন্যতম। পরে কোম্পানি থেকে সরে দাঁড়ান ইলন মাস্ক, কিন্তু অল্টম্যান থেকে যান। তাঁর হাত ধরেই আসে চ্যাটজিপিটি।
সান ফ্রান্সসিসকোতে অবস্থিত ওপেনএআই শুরু থেকে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করলেও গত অক্টোবর মাসে প্রতিষ্ঠানটির বাজারমূল্য ৫০০ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। ওপেনএআইয়ের ২৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে মাইক্রোসফটের দখলে, যার বাজারমূল্য প্রায় ১৩৫ বিলিয়ন ডলার।