নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী মাওলানা আবদুল জব্বার  বলেন, মানুষের সৃষ্টিকর্তা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আল কুরআন নাযিল করেছেন,আল কুর আনের বিধান দিয়ে দেশ পরিচালিত হলেই কেবল মানুষ আইনের শাসন পেতে পারে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশের মানুষের আইনের শাসন উপহার দেওয়ার জন্যই কাজ করে যাচ্ছে। ইনশাআল্লাহ জামায়াত বিজয়ী হলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জ আদালত পাড়ায় গণসংযোগকালে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি আরও বলেন, অতীতের অনেক শাসক দেখেছি যারা ক্ষমতায় যাওয়ার আগে মিস্টি মিস্টি কথা বলেছে তারপর ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি আর দু:শাসন জাতিকে উপহার দিয়েছে।

দুর্নীতি আর দু:শাসন দূর করতে হলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়ি পাল্লার বিজয় নিশ্চিত করতে হবে।  ইনশাআল্লাহ আমরা কথা দিচ্ছি আমাদের কথা এবং কাজে মিল থাকবে।

উক্ত গণসংযোগে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ লইয়ার্স কাউন্সিল নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট মাঈন উদ্দিন মিয়া, আইনজীবী থানা সভাপতি এডভোকেট জাহাঙ্গীর দেওয়ান সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট নিজামউদ্দিন, অ্যাডভোকেট আবু তাহের, অ্যাডভোকেট গোলাম সারোয়ার, অ্যাডভোকেট গোলাম মর্তুজা, অ্যাডভোকেট আক্তার হোসেন, এডভোকেট সাইফুর রহমান, অ্যাডভোকেট ওয়ালিউল্যা  রাসেল, এডভোকেট ওমর ফারুক  প্রিন্স, অ্যাডভোকেট শেখ ফয়সাল লাভলু, এডভোকেট কাওসার মিয়া, অ্যাডভোকেট নূরে আলম, অ্যাডভোকেট তাওফিকুল ইসলাম সহ জামায়াতের আইনজীবী নেতৃবৃন্দ।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ব ল দ শ জ ম য ত ইসল ম ন র য়ণগঞ জ এডভ ক ট

এছাড়াও পড়ুন:

বিচারের দীর্ঘসূত্রতা দূর করবে ই-পারিবারিক আদালত

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে বিচার বিভাগের নানান সংস্কার হয়েছে। আইনের পাশাপাশি পদ্ধতিগত সংস্কারের বিষয়টিও আশাজাগানিয়া। এর মধ্যে কোর্ট অটোমেশন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নারায়ণগঞ্জ জেলায় ই-বেইলবন্ড কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে এ অটোমেশন প্রক্রিয়ার যাত্রা শুরু হয় নভেম্বরের ১৮ তারিখে। যাত্রা শুরুর পর থেকে এই প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও গতির কারণে এ উদ্যোগ প্রশংসিত হচ্ছে। আইনজীবীরাও একে স্বাগত জানিয়েছেন। সরকারের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বিচারপ্রার্থী জনগণ।

আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে আটটি বিভাগীয় শহরে ই-বেল বন্ডের কার্যক্রম বিস্তৃত হতে যাচ্ছে। আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার নির্দেশে বিচার বিভাগ অটোমেশনের পরবর্তী সংযোজন ছিল ই-পারিবারিক আদালতব্যবস্থা। এখানে মামলা দায়ের থেকে শুরু করে আইনজীবী নির্বাচন, অনলাইনে কোর্ট ফি দেওয়া, হাজিরা দেওয়া, বিভিন্ন দরখাস্ত দাখিল, সাক্ষ্য গ্রহণ, মামলা ব্যবস্থাপনা, নথি ব্যবস্থাপনাসহ একটি মামলার সার্বিক কার্যক্রম এখন অনলাইনে হবে।

এখন আর কোর্ট–কাছারিতে শুধু হাজিরা দেওয়ার জন্য যাওয়ার প্রয়োজন নেই। অনলাইনেই হাজিরা দেওয়া যাবে। মামলার প্রতি তারিখ খুদে বার্তা ও ই–মেইলের মাধ্যমে জানতে পারবেন মামলার সংশ্লিষ্ট সবাই। আদালতের কর্মচারীদেরও এখন থেকে আর একই কাজ বারবার করতে হবে না। কোর্টের রেজিস্ট্রারসহ নথি বিভাজন সবই হবে কম্পিউটারে ক্লিকের মাধ্যমে।

ছয় মাসের প্রচেষ্টা

আইন উপদেষ্টা এই কাজের জন্য সময় বেঁধে দেন ছয় মাস। আইন ও বিচার বিভাগের একটি ছোট দল ছয় মাস ধরে নিরলসভাবে এই সফটওয়্যার উন্নয়ন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজে যুক্ত হন। সময়ের সীমাবদ্ধতার কারণে কাজটি ছিল ‘প্রায় অসম্ভব’। কারও খাওয়া–ঘুম নেই তো, কেউ শারীরিক অসুস্থতাকে উপেক্ষা করেছেন, কেউবা সারা দিন আদালতে থেকে রাত ১২টা ১টা পর্যন্ত বসে কম্পিউটারে সফটওয়্যার পরীক্ষা করেছেন। এই অসম্ভবকে সম্ভব করতে আমাদের দলের প্রত্যেককেই প্রায় সব সাপ্তাহিক ছুটির দিন কাজ করতে হয়েছে। বারবার ডিজাইন পরিবর্তন, ফ্লো চার্ট তৈরি, সিস্টেম টেস্টিং, সব মিলিয়ে এটি ছিল এক বিশাল ‘ডিজিটাল যজ্ঞ’।

ই-পারিবারিক আদালত ব্যবস্থার কার্যকর বাস্তবায়ন শুধু আদালতকে আধুনিকায়ন নয়; এটি বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আরও বেশি গ্রহণযোগ্য করে তোলা।

এই ‘ডিজিটাল যজ্ঞে’ অন্যতম প্রধান ভূমিকা রেখেছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগ। তারা সম্পূর্ণ বিনা পয়সায় সফটওয়্যার উন্নয়নে সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে। রাত নেই, দিন নেই, যখন যেভাবে তাদের সহযোগিতা চেয়েছি, তারা নিরলস পরিশ্রম করে গেছে।

এই বিশাল যজ্ঞে যারা সব সময় পাশে ছিল, তাদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতির ঘোষিত রোডম্যাপে বিচার বিভাগকে ডিজিটাল করার বিষয়টি ছিল অন্যতম। সুপ্রিম কোর্ট দিকনির্দেশনার পাশাপাশি কম্পিউটার ও কম্পিউটার সামগ্রী দিয়ে এই যাত্রাপথকে সহজ করেছে।

উপদেষ্টার বেঁধে দেওয়া সময় ছিল খুবই অপ্রতুল। তবু আমরা ডেডলাইনের মধ্যে কাজটির প্রথম ধাপ সম্পন্ন করেছি। ২৪ নভেম্বর থেকে ঢাকার একটি পারিবারিক আদালত ও ৩০ নভেম্বর থেকে চট্টগ্রামের একটি ই-পারিবারিক আদালত যাত্রা শুরু করবে।

ই-কোর্টে যা বদলাবে

ই-পারিবারিক আদালত শুধু একটি প্রযুক্তিগত প্রকল্প নয়, বিভিন্ন অংশীজনও নানাভাবে এর সুফল পাবে। যেমন বিচারপ্রার্থীরা যেকোনো স্থান থেকে মামলা দাখিলের সুযোগ পাবেন। ই-কোর্টে থাকছে ওটিপি ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করার ব্যবস্থা। ই-কোর্টে মামলার অগ্রগতি, তারিখ, ফলাফল পাওয়া যাবে একটি ড্যাশবোর্ডেই। এদিকে ডিজিটাল নথির কারণে নথি হারানো বা তথ্যবিভ্রান্তিরও আর সুযোগ থাকবে না।

ই-কোর্টের ফলে আইনজীবীদেরও প্রতিদিন কোর্টে হাজিরা দেওয়ার ঝামেলা কমবে। যেকোনো স্থান থেকেই তাঁরা অনলাইন হাজিরা দিতে পারবেন। এ ছাড়া অনলাইন ও অফলাইনে শুনানির বিষয়টি বিবেচনায় আছে। নিজস্ব পোর্টালে আইনজীবীর পরিচালিত সব নথি থাকবে একসঙ্গে। ফলে ব্যবস্থাপনা হবে সহজ। এদিকে যেকোনো জায়গা থেকে লগইন করে নথির কাজ যেকোনো সময়ে খসড়া করে রাখতে পারবেন আইনজীবীরা।

আদালত সহায়ক কর্মচারীদের কাজও সহজ করবে ই-কোর্ট ব্যবস্থা। ই-কোর্টের ফলে নথি জমা দেওয়া, কপি তোলা ও বারবার একই তথ্য প্রস্তুতের কাজ কমবে। কোর্টের তারিখ ও নথি যাচাই, সবই হবে সিস্টেম-জেনারেটেড। ফলে প্রশাসনিক অদক্ষতা কমে আসবে; সময় বাঁচবে এবং কাজ হবে দ্রুত।

আরও পড়ুনপারিবারিক নির্যাতনকে অপরাধ গণ্য করা হয় না১৯ জানুয়ারি ২০২২

বিচারকেরাও পাবেন ই-কোর্টের সুফল। ই-কোর্টের ফলে কেস ম্যানেজমেন্ট সহজ হবে। আসন্ন কাজগুলো দেখা যাবে এক ক্লিকেই। ই-কোর্টের ফলে আদালত সহায়ক কর্মচারীদের তদারকি, কার্যক্রমের অগ্রগতি এবং কর্মীদের কাজের মান মূল্যায়ন হবে আরও স্বচ্ছ ও বাস্তবসম্মত। এ ছাড়া অনলাইনে শুনানির সুযোগের ফলে সংশ্লিষ্ট পক্ষদের অনুপস্থিতির কারণে দিনের পর দিন আর মামলা মুলতবি রাখতে হবে না। জাল বা ভুয়া কোর্ট ফিও প্রতিরোধ হবে। এর ফলে নিশ্চিত হবে সরকারের রাজস্ব আদায়।

ই-পারিবারিক আদালত ব্যবস্থার কার্যকর বাস্তবায়ন শুধু আদালতকে আধুনিকায়ন নয়; এটি বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আরও বেশি গ্রহণযোগ্য করে তোলা। এই উদ্যোগ সফল হলে দেশের অন্যান্য আদালতেও একই ব্যবস্থা চালু হওয়ার পথ প্রশস্ত হবে। যার ফলে কমে আসবে বিচারব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতা।

ড. উম্মে সরাবন তহুরা উপসচিব, আইন ও বিচার বিভাগ

মতামত লেখকের নিজস্ব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এক ব্যক্তি যদি বেশি দিন ক্ষমতায় থাকেন, তাহলে তিনি কর্তৃত্ববাদী হয়ে যান: ফখরুল
  • নিউমুরিং টার্মিনালে বিদেশি অপারেটর: হাইকোর্টের রায় ৪ ডিসেম্বর
  • প্লট বরাদ্দে দুর্নীতি: হাসিনা, রেহানার ও টিউলিপের মামলায় রায় ১ ডিসেম্বর
  • সাবেক আইজিপি শহীদুলের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ
  • নূরাল পাগলার দরবারে হামলার ঘটনায় করা মামলা প্রত্যাহারে পরিবারের আবেদন
  • সারা হোসেনের প্রশ্ন, ‘পুলিশ কি পুরোনো নিপীড়ন বন্ধ করবে’
  • দুই সেনা কর্মকর্তাসহ চার আসামির মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি ৪ ডিসেম্বর
  • ‘ই-পারিবারিক আদালত বিচার ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে’
  • বিচারের দীর্ঘসূত্রতা দূর করবে ই-পারিবারিক আদালত