বাদ পড়ার রাগ থেকেই কি লিটন এমন বিধ্বংসী
Published: 12th, January 2025 GMT
রান পাচ্ছেন না, রান পাচ্ছেন না। সর্বশেষ সাত ওয়ানডেতে এক অঙ্কের রান। চলমান বিপিএলেও প্রথম চার ম্যাচে রান না পাওয়ার পর বাদ পড়েছিলেন পরের ম্যাচ থেকে। ব্যাটে এই রানখরার কারণে তামিম ইকবাল অবসর ঘোষণা করার পরও তাই চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দরজা খোলেনি লিটন দাসের জন্য। আলোচনায় থেকেও শেষ মুহূর্তে কাটা পড়েছে তাঁর নাম।
মিরপুরে আজ দুপুরে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন জানালেন, তাঁদের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে লিটন নেই এবং ঠিক আজ সন্ধ্যায়ই সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে লিটন যেন আফসোসের সমুদ্রে ছুঁড়ে ফেললেন পুরো নির্বাচক কমিটিকেই। এই লিটন দলে নেই!
৪৩ বলে ৭৩ রান করে সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে আগের ম্যাচেই রানে ফেরার বার্তা দিয়েছিলেন। আজ তো দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে ৪৪ বলেই করে ফেললেন টি–টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি। রাজশাহীর পেসার শফিউল ইসলামের বলে স্ট্রেট ড্রাইভে আসা সেই নিখুঁত বাউন্ডারির পরও লিটনের শরীরী ভঙিতে উদযাপনের কোনো লক্ষণ নেই। শুধু ব্যাটটা একটু তুললেন কি তুললেন না!
রেগে–মেগে সেঞ্চুরি করলে এরকমই হয় কি না, কে জানে! এরকম সময়ে তেড়েফুড়ে উদযাপনের নজিরও আছে অবশ্য। কিন্তু লিটনের চরিত্রটাই বোধহয় এমন যে, প্রতিবাদও জানাবেন ভাষাহীন ভাষায়। তাঁর হয়ে যা বলার ব্যাটই বলবে।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে জায়গা না হওয়ার খবর পাওয়ার দিনেই স্বীকৃত টি–টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি পেয়ে গেছেন লিটন দাস.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।