ইউপি চেয়ারম্যানকে বের করে দিয়ে কার্যালয়ে তালা দিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা
Published: 13th, January 2025 GMT
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতার নেতৃত্বে ৮-১০ জন ইউপি চেয়ারম্যানকে বের করে দিয়ে কার্যালয়ে তালা দিয়েছেন। আজ সোমবার বেলা একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুপুরে কার্যালয়ে যান চন্দ্রগঞ্জ ইউপির চেয়ারম্যান নুরুল আমিন। কিছুক্ষণ পর চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব জাবেদ হোসেনের নেতৃত্ব ৮-১০ জনের একটি দল ইউপি কার্যালয়ে আসে। এরপর চেয়ারম্যানকে গালমন্দ করে কার্যালয় থেকে বের করে দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। এ সময় ইউপি কার্যালয়ে আসা ব্যক্তিরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, এক সপ্তাহ আগে তাঁকে স্বেচ্ছাসেবক দলের কয়েকজন নেতা কার্যালয়ে আসতে নিষেধ করেছিলেন। গত মঙ্গলবারও তাঁর কার্যালয়ে এসে বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলা হয়। আজ স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা জাবেদ হোসেন তাঁকে কার্যালয় থেকে বের করে দিয়ে আর কখনো না আসতে বলেছেন। বের হতে অপারগতা প্রকাশ করায় তাঁর দিকে তেড়ে আসেন জাবেদ ও তাঁর সঙ্গে থাকা ব্যক্তিরা।
নুরুল আমিন আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে স্বতন্ত্রভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। এ কারণে আওয়ামী লীগ আমাকে দল থেকে বহিষ্কারও করেছিল।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জাবেদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি ইউপি কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলাম না। সাধারণ মানুষ চেয়ারম্যানকে বের করে কার্যালয়ে তালা দিয়েছেন। তিনি অবৈধভাবে নির্বাচিত হয়েছেন, তাই সাধারণ মানুষের তাঁর প্রতি ক্ষোভ রয়েছে।’
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কায়সার হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাটি ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন আমাকে জানিয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে খোঁজখবর নিয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁওয়ে শহিদুল ইসলাম শহিদকে হত্যার মামলায় অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ। এ মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ২৩১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল হক গত বুধবার (৩০ জুলাই) আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন।
শনিবার (২ আগস্ট) চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব আহমেদ অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন
চবি ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলার সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা কোনো মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল করা হলো।
২০২৪ সালের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগরীর বহদ্দারহাটে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় একাধিক পিস্তল, শটগানসহ ভারী অস্ত্র দিয়ে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিলেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা।
এর আগে নিউ মার্কেট মোড়ে সমাবেশ করে ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে ষোলশহর মেয়র গলিতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাসভবনে হামলা চালায়। এর পর বহদ্দারহাট মোড়-সংলগ্ন সাবেক সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে হামলা হয়। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হন অটোরিকশাচালক শহিদ। তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শহিদের ভাই শফিকুল ইসলাম চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন— চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, এম এ লতিফ, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, আবদুচ ছালাম, দিদারুল আলম দিদার, এস এম আল মামুন ও নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চসিকের সাবেক কাউন্সিলর এসরারুল হক, নুর মোস্তফা টিনু, সলিমুল্লাহ বাচ্চু, জিয়াউল হক সুমন ও নুরুল আজিম রনিসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আগামী ২৫ আগস্ট বাদীর উপস্থিতিতে অভিযোগপত্রের ওপর শুনানি হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। অভিযোগপত্রে ১২৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৮ জন সাধারণ মানুষ, ৯৯ জন পুলিশ ও ১ জন চিকিৎসক।
ঢাকা/রেজাউল/রফিক