লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতার নেতৃত্বে ৮-১০ জন ইউপি চেয়ারম্যানকে বের করে দিয়ে কার্যালয়ে তালা দিয়েছেন। আজ সোমবার বেলা একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুপুরে কার্যালয়ে যান চন্দ্রগঞ্জ ইউপির চেয়ারম্যান নুরুল আমিন। কিছুক্ষণ পর চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব জাবেদ হোসেনের নেতৃত্ব ৮-১০ জনের একটি দল ইউপি কার্যালয়ে আসে। এরপর চেয়ারম্যানকে গালমন্দ করে কার্যালয় থেকে বের করে দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। এ সময় ইউপি কার্যালয়ে আসা ব্যক্তিরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, এক সপ্তাহ আগে তাঁকে স্বেচ্ছাসেবক দলের কয়েকজন নেতা কার্যালয়ে আসতে নিষেধ করেছিলেন। গত মঙ্গলবারও তাঁর কার্যালয়ে এসে বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলা হয়। আজ স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা জাবেদ হোসেন তাঁকে কার্যালয় থেকে বের করে দিয়ে আর কখনো না আসতে বলেছেন। বের হতে অপারগতা প্রকাশ করায় তাঁর দিকে তেড়ে আসেন জাবেদ ও তাঁর সঙ্গে থাকা ব্যক্তিরা।

নুরুল আমিন আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে স্বতন্ত্রভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। এ কারণে আওয়ামী লীগ আমাকে দল থেকে বহিষ্কারও করেছিল।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জাবেদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি ইউপি কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলাম না। সাধারণ মানুষ চেয়ারম্যানকে বের করে কার্যালয়ে তালা দিয়েছেন। তিনি অবৈধভাবে নির্বাচিত হয়েছেন, তাই সাধারণ মানুষের তাঁর প্রতি ক্ষোভ রয়েছে।’

চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কায়সার হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাটি ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন আমাকে জানিয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে খোঁজখবর নিয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিতর্কিত তিন নির্বাচনে জড়িতদের ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ

বিতর্কিত তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনারগণ ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে একটি কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

সোমবার (১৬ জুন) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে আলোচনা শেষে এ নির্দেশ দেন তিনি। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

আরো পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টা অনেক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন: ফখরুল

ইউনূস-তারেক বৈঠক
রমজান শুরুর আগের সপ্তাহেও নির্বাচন হতে পারে: যৌথ বিবৃতি

বৈঠকে কমিশন সদস্যগণ জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। 

কমিশনের সহ-সভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেন, ‍“বেশকিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। খুব শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করে ফেলা সম্ভব হবে।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আমি আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।”

বৈঠকে লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, “লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তারা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তারা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করেছে, মতামত দিয়েছে। যেখানেই গেছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, ‘আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?’ আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।”

বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “সব রাজনৈতিক একমত হয়েছে যে, অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত ও জবাবদিহিতার আওতায় আনা প্রয়োজন।”

ঢাকা/হাসান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ