এবার শেখ রেহানা ও তাঁর তিন সন্তানের বিরুদ্ধে মামলা দুদকের
Published: 13th, January 2025 GMT
তথ্য গোপন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ঢাকার পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে শেখ রেহানা ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক (রূপন্তী) এবং ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের (ববি) বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলাগুলোতে রেহানার আরেক মেয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক এবং রেহানার বোন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আখতার হোসেন আজ সোমবার প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
দুদক জানায়, ঢাকা শহরে রাজউকের আওতাধীন এলাকায় নিজ পরিবারের অন্য সদস্যদের মালিকানায় বাড়ি বা ফ্ল্যাট বা আবাসন সুবিধা থাকলে পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দ পাওয়ার সুযোগ নেই। শেখ রেহানা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা এসব তথ্য গোপন করে পূর্বাচলে তিনটি প্লট বরাদ্দ নেন।
আজকের ব্রিফিংয়ে বলা হয়, ঢাকা শহরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) আওতাধীন এলাকায় বাড়ি, ফ্ল্যাট বা আবাসন সুবিধা থাকার পরও হলফনামায় তা গোপন করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের কূটনৈতিক এলাকায় একটি ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেন শেখ রেহানা। প্লট বরাদ্দ নিতে তাঁর মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য হিসেবে বিশেষ ক্ষমতাবলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রভাবিত করেন। আর শেখ হাসিনা তৎকালীন সরকারের সর্বোচ্চ পদাধিকারী ও সরকারি কর্মচারী হওয়ায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রকল্পের বরাদ্দ–বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে প্লট বরাদ্দ দেন।
ব্রিফিংয়ে আরও বলা হয়, শেখ রেহানার বিরুদ্ধে করা মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। আর রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের বিরুদ্ধে করা মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা ও শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজমিনা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে করা মামলায় টিউলিপ ও শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুনপূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ: শেখ হাসিনা ও সায়মা ওয়াজেদের নামে মামলা১২ জানুয়ারি ২০২৫এর আগে গতকাল রোববার শেখ হাসিনা ও তাঁর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদসহ (পুতুল) ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মধ্য দিয়ে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা করে ৬০ কাঠার ছয়টি প্লট নিজেদের নামে করিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এ মামলা হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি