বিশ্বজুড়ে বালুকাময় সমুদ্রতট হারিয়ে যাচ্ছে, ক্ষতির মুখে বঙ্গোপসাগরও
Published: 13th, January 2025 GMT
সমুদ্রসৈকতে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত বা সূর্যোদয় দেখতে ভালোবাসেন অনেকেই। কারও আবার পছন্দ সমুদ্রসৈকতে পা ডুবিয়ে হেঁটে বেড়ানো। আর তাই তো বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সমুদ্র কবিতায় লিখেছেন, ‘হে সমুদ্র, স্তব্ধচিত্তে শুনেছিনু গর্জন তোমার রাত্রিবেলা; মনে হল গাঢ় নীল নিঃসীম নিদ্রার স্বপ্ন ওঠে কেঁদে কেঁদে।’ কবিতার মতো সমুদ্রের গর্জন শোনার জন্য বালুকাময় সমুদ্রতটে দাঁড়াতে হবে আগে। কিন্তু সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সমুদ্রের বালুকাময় সমুদ্রতট আগের মতো ভালো নেই আর। নতুন গবেষণা বলছে, বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ বালুকাময় উপকূলরেখা মানুষের তৈরি কাঠামোর কারণে বদলে গেছে। এতে উপকূলীয় অঞ্চলের প্রাণের বাস ও বাস্তুতন্ত্রের ওপরে প্রভাব পড়ছে।
উপকূল রেখা কঠিন বা পরিবর্তিত হওয়ার কারণে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি হচ্ছে। মানুষ নানা কারণে উপকূলরেখা বদলে ফেলছে। ক্ষয় ও বন্যা থেকে উপকূলরেখা রক্ষা করার জন্য বাঁধ, পোতাশ্রয় নির্মাণ বা রাস্তার মতো কঠিন অবকাঠামো তৈরি করা হয়। এতে সমুদ্রতট প্রায়ই দুর্ভেদ্য কাঠামোয় পরিবর্তিত হচ্ছে।
যদিও এমন কাঠামো সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি ও ঝড়ের বিরুদ্ধে একটি ভালো প্রতিরক্ষা হিসেবে কাজ করে বলে মনে করেন অনেকেই। কিন্তু এসব কঠিন অবকাঠামো সৈকতের প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করছে। ১৯৫০ দশক থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে সমুদ্রতটে কঠিন অবকাঠামো তৈরির পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বের যত সমুদ্রতট আছে, তার মধ্যে বঙ্গোপসাগর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কঠিন অবকাঠামো তৈরির জন্য। বঙ্গোপসাগরের ৮৪ ভাগ উপকূল এখন কঠিন কাঠামো দ্বারা অবরুদ্ধ। এ ছাড়াও পশ্চিম ইউরোপ, ভূমধ্যসাগর, উত্তর আমেরিকা ও পূর্ব এশিয়ার মতো বিভিন্ন অঞ্চলের সমুদ্রতটে এমন পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে। অনেক এলাকায় উপকূলে ৬০ ভাগের বেশি এলাকায় কঠিন অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে।
জলবায়ু বিজ্ঞানী রক্সি কোল বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলে কঠিন কাঠামোর জন্য উপকূলীয় ক্ষয় ও সমুদ্রের দখলের মাত্রা আরও বাড়তে পারে। এ ঘটনা বিশেষত উদ্বেগজনক। উপকূল এলাকা শক্ত হয়ে যাওয়ার কারণে বিভিন্ন সৈকত তীব্র ক্ষয়ের জন্য আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সান্তা ক্রুজ থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূল ও হাওয়াইয়ের সৈকতে এমন ক্ষতি দেখা যায়।
গবেষণার তথ্যমতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের ঝড়ের তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদি কার্বন দূষণ বর্তমান হারে চলতে থাকে, তাহলে এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ ২৬ শতাংশ বালুকাময় সৈকত হারিয়ে যেতে পারে। এই সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।
সূত্র: দ্য কুল ডাউন ও নেচার
https://www.
https://www.nature.com/articles/s41467-024-54952-1
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
লন্ডন বৈঠক পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে বৃটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে: মঈন খান
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে বৃটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এরআগে সকালে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকায় নিযুক্ত বৃটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক। বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকে আবদুল মঈন খান, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে মঈন খান বলেন, আজকের বাংলাদেশের যে সার্বিক পরিস্থিতি; বিশেষ করে লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বৈঠকে যে আলোচনা হয়েছে- তার প্রতিক্রিয়া ও পরবর্তী পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশের জিওপলিটিক্যাল অবস্থান ও পার্শ্ববর্তী দেশসমূহের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক- এসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বৃটিশ হচ্ছে গণতন্ত্রের সূতিকাগার। ওরা সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চাইবে না তো, কে চাইবে? এখানে কোনো দ্বিমত থাকতে পারে না।
নির্বাচন নিয়ে কী আলোচনা হয়েছে- জানতে চাইলে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, আপনারা তো জানেন, আমাদের কথা এখন একটাই। বাংলাদেশের মানুষের যে ইচ্ছার প্রতিফলন, দেশের নতুন প্রজন্ম, যারা দীর্ঘ ১৭ বছর তাদের ভোট দিতে পারেনি। দেশের কোটি কোটি মানুষ, ১২ কোটি ভোটার বলা হচ্ছে- তারা ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ। ভোটের ব্যাপারে যখন নিশ্চিত ইঙ্গিত সরকারের পক্ষ থেকে আসে, বলা হয় যে- নির্বাচন কমিশন দেশবাসীকে জানাবে ভোটের তারিখ। তখন তো দেশের মানুষ উচ্ছ্বাস হয়ে যায়।