পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় রেললাইন থেকে ২৪ বছর বয়সী এক নারীর ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের কিসমত স্টেশনের রেলঘুন্টি এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার হয়।

পঞ্চগড়ের সহকারী পুলিশ সুপার মোছা. রুনা লায়লা বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৫০ গজ দূরে জমিতে রক্ত ও পায়জামা পাওয়া যায়। একটি ধারালো ছুরিও পাওয়া গেছে। আমরা ধারণা করছি, ওই নারীকে ধর্ষণ বা গণধর্ষণের পর হত্যা করে রেললাইনের ওপর ফেলে নাটক সাজানো হয়েছে। আমরা নিহতের নাম ঠিকানা পাইনি। মরদেহের পরিচয় শনাক্তকরণসহ ঘটনার কারণ বের করতে কাজ করছি।”

এলাকাবাসী জানান, আজ সকালে রেললাইনের পাশে মরদেহটি দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন তারা। পুলিশ, পিবিআই ও সিআইডির ক্রাইম সিনের সদস্যরা মরদেহ উদ্ধারসহ আলামত সংগ্রহ করেন। পরে পুলিশ রেললাইনের পাশে মাটিতে রক্ত ও নারীর পড়নের পোশাকসহ ধারালো ছোরা উদ্ধার করে। পুলিশের ধারণা, এই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রেললাইনে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন:

আলু ক্ষেতে পুঁতে রাখা গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার

ঢাকা মেডিকেল মর্গে জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত ৬ বেওয়ারিশ লাশের সন্ধান

আমিনুল ইসলাম নামে স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “ঘটনা শুনে আমরা আসি। দেখতে পাই, রেললাইন থেকে দূরে জমিতে রক্ত এবং কাপড় পড়ে আছে। পাশে একটি ধারালো ছোরাও ছিল। পুলিশ এসে তদন্ত শুরু করে। মেয়েটির বয়স ২৪-২৫ বছরের মধ্যে হবে।”

আটোয়ারী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, “রেললাইনের মাঝখানে মরদেহটি পাওয়া যায়। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে মরদেহটি লাইন থেকে পাশে নেওয়া হয়। নারীর শরীরের বিভিন্ন অংশ আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ছিল। তার পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।”

ঢাকা/নাঈম/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ