সোনারগাঁয়ে যুবদল নেতার বিরুদ্ধে কোটি টাকার মালামাল লুটের অভিযোগ
Published: 16th, January 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের যুবদল নেতার বিরুদ্ধে ১ কোটি টাকার মালামাল লুটের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গত ১৫ জানুয়ারি সোনারগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
গত বুধবার সকালে উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের জামপুর গ্রামে এ. এন.জেড টেক্সটাইল মিলসের নির্মাণ কাজের সময় এ ঘটনা ঘটে। পরে রাতে সোনারগাঁ থানায় প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী আনোয়ার হোসেন ১ কোটি টাকার মালামাল লুটের অভিযোগ দায়ের করেন উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আশরাফ ভূইয়া, মোতালেব মেম্বার, মুসা মিয়া,দিপু মিয়া, নাঈম,আরিফ, মোক্তারসহ এক থেকে দেড়'শ জনের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত বিএনপি নেতা আশরাফ ভূইয়ার নেতৃত্বে উপরোক্ত আসামীরা এ.
এ. এন. জেড টেক্সটাইল মিলসের স্বত্বাধিকারী আনোয়ার হোসেন বলেন, ৫ ই আগষ্টের পর এক দল বিএনপি নেতা আমাদের কাজের জায়গায় ২৫ লক্ষ চাঁদা না দিলে কাজ করতে দিবেনা বলে হুমকি প্রদান করে আসছিলো।
এরই ধারাবাহিকতায় আজ আমাদের নির্মাণাধীন কাজে উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আশরাফ ভূইয়ার নেতৃত্বে একদল চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদরা দেশিয় অস্ত্র নিয়ে বাঁধা দিয়ে শ্রমিকদের মেরে ১ কোটি টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। একই সাথে তাদের জমি দাবী করে ব্যানার লাগিয়ে যায়। এ বিষয়ে আমি ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।
কোম্পানির নিরাপত্তা কর্মী বাবুল মিয়া জানান, কয়েক মাস ধরেই যুবদল নেতা আশরাফ ভূইয়া চাঁদা দাবী করে আসছিল। গতকাল সকালে তারা আমাদের কাজে বাঁধা ও ককটেল ফুটিয়ে আমার থাকার ঘরটিসহ কোটি টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায় এবং প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করে।
জমি বিক্রেতা শহিদুল্লাহ ভূইয়া বলেন, আমি গত বছর আনোয়ার হোসেনের কাছে জমিটি বিক্রয় করেছি। স্থানীয় বিএনপি নেতাদের দাবীকৃত চাঁদা না দিতে চাইলে তারা তাদের জমি দাবী করে সন্ত্রাসী বাহিনী মাধ্যমে নির্মাধীণ কাজের সব মালামাল লুটে নিয়ে যায়।
স্থানীয় প্রতিবেশী আব্দুল আউয়াল সহ একাধিক ব্যক্তি জানান, সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব শুরু করেছে একদল প্রভাবশালী। দীর্ঘ দিন ধরেই তারা এলাকায় বিভিন্ন কোম্পানিসহ নানা জায়গায় চাঁদাবাজি করছে। বহু বছর ধরেই আমরা দেখেছি শহিদুল্লাহ ভোগ দখল করে আসছে।
পরে শুনেছি সে একটি কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। তবে আশরাফ ভূইয়ার নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ককটেল ফুটিয়ে গাড়িতে করে সবকিছু লুটপাট করে নিয়ে যায়।
অভিযুক্ত উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আশরাফ ভূইয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। আগেও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছিল। কে বা কারা এসব কাজ করেছে আমি জানিনা।
অভিযুক্ত জামপুর ইউনিয়নের যুবদলের সভাপতি এমদাদুল হক দিপু বলেন, ঘটনাস্থলে আমার রেজিষ্টিকৃত জমি আছে। সে জায়গা মেপে সীমানা নির্ধারণ করতে গেলে আমাদের উপর হামলা চালায়। থানায় আমি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। তবে চলে আসার পর কি ঘটেছে আমার জানা নেই।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে ১ কোটি টাকার মালামাল লুটের ও জমিদখলের পৃথক দুইটি অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: য বদল ন র য়ণগঞ জ য বদল র স উপজ ল ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।