রাঙামাটিতে ৫০০ কোটি টাকার জলপাই উৎপাদন
Published: 18th, January 2025 GMT
বাংলাদেশের মানুষের কাছে অতি পরিচিত একটি ফলের নাম জলপাই। আচার, চাটনি, জ্যাম, জেলি এবং তেল তৈরিতে ব্যবহার হয় এই ফলটি। বর্তমানে পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে বৃদ্ধি পেয়েছে জলপাইয়ের বাণিজ্যিক চাষাবাদ। জেলার ৫৯২ হেক্টর জমিতে ২ হাজার ২০০ মেট্রিকটন জলপাই উৎপাদন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৫০০ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
জলপাইয়ের বাণিজ্যিক চাষাবাদ রাঙামাটিতে আগে তেমন ছিল না। এই জেলায় জলপাইয়ের ফলন ভালো হওয়ায় চাষাবাদে ব্যাপক উৎসাহ দেখা দিয়েছে চাষিদের মধ্যে। একটি গাছ থেকে কমপক্ষে দেড় থেকে দুই মণ জলপাই পাওয়া যায়। বাজারে দাম ভালো থাকায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। একই সঙ্গে রাঙামাটি থেকে জলপাই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে।
কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই জেলার জমি ও আবহাওয়া জলপাই চাষের জন্য বেশ ভালো। রাঙামাটি জেলায় প্রত্যেকটি বাড়িতে একটি-দুইটি করে জলপাই গাছ দেখা যায়। এর বিস্তার ঘটানো গেলে বাণিজ্যিক প্রসার ঘটানো সম্ভব।
আরো পড়ুন:
টিসিবির ১ কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারীর ৩৭ লাখই ভুয়া: বাণিজ্য উপদেষ্টা
শেষ কার্যদিবসে সূচকের পতন, কমেছে লেনদেন
জেলার লংগদু উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা গাছ থেকে জলপাই সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পাইকাররা বাড়ি বাড়ি ঘুরে জলপাই সংগ্রহ করে এক জায়গায় একত্রিত করে বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
রাঙামাটির লংগদু উপজেলার গুলশাখালী ইউনিয়নের মো.
লংগদু উপজেলার গুলশাখালী ইউনিয়নের মো. সবুজ মিয়া বলেন, “আমি শখ করে বাড়ির পাশের জমির পাহাড়ি ঢালুতে ২০টি জলপাই গাছ লাগিয়েছি। এই গাছ দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে ফল দেয়। জলপাই গাছে প্রচুর ফল আসে। এবার দুই লাখ টাকার জলপাই বিক্রি হয়েছে আমার। এই ফলের অনেক চাহিদা তাই বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে হয় না, পাইকার বাড়িতে এসে জলাপই কিনে নিয়ে যান।”
গুলশাখালী ইউনিয়নের মো. ইদ্রিস জানান, দুই বছর আগে তিনি তিন একর জমিতে ১০৫টি জলপাই গাছ লাগান। প্রথমবারই ৩ লাখ টাকায় জলপাই বাগান বিক্রি করেছেন বলেও জানান তিনি।
রাঙামাটিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, “টক জাতীয় ফল জলপাইয়ে ভিটামিন, ভেষজ উপাদান, খাদ্যআঁশ, আয়রন, ভিটামিন-ই, ফেনোলিক উপাদান, অলিক অ্যাসিড এবং বিভিন্ন প্রকারের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে। রাঙামাটির ১০ উপজেলায় জলপাইয়ের গাছ আছে, তবে বাগান নেই। এবার এই জেলার ৫৯২ হেক্টর জমিতে ৬ হাজার ২০০ মেট্রিক টন জলপাই উৎপাদন হয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।”
তিনি আরো বলেন, “জলপাইয়ের ক্রমবর্ধমান চাহিদা ভবিষ্যতে জেলার অর্থনীতিতে আরো গতি সঞ্চার করবে। জলপাই উৎপাদন বাড়াতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। কেবল গ্রাম বা জেলা শহর নয়, ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে জলপাই গাছ লাগানো যেতে পারে অতি সহজেই।”
ঢাকা/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার শপথ ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা যোদ্ধাদের
বিজয়ের মাস ঢাকায় এক হলেন একাত্তরে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর যোদ্ধারা; তাঁরা শপথ নিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার।
আজ শনিবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গেরিলা যোদ্ধাদের এই মিলনমেলায় এই বাহিনীর জীবিত সদস্যদের পাশাপাশি শহীদ পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। দিনভর এই আয়োজন করে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়ন বিশেষ গেরিলা বাহিনী সমন্বয় কমিটি।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে আলাদা গেরিলা বাহিনী গঠন করে অংশ নিয়েছিলেন ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের সদস্যরা। কয়েক হাজার গেরিলা যোদ্ধার এই বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফরহাদ। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বেতিয়ারার যুদ্ধে এই বাহিনীর সদস্যদের আত্মদান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে আলোচিত ঘটনা।
স্বাধীনতার পর এই গেরিলা বাহিনীর সদস্যরা মোহাম্মদ ফরহাদের নেতৃত্বে অস্ত্র সমর্পণ করেছিলেন। দেড় যুগ আগে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মুক্তিযোদ্ধাদের যে তালিকা করেছিল, তাতে এই বাহিনীর সদস্যদের রাখা হয়নি। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের গেরিলা বাহিনীর সদস্যদের মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
শহীদ মিনারে মিলনমেলার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি এই গেরিলা বাহিনীর সদস্য ছিলেন, স্বাধীনতার পর অনুষ্ঠিত প্রথম ডাকসু নির্বাচনে ভিপি হয়েছিলেন তিনি।
ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আজ শনিবার একাত্তরে ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনীর মিলনমেলায় সিপিবির সাবেক সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম