শিক্ষা ক্যাডারে ১৩৪ জনের প্রতিনিধি কমিটি দিল নাগরিক কমিটি
Published: 20th, January 2025 GMT
ছাত্র-জনতার জুলাই অভ্যুত্থানে সমর্থন ও অংশগ্রহণকারী শিক্ষকদের সমন্বয়ে প্রতিনিধি কমিটি ঘোষণা করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। সরকারি কলেজের জুলাইপন্থি শিক্ষকদের নিয়ে এমন কমিটি গঠন করায় প্রশ্ন উঠেছে। তবে নাগরিক কমিটির নেতারা বলছেন, অরাজনৈতিক সংগঠনে যোগ দেওয়ার মধ্যে আইনি ও নৈতিক কোনো বাধা নেই।
গতকাল রোববার জাতীয় নাগরিক কমিটির শিক্ষা গবেষণা সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ শান্ত ১৩৪ জন বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তার নামে প্রতিনিধি কমিটি সুপারিশ করেন। জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন তা অনুমোদন দিয়েছেন।
ড.
সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে এই কমিটিতে স্থান পাওয়া ব্যক্তিরা নিরপেক্ষতা বজায় রেখে দায়িত্ব পালনে সমর্থ হবেন কি না জানতে চাইলে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আলাউদ্দিন মোহাম্মদ সমকালকে বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি যেহেতু অরাজনৈতিক সংগঠন। এতে যুক্ত হওয়ায় আইনি ও নৈতিক কোনো বাধা নেই। যারা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মধ্য থেকে গণঅভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছে এবং গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করে তাদের নাগরিক প্ল্যাটফর্মে আনা হয়েছে। সরকারি কলেজের শিক্ষকরাই নন, আমলাদের কেউ কেউ ছিলেন। সামরিক বাহিনীতে কর্মরত এবং অবসরপ্রাপ্তদের অনেকেই নানাভাবেই সক্রিয় ছিলেন। তারা বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে সোচ্চার থাকবেন, এটুকুই।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব স এস
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে
বাংলাদেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন দেখা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সম্প্রতি যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের পর এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে ২০১৯ সালের পর কমেছে ১৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে ২০২১ সালের পর ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে ২০১৪ সালের পর ৮১.২১ শতাংশ, মিশরে ২০১১ সালের পর ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯৮ সালের পর ১৫১.৪৯ শতাংশ কমেছে। এই ধারাবাহিক হ্রাসের মধ্যে বাংলাদেশে এফডিআইর ১৯.১৩ শতাংশ বৃদ্ধির চিত্র বিশেষভাবে নজরকাড়া।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো—শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে পুনরায় চালু করার অদ্ভুত ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান তার দারুন একটা প্রতিফলন। সাধারণত, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা উল্টা দেখছি। সঠিক নীতি নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার আন্তরিকতা এবং প্রাইভেট সেক্টরের অদম্য স্পৃহা কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। সব সমস্যার সমাধান হয়নি, তবে সদিচ্ছার কোনো ত্রুটি ছিল না। শিগগিই সারা বছরের একটি আমলনামা (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করা হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক