নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে আহত ২
Published: 24th, January 2025 GMT
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে দুটি স্থলমাইন বিস্ফোরণে আলী হোসেন (৩৫) ও আরিফ উল্লাহ নামের দুই ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আলী হোসেনের বাম পায়ের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন এবং আরিফ উল্লাহর মুখমণ্ডলে ক্ষত হয়েছে। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়েছেন।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ফুলতলী সীমান্তের ৪৭, ৪৮ ও ৪৯ নম্বর পিলার এলাকায় পৃথক পৃথক স্থলমাইন বিস্ফোরণ ঘটে।
আহত আলী হোসেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার আশারতলী এলাকার মো.
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আলী হোসেন ও আরিফ উল্লাহ মিয়ানমার থেকে গরু আনতে গিয়েছিলেন। সীমান্তে আরাকান আর্মি ও মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর পুঁতে রাখা স্থলমাইন বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন তারা। সকাল ৬টার দিকে মাইন বিস্ফোরণের আলী হোসেন আহত হন। সকাল ১০টার দিকে আরেকটি মাইন বিস্ফোরণে আরিফ উল্লাহ আহত হন।
নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য শামসুল আলম জানিয়েছেন, মাইন বিস্ফোরণের পর সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে বিজিবি।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসরুরুল হক বলেছেন, “বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে আজ সকাল ৬টা থেকে ৭টার দিকে একটি ও ১০টার দিকে আরেকটি স্থলমাইন বিস্ফোরণ হয়েছে বলে শুনেছি।”
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, “আজ সকাল ৬টার দিকে একটি ও ১০টার দিকে আরেকটি মাইন বিস্ফোরণ হয়েছে। এতে দুই জন আহত হয়েছেন। তাদেরকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ এখনো পাওয়া যায়নি। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।”
ঢাকা/চাইমং/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।