শীঘ্রই আসছে মহানগর যুবদলের ইউনিট কমিটি
Published: 24th, January 2025 GMT
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে একটি পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটি পেয়েছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীরা। দীর্ঘদিন যাবত তিনজন আর পাঁচজনের কমিটিতে আটকে ছিল নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদল।
এবার মহানগর যুবদলের একটি পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটি হওয়ায় মহানগর যুবদলের আওতাধীন বিভিন্ন ইউনিট কমিটির নেতাকর্মীরা আশায় বুক বাঁধছেন ' এবার বুঝি তাদের একটা রাজনৈতিক পরিচয় মিলবে'।
গত স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীরা আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন কোনো পদ পদবি ছাড়াই। রাজপথের সেই ত্যাগী নেতাকর্মীরা তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে মহানগর যুবদলের আওতাধীন বিভিন্ন থানা, উপজেলা এবং ওয়ার্ড কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন।
তৃণমূলের মনের কথা বুঝতে পেরে খুব শীঘ্রই নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আওতাধীন বিভিন্ন থানা, উপজেলা এবং ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল।
মুঠোফোনে মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল বলেন, দেশব্যাপী সংগঠনকে গতিশীল করার কাজ চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের প্রতিটি ইউনিট কমিটিকে সুন্দর করে সাজানোর প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আওতাধীন প্রতিটি থানা, উপজেলা এবং ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হবে ইনশাআল্লাহ।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে সজল বলেন, ইউনিট কমিটিতে বিগত দিনের আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথের পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের পরপর তিনটি কমিটির নেতারা তাদের আওতাধীন কোনো ইউনিট কমিটি গঠন করতে পারেননি। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃবৃন্দের এই ব্যর্থতার কারনে রাজনৈতিক পরিচয় পাননি যুবদলের শত শত নেতাকর্মী।
খোরশেদ-মন্তু কমিটি তিন বছর দায়িত্বে থেকেও ব্যর্থ হয়েছেন ইউনিট কমিটি দিতে। এরপর মন্তু-সজল কমিটিও ২ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন তারা পূর্বসূরিদের মতো ইউনিট কমিটি গঠনে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন। সর্বশেষ বর্তমান সজল-সাহেদ কমিটিরও দুই বছর হতে চললো, কমিটির দেখা পাননি মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীরা।
গত তিন কমিটির নেতৃত্বে থাকা নেতাদের উদাসিনতা ও কমিটি বানিজ্যের কারনে তৃণমূল পর্যন্ত নেতৃত্বের বিস্তার ঘটাতে পারেননি মহানগর যুবদলের নেতাকর্মীরা। তাছাড়া কোনো রাজনৈতিক পরিচয় না থাকার পরেও জীবন বাজি রেখে আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিয়েছেন তারা। তাই অবিলম্বে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আওতাধীন ইউনিট কমিটিগুলো ঘোষনার দাবি জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
সূত্রে প্রকাশ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আওতায় রয়েছে সদর, বন্দর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এবং বন্দর উপজেলা ইউনিট। রয়েছে পাঁচটি ইউনিয়ন এবং সিটি কর্পোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ড কমিটি। এতগুলো কমিটির মধ্যে মাত্র দুটি ইউনিয়ন কমিটি ঘোষনা করেছে বর্তমান মহানগর কমিটির নেতারা। বাকি ইউনিটগুলোতে দীর্ঘদিন কোনো কমিটি নেই।
মহানগর যুবদলের কমিটিতে বারবার রদবদল হলেও এসব ইউনিট কমিটির পদ প্রত্যাশী নেতাকর্মীদের মনের আশা আর পূরণ হয়না। অনেক নেতাকর্মী হতাশ হয়ে যুবদলের রাজনীতি ছেড়ে বিএনপির মূল দলের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়ে গেছেন।
বাকি যারা দীর্ঘদিন যাবত একটি রাজনৈতিক পরিচয়ের আশায় রাজপথে লড়াই সংগ্রাম করে যাচ্ছেন তাদের সকলের একটাই দাবি আর তাহলো যত দ্রুত সম্ভব ইউনিট কমিটিগুলো গঠন করে সংগঠনকে আরো গতিশীল করা এবং দীর্ঘদিনের কমিটি খড়া ঘুচিয়ে তৃণমূলের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে দেয়া।
সূত্র মতে, ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে সভাপতি, মমতাজ উদ্দিন মন্তুকে সাধারণ সম্পাদক, মনোয়ার হোসেন শোখনকে সহসভাপতি, সাগর প্রধানকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও রশিদুর রহমান রশোকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে পাঁচ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল।
সেই আংশিক কমিটি ঘোষণার প্রায় পাঁচ মাস পর ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের ২০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। ২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সেই কমিটি বিলুপ্ত করে যুবদল কেন্দ্রীয় সংসদ।
২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর ঘোষনা করা হয়েছিলো নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সুপার ফাইভ আহবায়ক কমিটি। মমতাজউদ্দিন মন্তুকে আহবায়ক আর মনিরুল ইসলাম সজলকে সদস্য সচিব করে ঘোষনার প্রায় দুই বছর এই পাঁচজনেই আটকে ছিলো মহানগর যুবদল।
এই সময়ের মধ্যে মহানগর যুবদল নিজেদের কমিটি পূর্নাঙ্গ করতে পারেনি, পারেনি কোনো ইউনিট কমিটিও ঘোষনা করতে। তাই নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের ব্যানারে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে আসা নেতাকর্মীদের কারো কোনো পদ পদবী বা রাজনৈতিক পরিচয় ছিলো না।
২০২৩ সালের ২৯ আগষ্ট মনিরুল ইসলাম সজলকে আহবায়ক, সাগর প্রধানকে সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও সাহেদ আহমেদকে সদস্য সচিব করে ঘোষনা করা হয় মহানগর যুবদলের তিন সদস্যের আহবায়ক কমিটি।
এই কমিটিও গত দেড় বছরে ইউনিট কমিটিগুলি গঠন করতে পারেনি। এর ফলে নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক পরিচয় ছাড়াই জীবন বাজি রেখে লড়াই করে গেছেন।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: য বদল ন র য়ণগঞ জ কম ট র ন ত র কম ট ক কম ট সদস য উপজ ল র জপথ গঠন ক
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ পাকিংয়ে তীব্র যানজট, জনদুর্ভোগ চরমে
বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো যানজট। এ যানজটের কারণে মাত্র ৫ মিনিটের রাস্তা পেরুতে সময় লেগে যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। ফলে প্রতিনিয়ত চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে নারায়ণগঞ্জবাসীকে।
নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগ কিংবা সিটি কর্পোরেশন এ যানজট থেকে জেলাবাসীকে পরিত্রাণ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে দিন যতই বড়ছে ততই বাড়ছে নারায়ণগঞ্জবাসীর দুর্ভোগ।
নারায়ণগঞ্জে এমন কোন সড়ক নাই সেই সড়কে যানজট নাই। মূল সড়ক থেকে শুরু করে অলি-গলি সব জায়গায়ই যানজট আর যানজট। তবে এ যানজটের পেছনে মূল সড়কের যানজটকেই দায়ি করছেন অনেকে।
তারা বলছেন, মূল সড়ক যদি যানজট মুক্ত থাকতো তাহলে এর আশেপাশের সড়কগুলো যানজটের সুষ্টি হতো না। মূল সড়কে তীব্র যানজটের কারণেই এর প্রভাব পড়ছে অন্য সড়কগুলোতেও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে শহরের চাইতে চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণে করেছে। এ সড়ক দিয়ে চলাচলের কথা শুনলেই মানুষ আতকে উঠে। কারণ, যানজটের মাত্র পনেরো মিনিটের রাস্তা পাড় হতে সময় লাগে ঘন্টার পর ঘন্টা।
এ রাস্তায় এ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ীকেও যানজটে আটতে থাকতে দেখা যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। একবার যানজটে আটকা পড়লেই দিন শেষ। কখন বাড়ী কিংবা অফিসে যাবেন তার কোন ঠিক নেই।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, এ যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে পঞ্চবটি-মুক্তারপুর ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ। ফ্লাইওভারের কর্মযজ্ঞের ফলে যানবাহনগুলোকে একটু ধীর গতিতে যেতে হয়। ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়।
তবে এ যানজটের আরও একটি বড় কারণ চোঁখে পড়ে, আর তা হলো পঞ্চবটি এলাকায় ফ্লাইওভারের নিচে এবং চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কের দু’পাশে ট্রাক ও কভার্ডভ্যানগুলো অবৈধভাবে পাকিং করে রাখা।
এসব যানবাহনগুলো সড়কের দু’পাশে পার্কিং করে রাখার কারণে মূল সড়ক অনেকটাই সরো হয়ে যায়। ফলে এ সড়ক দিয়ে অন্যসব যানবাহনগুলো ঠিকমত চলাচল করতে পারে না। ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
অথচ, পঞ্চবটির খুব কাছেই রয়েছে ট্রাক ও কভার্ডভ্যান স্ট্যান্ড। যানবাহনের চালকরা ওই স্ট্যান্ডে গাড়ী না রেখে সড়কের পাশে অবৈধভাবে বাঁকাত্যাঁড়া গাড়ীগুলো রাখছেন। এর ফলে যে, ওই সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে এবং যানজটের কবলে পড়ে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে, এ বিষয়ে যেন তাদের কোন মাথা ব্যথা নেই।
তাদের ভাব-নমুনা দেখা মনে হয় যে, তারাই যেন এ সড়কটির মূল মালিক। না পুলিশে তাদের কিছু বলে, না তারা জনগণের কোন কথা শোনে। তারা তাদের ইচ্ছেমত গাড়ীগুলো রেখে যানজটের সৃষ্টি করছেন।
চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে চলাচল করা ভুক্তভোগী পথচারিরা বলছেন, এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করাটা বর্তমানে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এত ভয়াবহ যানজট আমরা কখনোই চোঁখে দেখিনি। পঞ্চবটি ফ্লাইওভারের নিচে যেভাবে ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো রাখা হয় পুরো সড়কটা তারা কিনে নিয়েছে। পুলিশও কিছু বলে না।
এছাড়া চাষাঢ়া থকে পঞ্চবটি পর্যন্ত পুরো সড়কে দু’পাশেই তারা গাড়ীগুলো রাখছেন। রাস্তাটি পাশে এমনিতেই জায়গা কম, আবার যদি তারা এভাবে গাড়ী রাখেন তাহলে যানজটের সৃষ্টিতো হবেই। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল বলেন, আসলে নিতাইগঞ্জ এলাকা থেকে ট্রাক স্ট্যান্ডটি সরিয়ে নেয়ার জন্য সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আইভী একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। তিনি শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে পঞ্চবটি এলাকাতে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে একটি ট্রাক স্ট্যান্ড গড়ে তোলেন এবং সেখানে এ স্ট্যান্ডকে স্থানান্তর করেন। কিন্তু কোন লাভ হয়নি।
এখন তারা কিছু গাড়ী ওই স্ট্যান্ডে রাখে বাকি গাড়ীগুলো সড়ক দখল করে এলোপাথারিভাবে রাখে। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলেও যেন কারো কোন কিছু বলার নেই। কারণ, এ সমস্যা নিয়ে বহুবার ডিসি-এসপির সাথে বসা হয়েছে, আলোচনা হয়েছে কিন্তু সুরাহা হয় নাই।
তবে, ৫ আগস্টে দেশে একটি বড় পরিবর্তনের পর আশা করছিলাম এবার হয়তো এর একটা সুরাহা হবে। কিন্তু না। সড়ক দখল করে রাখা ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে মানুষকে বাধ্য হয়েই যানজটের মত দুর্ভোগ দুর্দশাময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পথ চলতে হচ্ছে।
তারা বলেন, আসলে দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য সেদিন ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এতবড় একটা পরিবর্তন নিয়ে এসেছিলো। কিন্তু দেশের মানুষ যদি সেই শান্তি শৃঙ্খলা ভোগই করতে না পারে, তাহলে এত প্রাণ দিয়ে কি লাভ হলো?
আমরা জানিন না, প্রশাসন আসলে কাদেরকে খুশি করাতে চাচ্ছেন? মুষ্টিম কিছু চালকদের জন্য হাজার হাজার মানুষের এ কষ্ট কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি করবো, তারা যেন খুব শীঘ্রই এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়। নারায়ণগঞ্জবাসীকে যেন কিছুটা স্বস্তি দেয়।
এ বিষয়ে টিআই করিম বলেন, ৫ আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জে যানজটের যে ভয়াবহতা সৃষ্টি হয়েছিলো বর্তমানে তা কমে আসছে। আশাকরছি, আগামীতে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। পঞ্চবটি সড়কে ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এজন্য এ রুটে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
এমতাবস্তায় যদি কোন চালক রাস্তা দখল করে অবৈধভাবে গাড়ী পার্কিং করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো।