ঘরে বা অফিসে বসেই আগ্রহীরা এখন থেকে জেডটিই কে-১০ রাউটারের মাধ্যমে ফোরজি ইন্টারনেটের ওয়্যারলেস (তারহীন) সংযোগের বিশেষ সুবিধা নিতে পারবেন।
সংযোগ ও যোগাযোগে (কানেক্টিভিটি) আনলিমিটেড সুবিধা নিশ্চিতে ওয়াইফাই ওয়্যারলেস রাউটারের বিস্তৃত পরিষেবা ঘোষণা করেছে ডিজিটাল অপারেটর বাংলালিংক। আগ্রহীরা টফিতে টিভি চ্যানেল, নাটক বা মুভির মতো অসংখ্য কনটেন্ট দেখার সুযোগ পাবেন। অপারেটরের গ্রাহকরা ওয়াইফাই দিয়ে হইচই, আইস্ক্রিন, বঙ্গ ও দীপ্ত প্লের মতো ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মাসিক সাবস্ক্রিপশন ও আনলিমিটেড ইন্টারনেট সুবিধা পাবেন। তারহীন রাউটারের মাধ্যমে ফোরজি ইন্টারনেট নিশ্চিত করার মাধ্যমে শিক্ষা, অফিস, ব্যবসা, স্বাস্থ্যসেবা, গেমিং, বিনোদন, আপলোডিং, ডাউনলোডিং ও স্ট্রিমিং– এমন সব পরিষেবায় ডিজিটাল সুযোগ বিস্তৃত হবে বলে উদ্যোক্তারা জানান।
বাংলালিংকের মার্কেটিং অপারেশনস পরিচালক মেহেদী আল আমিন বলেন, বাংলাদেশের অন্যতম ফোরজি ইন্টারনেট সেবাদাতা হিসেবে সবার জন্য ইন্টারনেট সুবিধা সহজলভ্য ও ডিজিটাল ব্যবধান কমিয়ে আনতে কাজ করছি। সব ধরনের ডিজিটাল সেবা ও সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে বাড়ি ও অফিসে নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ নিশ্চিত করে ও এন্টারপ্রাইজ গ্রাহককে আরও বেশি সক্ষম করে তুলতেই তারহীন ওয়াইফাই সেবার এমন উদ্যোগ নেওয়া। নতুন পরিকল্পনায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে কেবল ছাড়াই ব্যক্তি, কমিউনিটি ও এন্টারপ্রাইজের জন্য সম্ভাবনা তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য।
ওয়াইফাই রাউটারের মাধ্যমে ৩২টি ডিভাইসে সংযোগ পাওয়া যাবে। বিদ্যুৎ ছাড়া রাউটারটি ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট সচল থাকে। রাউটারে ওয়াইফাই প্যাকেজ মাসিক ৩ হাজার ৬৯৯ টাকা থেকে শুরু। কয়েকটি প্যাকেজ ওয়াইফাই সুবিধা বিভক্ত। প্রথম প্যাকেজে গ্রাহক ৯৯৭ টাকায় ২৫ এমবিপিএস অবধি আনলিমিটেড ইন্টারনেট সংযোগ পাবেন। সবকটি প্যাকেজের সঙ্গেই প্রিমিয়াম ওটিটি সাবস্ক্রিপশন ফ্রি পাওয়া যাবে। অন্যদিকে, ওয়াইফাই গ্রাহকরা আনলিমিটেড টফি কনটেন্ট পাবেন। রাইটারে মিলবে ফ্রি হোম ডেলিভারি ও ইনস্টল সুবিধা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আনল ম ট ড
এছাড়াও পড়ুন:
আরপিওর বিধানের বৈধতার রায় রিভিউর জন্য হলফনামার অনুমতি
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের বিধানের বৈধতা দিয়ে ১৪ বছর আগে রায় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। এই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদনের জন্য হলফনামার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন দুজন আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আজ সোমবার হলফনামা করার অনুমতি দিয়েছেন।
আবেদনকারী সাত ব্যক্তি হলেন ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন, মেজর (অব.) এস এম হারুনুর রশীদ, কাজী জাহেদুল ইসলাম, আইনজীবী এস এম আজমল হোসেন, মেজর (অব.) নিয়াজ আহমেদ জাবের, মেজর (অব.) মো. জিয়াউল আহসান ও সালাহ উদ্দিন।
আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এ মামলায় আবেদনকারীরা পক্ষ ছিলেন না। যে কারণে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন দায়েরের জন্য হলফনামা করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন তাঁরা। চেম্বার আদালত হলফনামা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন। আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষে শিগগিরই রিভিউ আবেদন করা হবে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১২(৩ক)(ক) বিধান অনুযায়ী নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যুক্ত করে দিতে হবে। তবে শর্ত থাকে যে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী ইতিপূর্বে জাতীয় সংসদের কোনো নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকলে ওই তালিকা প্রদানের প্রয়োজন হবে না।
আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, ঢাকার একটি আসন থেকে ২০০৭ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি মনোনয়নপত্র নেন। পরে নির্বাচনের ওই তারিখ পিছিয়ে যায়। অন্যদিকে ২০০৮ সালে আরপিও দফা ১২(৩ক)–তে সংশোধনী আনা হয়। এই বিধান সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদ ও আরপিওর ১২(১) ধারার পরিপন্থী উল্লেখ করে মাহবুব আহমেদ চৌধুরী ২০১০ সালে হাইকোর্ট রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট রুল ডিসচার্জ (খারিজ) করে রায় দেন। দফা (৩ক) সংবিধান পরিপন্থী নয় বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১০ সালে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন রিট আবেদনকারী। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ২০১১ সালের ২৩ জানুয়ারি লিভ টু আপিল খারিজ করে রায় দেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নের সঙ্গে যুক্ত করাসংক্রান্ত আরপিওর ১২(৩ক)–তে বেআইনি কিছু পাননি বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে দুই আইনজীবীসহ সাত ব্যক্তি আবেদন করতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তাঁদের আইনজীবী ওমর ফারুক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে ভোটারের গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। ভোটার কোন প্রার্থীকে ভোট দেবেন বা দেবেন না, এটি একান্তই তাঁর চিন্তা ও মতপ্রকাশের অধিকার। সিক্রেট ব্যালটে হামলা হলে ভোট বাতিলও হয়। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে প্রার্থীর যোগ্যতা নির্ধারণ করা আছে। রাজনৈতিক দল হলে ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন লাগবে না, অথচ স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে গেলে লাগবে অর্থাৎ একই মনোনয়নপত্র ঘিরে দ্বৈত বিধান। ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন থাকার ওই বিধানের মাধ্যমে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখার সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা সংবিধান সমর্থন করে না এবং ভোটারের গোপনীয়তারও লঙ্ঘন—এসব যুক্তি তুলে ধরে আবেদনটি করা হয়।