পাঁচ আগস্টের শক্তির মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে বলে মনে করছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। তিনি বলেন, ‘‘৫ আগস্টের সমস্ত শক্তি একসঙ্গে থাকতে হবে, যাতে ফ্যাসিবাদ ফিরে না আসে। যেন অন্য কোনো দেশ বাংলাদেশে আগ্রাসন চালাতে না পারে। বাংলাদেশ যে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পেরেছে, সেই প্রতিরোধ, তারুণ্যের প্রতিরোধ সারা পৃথিবীর কাছে শিক্ষণীয় ব্যাপার হয়েছে।’’

রবিবার (২৬ জানুয়ারি) বিকালে মুন্সীগঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।

আদিলুর রহমান খান জানান, অন্তর্বর্তী সরকার অপরাধীদের বিচারের বিষয়ে সচেতন। তবে বিচারের প্রশ্নে তড়িঘড়ি করলে বিচার সঠিক হয় না। আবার দীর্ঘসূত্রিতায় বিচারহীনতার সৃষ্টি হয়।

আরো পড়ুন:

চৌগাছায় বাওড়ের মাছ নিয়ে বিএনপির ২ পক্ষের সংঘর্ষ, পিস্তল উদ্ধার

কিশোরগঞ্জে জমি দখল নিয়ে সংঘর্ষ, যুবদল নেতাসহ আহত ১৫ 

অনুষ্ঠানে আন্দোলনে শহীদ জেলার ১৬ পরিবারের সদস্যরা অংশ নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন। পরে তাদের হাতে স্থানীয় প্রশাসনের আর্থিক অনুদান তুলে দেন উপদেষ্টা।

আদিলুর রহমান খান জানান, শহীদ ও আহত পরিবারের অনেক আকাঙ্ক্ষা এখনো অবাস্তবায়িত আছে। জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সেগুলো পূরণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় মুক্তিযোদ্ধাদের যেভাবে দায়িত্ব নিয়েছে, জুলাইয়ের যোদ্ধাদের একইভাবে দায়িত্ব নেওয়া হবে। এরজন্য আলাদা অধিদপ্তর তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।

জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদের আয়োজনে অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত, মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের পরিচালক নাসির উদ্দিন এলানসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পরে জেলা শহরের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে তারুণ্যের উৎসব উদযাপন উপলক্ষে জেলা পর্যায়ে জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন উপদেষ্টা।

ঢাকা/রতন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

বিবিসির বিশ্লেষণ: শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় কেন ভারতকে বিব্রত করবে

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ‍মৃত্যুদণ্ডের রায় ভারতকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিবিসির গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স রিপোর্টার অ্যানবারাসান ইথিরাজান। 

তিনি লিখেছেন, এখন আশা করা হচ্ছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হাসিনাকে ফেরানোর জন্য প্রত্যর্পণের অনুরোধ পাঠাবে। ২০২৪ সালের আগস্টে দেশ ছাড়ার পর থেকে তিনি ভারতে বসবাস করছেন।

আরো পড়ুন:

শেখ হাসিনার রায় নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া

বিচার স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিকমানের, প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই: জামায়াত

ঢাকার আগের দাবিগুলোর জবাব ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে দেয়নি। দুই দেশের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তিও রয়েছে।

তবে আইনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি মনে হয় হাসিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা সৎউদ্দেশ্যে করা হয়নি, তাহলে ভারত সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারে।

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়ে তিনি ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। ভারতে তাকে ফেরত না পাঠানোর ব্যাপারে দেশটির সর্বদলীয় রাজনৈতিক পর্যায়েও এক ধরনের ঐকমত্য রয়েছে।

দিল্লির কাছে বাংলাদেশ শুধু প্রতিবেশী নয়, এটি কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য।

অ্যানবারাসান ইথিরাজান লিখেছেন, ভারত যেন টানটান করে বাঁধা দড়ির ওপর হাঁটছে; কারণ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে অস্বীকার করলে তা কূটনৈতিক অবজ্ঞা হিসেবে দেখা যেতে পারে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে আরো খারাপ করতে পারে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 

বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এর আগে গত ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার জন্য আজকের তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত।

ঢাকা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ