Samakal:
2025-06-16@08:10:29 GMT

ফিলিস্তিনিদের ঘরে ফিরতে বাধা

Published: 26th, January 2025 GMT

ফিলিস্তিনিদের ঘরে ফিরতে বাধা

গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পরও বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের নিজ এলাকায় ফিরতে বাধা দিচ্ছে ইসরায়েল। বাধার মুখে নেটজারিম করিডোরের কাছে উপকূলীয় সড়কে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি অপেক্ষা করছেন। বন্দি মুক্তি নিয়ে বিরোধে ইসরায়েল তাদের প্রবেশের অনুমতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। হামাস ও ইসরায়েল একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে। 

শনিবার হামাস চার ইসরায়েলি নারী সেনাকে মুক্তি দেয়। বিনিময়ে ইসরায়েল মুক্তি দেয় ২০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে। এ ছাড়া চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, এদিন উত্তর গাজার বাসিন্দাদের তাদের বাড়িতে ফেরার অনুমতি দেওয়ার কথা ছিল। তবে চার সেনাকে মুক্তির পরপরই ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটির বিরুদ্ধে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে ইসরায়েল। দেশটির সরকার বলছে, বেসামরিক ইসরায়েলি আরবেল ইয়াহুদের মুক্তির যে পরিকল্পনা করা হয়েছে, সেটি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত গাজার বাসিন্দাদের উত্তর দিকে যেতে দেওয়া হবে না। তবে হামাস দাবি করেছে, আরবেল জীবিত আছেন এবং আগামী সপ্তাহে মুক্তি পাবেন। 

শনিবার সন্ধ্যা থেকে যখন হাজার হাজার ফিলিস্তিনি গাজার কেন্দ্রে আল-রাশিদ সড়কের পাশে বাড়িতে ফিরে যাওয়ার জন্য জমায়েত হয়েছিল, তখন ইসরায়েলি বাহিনীর তরফ থেকে গুলি চালানোর খবর পাওয়া যায়। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং ফিলিস্তিনি মিডিয়া জানিয়েছে, ওই সময় একজন নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন। 

গাজার ফিলিস্তিনিদের উত্তরে তাদের বাড়িঘরে ফেরার ব্যবস্থা করতে কাজ করছে কাতার ও মিসর। কিন্তু ইসরায়েলি সেনারা উপকূলীয় ওই সড়ক অবরোধ করে রেখেছে। এ সড়ক ধরেই হেঁটে গাজার উত্তরে ফেরার অপেক্ষায় আছেন ফিলিস্তিনিরা। 

ইসরায়েলের হামলায় বিধ্বস্ত গাজা থেকে জর্ডান ও মিসরের আরও ফিলিস্তিনি নেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এটা কী স্বল্প না দীর্ঘ মেয়াদের জন্য– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে কোনোটাই হতে পারে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট গাজাকে ‘ডেমোলিশন সাইট’ বা ধ্বংসযজ্ঞের স্থান অ্যাখ্যা দিয়েছেন। এক বছরের বেশি সময়ের যুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনী ভূখণ্ডটির ৪৭ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে; এমন ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, এখন সেখানে ভয়াবহ মানবিক সংকট বিরাজ করছে। 

ইসরায়েলকে ২ হাজার পাউন্ডের বোমা দেওয়ার বিষয়টি এতদিন আটকে রেখেছিলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে বাইডেনের সেই বাধা উপেক্ষা করারও নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প। 

মার্কিন প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত আকাশযান এয়ারফোর্স ওয়ানে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন, আমরা সেগুলোকে ছেড়ে দিয়েছি। তারা সেগুলো পেয়ে যাবে। ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়, শক্তিশালী এ বোমাগুলো সরবরাহের অনুমতি কেন দিলেন? জবাবে তিনি বলেন, কারণ, তারা সেগুলো কিনেছে।

এদিকে, লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইসরায়েলিদের প্রত্যাহারের সময়সীমা রোববার ভোররাতে পার হয়ে গেলেও দেশটির সেনারা কয়েকটি এলাকায় রয়ে গেছে। ইসরায়েল বলছে, হিজবুল্লাহর সঙ্গে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়িত না হওয়ায় এমনটি হয়েছে। এ অবস্থায় ওই অঞ্চলে বাড়িতে ফিরে যাওয়ার চেষ্টাকালে লেবাননের নাগরিকদের ওপর হামলা করেছে দখলদার দেশটি। এতে ১১ জন নিহত এবং ৮৩ জন আহত হয়েছেন। রোববার লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। এদিকে ইসরায়েলি বর্বরতায় এ পর্যন্ত ৩৮ হাজার শিশু এতিম হয়েছে। বিধবা হয়েছেন ১৪ হাজারের বেশি নারী এবং প্রাণ হারিয়েছে ১৩ হাজার শিশু। গতকাল জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে এ কথা জানা গেছে। 

যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর সঙ্গে ১৪ মাস ধরে চলা সংঘাত ৬০ দিনের এক যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্য দিয়ে শেষ হয়। চুক্তিতে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং হিজবুল্লাহর যোদ্ধা ও অস্ত্রশস্ত্র সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি নির্ধারিত হয়। একই সময়ে ওই এলাকায় কয়েক হাজার লেবাননি সেনা মোতায়েনের কথা রয়েছে। খবর আলজাজিরা ও বিবিসির।


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল ল ব নন

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরিতে না ফেরালে রাজপথ ছাড়বেন না ইআরপিপি স্বাস্থ্যকর্মীরা

পাঁচ মাস ধরে বেতন নেই। পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন কেউ, কেউ আবার চাকরির বয়সসীমা পার করে এখন আর নতুন কোথাও আবেদন করার সুযোগ পাচ্ছেন না। এর মধ্যেই প্রকল্প শেষের অজুহাতে চাকরিচ্যুত হয়েছেন তারা—যারা ২০২০ সালের করোনা মহামারির সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশের ফ্রন্টলাইন স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। এই অবস্থায় নিজেদের চাকরি স্থায়ীকরণ এবং অবিলম্বে বকেয়া বেতনের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ারডনেস (ইআরপিপি) প্রকল্পের আউটসোর্সিং স্বাস্থ্যকর্মীরা। 

আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, তাদের প্রধান দাবি হলো স্থায়ীকরণের মাধ্যমে চাকরি বহাল রাখতে হবে এবং রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্তির লিখিত নিশ্চয়তা দিতে হবে। সেইসঙ্গে গত চার মাসের বকেয়া ভাতা অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে। তা না হলে অবস্থান কর্মসূচি চলবে, প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

বিক্ষোভরত কর্মীদের একজন বলেন, সরকারের ডাকেই তো আমরা এসেছিলাম। ভয়ঙ্কর সময় ছিল সেটা। তখন যদি পেছনে না ফিরে মানুষকে সেবা দিতে পারি, আজ যখন একটু স্থিতি এসেছে—তখন কেন আমরা উপেক্ষিত হবো? ৫ মাস ধরে একটা টাকাও পাইনি, পরিবার চালানো দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নিপসমে কর্মরত ইআরপিপির মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আবু সুফিয়ান বলেন, প্রায় পাঁচ বছর এই প্রকল্পে কাজ করেছি। এখন বয়স ৩৫ ছাড়িয়েছে। সরকারি চাকরির আবেদনের শেষ সীমা পেরিয়ে গেছি। এখন আমাদের বাদ দিয়ে নতুন অদক্ষ জনবল নেয়ার চেষ্টা চলছে। এটা শুধু অবিচার না, আমাদের মর্যাদায় আঘাত।

ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি সেন্টারের ডাটা অপারেটর আব্দুর রহমান বলেন, ঘরে ছোট বাচ্চা, স্কুলের বেতন দিতে পারিনি। স্ত্রী-সংসার নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছি। করোনার সময় এই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডাকেই আমি কাজে গিয়েছিলাম, এখন সেই অধিদপ্তরের সিঁড়িতেই বসে থাকতে হচ্ছে দাবি আদায়ের জন্য।

ইআরপিপি প্রকল্পের আওতায় কর্মরত এসব স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিযোগ, করোনার সময় গড়ে তোলা আরটি-পিসিআর ল্যাব, ডেডিকেটেড আইসিইউ বা আইসোলেশন ইউনিটে তারাই প্রথম দিন থেকে দায়িত্ব পালন করেছেন। অথচ আজ তাদের বাদ দিয়ে সেই পদে নতুন লোক নিয়োগের পাঁয়তারা চলছে। 

তারা বলছেন, আমরা চাকরি ভিক্ষা চাই না। আমরা যেটুকু প্রাপ্য, সেটুকু চাই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রকল্প চলবে, তবে আমাদের চাকরি কেড়ে নেয়া হলো কেন? আমাদের রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত না করে অন্যদের সুযোগ দেওয়া মানে অবিচারকে পুরস্কৃত করা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ