নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় একটি আড়তের দখলকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, গোলাগুলি ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে দুইজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের সাওঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ইস্যুতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।   

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংলগ্ন ভুলতা সাওঘাট এলাকায় বিসমিল্লাহ আড়ত নিয়ে সেলিম প্রধানের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ী মুজিবর রহমানের বিরোধ চলছিল।

এ বিষয়ে ব্যবসায়ী মজিবুর রহমান বলেন, সেলিম প্রধানের মালিকানাধীন জমি ১০ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিতে ভাড়া নিয়েছি। সেখানে বালু ভরাট ও সেড নির্মাণ করে কাচাঁবাজারের আড়ত গড়ে তুলেছি। বর্তমানে পেশী শক্তি খাটিয়ে আড়তটি বেদখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন সেলিম প্রধান। 

অন্যদিকে সেলিম প্রধানের দাবি, ভুয়া চুক্তিনামা তৈরি করে জোরপূর্বক জমি দখল করে আড়ত গড়ে তোলেন মজিবুর রহমান। জমি আমার, আমি তো দখলে নেব।

স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে আড়তটি দখল করতে সেলিম প্রধানের পক্ষ নেয় মাসুদুর রহমান ও তার লোকজন। অপরদিকে মজিবুর রহমান ও আড়তের ব্যবসায়ীদের পক্ষ নেয় রফিকুল ইসলাম ও তার লোকজন। আড়তের পাশের সড়ক দিয়ে রফিকুল ইসলাম তার লোকজনদের নিয়ে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসবিরোধী মিছিল বের করে। এসময় সেলিম প্রধানের বাড়ির ভেতর থেকে ওই মিছিলে ইটপাটকেল ছোড়া হয় ও মিছিলের ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের লোকজন ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, গুলিবর্ষণ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়ায়। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতের মধ্যে রাজু ও স্বপন নামের দুজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এসময় একটি জিপ গাড়ি ও ১০ টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

পরে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আড়তের আসল মালিক কে সেটির জন্য আমরা উচ্চ আদালতের দারস্থ হবো।

সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ‘গ’ সার্কেল মেহেদী ইসলাম বলেন, সেলিম প্রধানের সঙ্গে মুজিবুর রহমানের বিসমিল্লাহ আড়ত নিয়ে র্দীঘদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। যেহেতু এখানে গুলিবষর্ণের ঘটনা ঘটেছে আমরা অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চালাব। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ স ঘর ষ আহত জ ব র রহম ন ল ইসল ম স ঘর ষ উপজ ল ব যবস আড়ত র

এছাড়াও পড়ুন:

ডাকসু নির্বাচন কমিশন ও তফসিল ঘোষণা দাবিতে প্রশাসনকে ‘সালাম’

‘২ জুন কি পেলাম? কি পাওয়ার কথা ছিল? সালাম প্রশাসন!’- লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি- অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচনের কমিশন গঠন করতে হবে এবং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে। 

রবিবার (১৫ জুন) দুপুর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

সোমবার (১৬ জুন) বিকাল ৫টায় অনুষ্ঠিতব্য হতে যাওয়া সিন্ডিকেট সভায় ডাকসু নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়টি এজেন্ডাভূক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে। আগামীকালের এ সভায় যেকোনোভাবে যেন ডাকসু নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলো পাশ হয়, সেজন্যই তাদের এমন তোড়জোড়।

আরো পড়ুন:

ঢাবিতে নামাজের কক্ষ নিয়ে বিতর্ক

ছাত্রদলের ফ্যাসিবাদী মনোভাবের প্রতিবাদ ডুজার

ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের আশঙ্কা, একটি পক্ষ ডাকসু নির্বাচন চায় না এবং এই পক্ষ বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছে।

অনশনরত শিক্ষার্থী ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “ডাকসু নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে শক্তিশালী ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বিভিন্ন গোষ্ঠী বলার চেষ্টা করছে যে ডাকসু নির্বাচনের পরিবেশ নেই, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা নেই, বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগের দোসর আছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে পুরোপুরি সক্ষম নয়; সুতরাং ডাকসু নির্বাচন দেওয়া যাবে না।”

তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্ব কি কেবল প্রশাসন-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের? কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ এবং হল সংসদে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরাসহ প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ব্যর্থতাগুলো লক্ষণীয়, সেগুলো ঘোচানোর জন্যই ডাকসু নির্বাচন প্রয়োজন।”

তিনি আরো বলেন, “আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল, ছাত্রলীগ যেভাবে হল নিয়ন্ত্রণ করা, দখলদারিত্ব কায়েম করা, টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করা এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভিতর ক্ষমতার বলয় তৈরি করত-ঠিক এখনো আমরা এই প্রক্রিয়া দেখছি। আর এই প্রক্রিয়ার যারা এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে, তারাই মূলত ডাকসু নির্বাচনে বাঁধা দিতে চায়।”

এর আগে, ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিতে বিন আমিন মোল্লার নেতৃত্বে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কয়েকজন শিক্ষার্থী।

গত ২৩ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা ও প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমদ ২ জুনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠনের ওয়াদা করলে অনশন ভাঙ্গেন তারা। সে সময় অনশন শেষে ইয়ামিনসহ দুই শিক্ষার্থীকে হাসপাতলে ভর্তি করা হয়েছিল।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ