নিয়ম ভেঙে ভারত ম্যাচ জিতল ১২ জন নিয়ে!
Published: 1st, February 2025 GMT
“আমরা এই সিদ্ধান্তের সাথে একমত নয়”, ম্যাচ শেষে এভাবেই নিজের হতাশা ঝারলেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জস বাটলার।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি, ২০২৫) পুনেতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে ভারত এমন একটি বিতর্কিত কাজ করেছে, যার ফলে বদলে গিয়েছে সিরিজ নির্ধারনি ম্যাচের হিসাব নিকাশ! স্বাগতিকরা শিবম দুবের কনকাশন সাব হিসেবে মাঠে নেমেছিল হর্ষিত রানাকে। সেটাও দুবে ব্যাট হাতে ঝড়ো ৫৩ রানের ইনিংস খেলে ফেলার পরে। এরপর হর্ষিত ৩ উইকেট নিয়ে ধসিয়ে দেয় ইংলিশদের মিডেলঅর্ডার। স্বাগতিক ভারতও জয় পায় ১৫ রানে।
আরো পড়ুন:
তীরে এসে ডুবল ইংল্যান্ডের তরী, ভারতে খোয়াল সিরিজ
ভারতকে জিতিয়ে অনন্য রেকর্ডে তিলক
এখন বলা যায় যে, কনকাশন সাব তো ক্রিকেট নিয়মেরই অংশ। তাহলে ইংলিশ অধিনায়ক কেন এই ব্যাপারটার সঙ্গে একমত পোষণ করছেন না? ব্যাপারটা পরিষ্কার হবে যদি কনকাশন সাবের নিয়ম ঘাঁটা হয়। সেখানে স্পষ্ট বলা আছে যে, কোনো খেলোয়াড় মাথায় আঘাত পেলে ওই খেলোয়াড়ের জায়গায় তার মতোই কাউকে নামাতে পারবে। অর্থাৎ ব্যাটসম্যানের জায়গায় ব্যাটসম্যান, বোলারের জায়গায় বোলার।
বাস্তবতা হচ্ছে দুবে ও রানা একই ধরনের ক্রিকেটার নন। দুবে ব্যাটিং অলরাউন্ডার, যাকে ইদানীং বল হাতে দেখা যায় না বললেই চলে। অন্যদিকে রানা পেসার, যিনি অনায়াসে ঘন্টায় ১৪৫ কিলোমিটার বেগে বল করতে পারেন। ম্যাচ শেষে বাটলার তাই খোঁচাটা দিতে ভুললেন না, “হয় দুবে ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার বলের গতি বাড়িয়েছে নয়তো হর্ষিত তার ব্যাটিংয়ে অনেক উন্নতি করেছে।”
থ্রি-লায়ন্স অধিনায়ক কনকাশন সাবের মত একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছেন না। তবে তিনি হতাশ দুবের বদলি হিসেবে রানা খেলার অনুমতি পাওয়াতে। বাটলার কিছুটা মজার ছলেই বলেন, “হয়তো পরের ম্যাচে টসের সময় আমি ১২ জন নিয়ে খেলার অনুমতি চাইব।”
খোঁচাটা স্পষ্ট। আইপিএলের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটা ফ্র্যাঞ্চাইজি ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার খেলাতে পারে। যেখানে একজনকে দিয়ে ব্যাটিং করিয়ে পরে তাঁর জায়গায় একজন বোলার খেলানো যায়। ভারত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও সেই নিয়ম চালিয়ে দিতে চাইল।
ভারতের ইনিংসের ২০তম ওভারের পঞ্চম বলে দুবের মাথায় বল লাগে। এরপরও খেলা চালিয়ে যান এই বাঁহাতি। এমনকি ইংল্যান্ড ইনিংসের ২ ওভার শেষে রানা জানানো হয় কনকাশন সাব হিসেবে তাকে খেলতে হবে। অভিষিক্ত এই পেসার ৩৩ রান দিয়ে শিকার করেছেন লিয়াম লিভিংস্টোন, জ্যাকব বেথেল ও জেমি ওভারটনের মত গুরুত্বপূর্ন উইকেটগুলো।
ইংল্যান্ডের অধিনায়ক হারের জন্য কনকাসন সাবকে সরাসরি দায়ী না করলেও ব্যাপারটা নিয়ে সন্তুষ্ট নন। বাটলার জানিয়েছেন, ম্যাচ রেফারির কাছে ব্যাখ্যা চাইবেন, “এমনটা খেলার অংশ, আর আমাদের ম্যাচটি জেতা উচিত ছিল, তবে আমরা এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নই। আমাদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ করা হয়নি। ব্যাটিংয়ে নামার সময় আমি ভাবছিলাম, রানা কার জায়গায়? ম্যাচ রেফারিই নাকি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিষয়টি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পেতে আমরা জাভাগাল শ্রীনাথকে (ম্যাচ রেফারি) কিছু প্রশ্ন করব।”
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
২ বছরের ভেতরে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আপত্তি নেই বিএনপির
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের খসড়া পাঠানো হয়েছে। সেই খসড়ায় বলা হয়েছে, দুই বছরের মধ্যে ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। এ বিষয়ে বিএনপির কোনো আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ২১তম দিনের আলোচনার বিরতিতে সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা যেটা পেয়েছি, এটা জুলাই জাতীয় সনদ নামে একটা খসড়া পেয়েছি। সেটা ভূমিকা, বিস্তারিত বিষয়গুলো নেই। এই খসড়ার সঙ্গে আমরা মোটামুটি একমত। কিন্তু খসড়ার কিছু বাক্য, শব্দ ও গঠনপ্রণালি নিয়ে কারও কোনো মতামত আছে কি না, তা জানতে রাজনৈতিক দলগুলোকে খসড়াটি দিয়েছে কমিশন। আমাদের যে সংশোধনী থাকবে, আমরা তা কাল জমা দেব।’
খসড়ায় যে অঙ্গীকারের কথা বলা হয়েছে, সে বিষয়ে বিএনপি একমত বলে জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। তিনি বলেন, ‘খসড়ায় দুই বছরের ভেতরে প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে অঙ্গীকার চাওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে আমরা একমত।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ আইনের মাধ্যমে করতে চাই। এতে আইনি ত্রুটি থাকলে সংশোধন সহজ হবে।’ তিনি বলেন, ‘কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য একটি সক্রিয় নির্বাহী বিভাগ প্রয়োজন। তবে সেই নির্বাহী বিভাগকে চেক অ্যান্ড ব্যালান্সের মধ্যে রাখতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংবিধানে যত বেশি যুক্ত করা হবে, সংশোধন তত বেশি জটিল হয়ে পড়বে। তাই আমরা চাই, আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করা হোক এবং সেই আইনে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন আনা সহজ হবে।’
নারী প্রতিনিধিত্ব বিষয়ে বিএনপির অবস্থান প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রথম ধাপে প্রস্তাব করেছি, আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৫টি আসনে নারীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। পরবর্তী নির্বাচনে তা ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৩০টি হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই, নারীরা সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হোক। কিন্তু সমাজের বাস্তবতা বিবেচনায় আমরা ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে চাই।’
সংস্কার কমিশনের ৭০০–এর বেশি সুপারিশ সম্পর্কে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এর মধ্যে প্রায় ৬৫০টির মতো প্রস্তাবে বিএনপি একমত হয়েছে। বাকিগুলোর বিষয়ে পরামর্শ বা সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘সব প্রস্তাব সনদে আসবে না। তবে যেগুলো মৌলিক, যেমন সংবিধান সংশোধনসংক্রান্ত, সেগুলো অবশ্যই গুরুত্ব পাবে।’