পুরনো রাজনৈতিক বন্দোবস্ত দিয়ে দেশ চলতে পারে না : নুরুল হক নুর
Published: 1st, February 2025 GMT
গনঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ফ্যসিবাদী সরকার গত ১৬ বছরে ধরে ক্ষমতায় থেকেছে। ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষকে বিচার বর্হিভূত ভাবে হত্যা করেছে। প্রায় ৬০০ মানুষকে গুম করেছে।একটি গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে একদলীয় রাষ্ট্রে পরিনত করেছে।
এদেশে একর পর এক ক্ষমতার পালা বদল হয়েছে কিন্তু মানুষের জন আকাঙ্খা আজো পূরণ হয়নি। যারাই ক্ষমতা গিয়েছে তারাই দখলবাজী চাঁদাবাজী জনগনকে জিম্মি করা লুটপাট করা রাষ্ট্র যন্ত্রকে দলীয়করন করা নিজেরদের মতো পরিচালনা করা এটা আমরা গত ৩৩ বছর ধরে দেখেছি।
তিনি জনগনকে উদ্ধেশ্য করে বলেন আসুন এসব ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বাদ দিয়ে নতুন রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় আমরা নতুন করে এ রাষ্ট্রকে পরিচালনা করি। যেখানে কোন ফ্যাসিবাদের ঠাই হবে না।
এদেশের মানুষ বারবার প্রতারিত হয়েছে ধোকা খেয়েছে কিন্তু এ অভ্যুত্থানের পর নতুন করে দেশ বির্নিমান করতে হবে। এদেশের মানুষ নতুন নেতৃত্ব বরন করে নিতে প্রস্তুত। তিনি সকল রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্যে বলেন আওয়ামীলীগ থেকে শিক্ষা নিন।
গত ৬ মাসে বর্তমান সরকার অনেকাংশেই আমাদের আকাঙ্খা পূরণ করতে পারেনি। নানা শক্তির উত্থান ও অস্থিরতার কারণে হয়তো সরকার কিছূটা প্রতিবন্ধকতায় পরেছে আমরা সরকারকে কিছূটা সময় দিতে চাই। তবে সরকারকে বলবো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, দ্রব্যমুল্যের উর্ধগতি, বিমান ভাড়া বৃদ্ধি এগুলো নিয়ন্ত্রনে ব্যবস্থা নিন।
শনিবার বিকেলে সোনারগাঁও পৌরসভা মাঠে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে গন আকাঙ্খার রাজনীতি শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান তিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে যে বিজয় আমরা অর্জন করেছি তার অংশিদার সবাই । অভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনৈতিক সমঝোতা প্রয়োজন। নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রয়োজন। পুরনো রাজনৈতিক বন্দোবস্ত দিয়ে দেশ কার্যকর ভাবে চলতে পারে না।
তিনি সোনারগাঁবাসীকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন সোনারগাঁয়ের মেঘনা নদীর দুই তীরে গড়ে ওঠা অসংখ্য শিল্পকারখানা রয়েছে এতদিন সেগুলোতে দখলবাজী চাদাবাজি করেছে আওয়ামীলীগ এখন আওয়ামীলীগ দেশে নাই কাপড় চোপর রেখে পালাইছে তাহলে এখন সে চাদাবাজী দখলবাজী মাফিয়াগিরি করছে কারা? আপনারা এসব চাদাবাজ সন্ত্রাসীদেরকে ভোট দেবেন না?
আওয়ামীলীগ নাকি আন্দোলন করবে ফেব্রুয়ারিতে হরতাল করবে। রাস্তায় নেমে দেখেন আপনাদের কি অবস্থা হয়। এখন মাস্ক পরে মাঙ্কি টুপি পরে দুই তিনজন মিছিল করে। বলেছিলাম গুলিস্তানে মুজিবকোট কেনার লোক থাকবে না। তাই হয়েছে।
তিনি বলেন, আশা করি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হবে। তাই জুলাই অভ্যুত্থানের যে ঐক্য সেটা ধরে রাখতে হবে না হলে আমাদের অভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে।
সভায় সোনারগাঁ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ওয়াহিদুর রহমান মিল্কীর সভপতিত্বে এবং সোনারগাঁ শাখার সদস্য সচিব একেএম সাইদুজ্জামান ও সোনারগাঁ পৌরসভা গণ অধিকার পরিষদের নেতা উলফাত কবির মাস্টারের সঞ্চালনায়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, গনঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপাত্র ও সিনিয়র সহ সভাপতি ফারুক হাসান, সহ সাধারণ সম্পাদক কাউসার আলী, গনঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক আনিসুর রহমান মুন্না, নারায়ণগঞ্জ জেলা গণ অধিকার পরিষদের জেলা মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আরিফ হোসেন প্রমূখ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: সরক র র জন ত ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ র জন ত ক ক ষমত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জেলা কৃষকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে একটি পক্ষের ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আলম মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক জুয়েল আরমান, ফজলু মেম্বার, মনির মল্লিক, শাহাদাত হোসেন, ওবায়দুর রহমান, শাহ আল বেপারী, সেলিম হোসেন দিপু।
সংবাদ সম্মেলনে শাহীন মিয়া বলেন, কোন চাঁদাবাজ, দখলবাজ ও স্বৈরাচারের দোসর এদের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র যেকোনো অঙ্গ সংগঠনের পদে থাকতে পারে না। নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি হিসেবে আমার সংগঠনে যারা চাঁদাবাজ, দখলবাজ স্বৈরাচারের দোসর আমি তাদেরকে বহিষ্কার করেছি।
আওয়ামীলীগের সাথে শাহীনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনাদের ব্যাপারে পাল্টা তিনি বলেন, রূপগঞ্জ থানার সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলামকে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর, দলীয় নেতাকর্মীদের নির্যাতন ও সাংগঠনিক দূর্বলতার কারণে তাকে ৩০ নভেম্বর ২০২৩ সালে সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এছাড়াও বিএনপির অসহযোগ আন্দোলনে নজরুলের কোন প্রকার সম্পৃক্ততা ছিল না। সে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম হত্যা মামলার আসামি রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সালাউদ্দিনের যোগসাজসে রূপগঞ্জ ইউনিয়নের একাধিক মৌজার আবাদী জমিতে বালি ভরাট করে সাধারণ কৃষকের দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি করেছিল।
এছাড়াও অসহায় ও সাধারন মানুষের বসতবাড়ি সহ জবরদখল করে নেয় তারা। নজরুল দোসরদের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের উপর বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় নির্যাতন করেছিল। এভাবে বিগত ১৭ বছরে স্বৈরাচার সরকারের আস্থাভাজন হয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন এই নজরুল। সে হলো মৌসুমী পাখি।
তিনি বলেন, ১৭ টি বছর জুলুম নির্যাতন সহ্য করে এই নারায়ণগঞ্জে কৃষক দলকে হাতের মুঠোয় রেখেছি আজ সেই কৃষক দলের ভাবমূতি ক্ষুন্ন করতে এই নজরুল স্বৈরাচারের সাথে হাত মিলিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনের মানহানি করেছে।
আমি এরই মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তার বিরুদ্ধে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে থেকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। বিষয়টি আমি আমার হাইকমান্ডকে অবগত করেছি।
তিনি আরও বলেন, রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সার্জন মোমেনকে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও দলীয় শৃংখল বঙ্গের দায়ে ১০ই এপ্রিল সভাপতি পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। সে বিগত সতেরো বছর নেতাকর্মীদের নির্যাতন করে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছে। ৫ ই আগস্টের পর ৪০ বিঘা জমির উপর মাছের প্রজেক্ট দখল করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন মোমেন।
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সময় সে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন তার নিজের জন্য। এখনো সে এলাকায় সাধারণ মানুষকে মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করছে এর যথেষ্ট প্রমাণ আমার কাছে এসেছে এবং অনেক সাধারণ মানুষ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। যে সমস্ত মানুষ কোন দল করে না দল বুঝেনা। এ সমস্ত অভিযোগের কারণে তাকে তার পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে নজরুলসহ কৃষকদলের বেশ কয়েকজন নেতা সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় শাহীনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের লোকজনকে টাকার বিনিময়ে পুনর্বাসনসহ বেশ কিছু অভিযোগ আনেন তারা।