গোপালগঞ্জে জেলা শহরের প্রধান সড়ক প্রশস্তকরণ কাজে স্কুলের গেট ও দেয়াল ভেঙে ফেলার প্রতিবাদে প্রায় চার ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। পরে প্রশাসনের আশ্বাসের ভিত্তিতে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। 

শহরের গেটপাড়া এলাকায় স্থাপিত অ্যাডভেন্টিস্ট ইন্টারন্যাশনাল মিশনারিজ স্কুলের রাস্তার পাশের দেয়াল জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সওজ কর্তৃপক্ষ গতকাল শনিবার সকালে ভেঙে দেয়। জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল মুন্সীর নেতৃত্বে এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়।

এদিকে স্কুলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রার্থনা চলাকালে কোনো সময় না দিয়ে, তাদেরকে না জানিয়েই দেয়াল ভেঙে ফেলা হয়েছে। এতে নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছে শিক্ষার্থীরা। 

জানা গেছে, টেকেরহাট থেকে ঘোনাপাড়া পর্যন্ত ৪৪ কিলোমিটার সড়কের প্রশস্তকরণের কাজ চলছে। শনিবার সকালে শহরের গেটপাড়া এলাকার অ্যাডভেন্টিজ ইন্টারন্যাশনাল মিশনারিজ স্কুলের গেট ও রাস্তার পাশের দেয়াল জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল মুন্সীর নেতৃত্বে সড়ক ও জনপদ বিভাগ ভেঙে দেয়। ফলে এর প্রতিবাদে সকাল ১০টার দিকে স্কুলের সামনে সড়কের ওপর বসে অবরোধ করে প্রতিবাদ জানায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। এ সময় ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

 

পরে অ্যাডভেন্টিজ ইন্টারন্যাশনাল মিশনারিজ স্কুলের সাথে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো.

গোলাম কবিরের নেতৃত্বে আলোচনায় বসে প্রশাসন। জেলা প্রশাসকের সাথে আলোচনার পর সড়ক প্রস্ততকরণের কাজ শুরু করা হবে এমন আশ্বাসের ভিত্তিতে বেলা ২টার দিকে চার ঘণ্টা পর সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা। আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। 

এ ঘটনায় ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক লবনী মারান্ডি বলেন, “উচ্ছেদ অভিযানের কোনো নোটিশ আমরা পাইনি। আমরা অনুরোধ করেছিলাম দেয়ালটি না ভাঙার জন্য। কিন্তু তারা আমাদের কোনো অনুরোধ না শুনেই দেয়ালটি ভেঙে দেয়।” 

অ্যাডভেন্টিজ ইন্টারন্যাশনাল মিশনারিজ গীর্জার ফাদার পাস্টার জোব মিন্টু হালদার বলেন, “সকাল ৯টার দিকে হঠাৎ করেই একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে স্কুলটির গেট ভেঙে দেয় সড়ক ও জনপদ বিভাগ। এ সময় না ভাঙার অনুরোধ জানিয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলার জন্য ১ ঘণ্টা সময় চাওয়া হয়। কিন্তু তারা সময় না দিয়েই ভেঙে ফেলে।”

অ্যাডভেন্টিজ ইন্টারন্যাশনাল মিশনারিজের পুরোহিত দানিয়েল ফুলিয়া বলেন, “আমাদের না জানিয়ে দেয়াল ভেঙে ফেলায় শিক্ষার্থীসহ পুরো স্কুলটি অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। দেয়াল ভাঙার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে। পরে প্রশাসনে সাথে আলোচনা হয়। সেখানে আমাদের সময় দেওয়া হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেয়।” 

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক গোলাম কবির বলেন, “শহরের সড়কটি প্রশস্তকরণ করা হচ্ছে। তারই অংশ হিসাবে জমি অধিগ্রহণের জন্য ৮ ধারার নোটিশ দেওয়া হয়েছিলো। সেই নোটিশের প্রেক্ষিতে সড়ক ও জনপথ বিভাগকে যে অংশ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিলো সেখান থেকে ভাঙা হচ্ছিলো। তবে তারা মনে করেছিলো অনেক বেশি জায়গা নেওয়া হচ্ছে। পরে বিষয়টি নিয়ে অ্যাডভেন্টিজ ইন্টারন্যাশনাল মিশনারিজ কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা হয়েছে। তারাও রাস্তা সম্প্রসারণ চায়। ইতিমধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে।”

ঢাকা/বাদল/ইমন

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ধ কর অবর ধ শহর র র সড়ক

এছাড়াও পড়ুন:

যুদ্ধবিরতি নিয়ে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন জেলেনস্কি ও মার্কিন প্রতিনিধি

যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য জার্মানিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বসতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রতিনিধি দল। সোমবার এই বৈঠক হবে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ এবং জামাতা জ্যারেড কুশনার ইউক্রেনীয় ও ইউরোপীয়দের সাথে আলোচনার জন্য জার্মানি সফর করছেন।

মার্কিন শান্তি প্রস্তাব নিয়ে ইউক্রেন ও রাশিয়ার সাথে আলোচনার নেতৃত্বদানকারী উইটকফকে পাঠানোর সিদ্ধান্তটি একটি সংকেত বলে মনে হচ্ছে। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ওয়াশিংটন অগ্রগতির সম্ভাবনা দেখছে। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউস জানিয়েছিল, ট্রাম্প যদি মনে করেন যে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে তবেই কেবল একজন কর্মকর্তাকে আলোচনায় পাঠাবেন।

 বৈঠক সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে জার্মান সরকারের একটি সূত্র বলেছেন, “ইউক্রেনে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা সপ্তাহান্তে বার্লিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেনের পররাষ্ট্রনীতি উপদেষ্টাদের মধ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।”

সোমবার জার্মান চ্যান্সেলর মের্জ বার্লিনে জেলেনস্কি এবং ইউরোপীয় নেতাদের একটি শীর্ষ সম্মেলনের আতিথেয়তা করছেন, যা ইউরোপ জুড়ে মিত্রদের কাছ থেকে ইউক্রেনীয় নেতার প্রতি সমর্থনের ধারাবাহিক প্রকাশ্য প্রদর্শনের সর্বশেষ ঘটনা। কারণ প্রাথমিকভাবে মস্কোর প্রধান দাবিগুলিকে সমর্থন করে এমন একটি শান্তি পরিকল্পনায় স্বাক্ষর করার জন্য কিয়েভ ওয়াশিংটনের চাপের মুখে রয়েছে।

ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মার্কিন প্রস্তাবগুলোকে পরিমার্জন করার জন্য কাজ করছে। আগের প্রস্তাবে কিয়েভকে আরো ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার, ন্যাটোতে যোগদানের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করার এবং তার সশস্ত্র বাহিনীর সীমাবদ্ধতা মেনে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল।

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ