‘খোঁজ দ্য সার্চ’ সিনেমার মাধ্যমে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখেন চিত্রনায়িকা ইয়ামিন হক ববি। সে হিসাবে শোবিজে তার পথচলা দেড় দশকের বেশি। এ পথচলা মোটেই সহজ ছিলো না। নানা চড়াই–উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তাকে। অভিনয়ের পাশাপাশি আর্থিক নিরাপত্তার জন্য শিল্পীসত্তার বাইরে একজন শিল্পীর বহু মাধ্যমে কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে বলেন মনে করেন এই নায়িকা।
ববি হক সমকালকে বলেন, ‘একজন শিল্পী সবসময়ই শিল্পী। তবে এই শিল্পীসত্তার বাইরে তাকে বহু মাধ্যমে কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। একটা মানুষের অনেকগুলো কোয়ালিটি থাকতে পারে। যদি কেউ ব্যবসা করে কিংবা অন্য কোনো পেশার সঙ্গে জড়িত হয় তাতে সমস্যার কিছু নেই। এতে একজন শিল্পীর অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বাড়ে। তবে ফোকাসটা অভিনয়ের ওপরই হওয়া উচিৎ। আমি নিজেও ব্যবসা করি। কিন্তু আমার মূল ফোকস অভিনয়। ফলে অভিনয়ে কাজ না থাকলেও সমস্যা হওয়ার কথা না।’
গেল বছর ‘ময়ূরাক্ষী’ সিনেমা মুক্তির পর নির্মাতার সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে যান ববি। বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা কম হয়নি। এমন ঘটনা যে শুধু তার ক্ষেত্রেই ঘটেছে বা ঘটছে তা নয়। পারিশ্রমিকসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নির্মাতা-শিল্পীর মধ্যে বিবাদ হর-হামেশাই চোখে পড়ে।
ববি হক বলেন, ‘খারাপ অভিজ্ঞতা আমি বেশি মনে রাখি না। ভালো অভিজ্ঞতাগুলো সবার সঙ্গে শেয়ার করি। আমাদের মধ্যে ঝামেলা নিয়ে কিছু বলার নেই। কারণ, নিজের পরিবারেও এমন ঘটনা অহরহ ঘটে। তবে একটা কথা বলতে চাই, আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে প্রফেশনালিজমের বড়ই অভাব। কাজের ক্ষেত্রে প্রফেশনাল হলে আমাদের মধ্যে এসব ভুল বোঝাবোঝি আর হবে না।’
দেড় দশকের ক্যারিয়ারে ববি হক উপহার দিয়েছেন ‘দেহরক্ষী’, ‘রাজত্ব’, ‘অ্যাকশন জেসমিন’, ‘বিজলী’, ‘বেপরোয়া’, ‘নোলক’এর মত সিনেমা। বর্তমানে ববির হাতে রয়েছে বেশ কয়েকটি সিনেমা।
নতুন কাজ নিয়ে অভিনেত্রী বলেন, ‘বেশ কিছুদিন আগেই ‘বেইমান’ সিনেমার শুটিং করেছি। কয়েকদিনের মধ্যে কে এ নিলয় পরিচালিত ‘বউ’ সিনেমা শুটিং শুরু হবে। এরপর বদিউল আলম খোকনের পরিচালনায় ‘তছনছ’ সিনেমার শুটিং শুরু করবো। দেশের বাইরে আরও একটি সিনেমার কথা হচ্ছে। বলা চলে কাজের মধ্যেই আছি। অভিনয় নিয়েই থাকতে চাই।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করছে চীন
মাকিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে চুক্তি বাতিলকারী দেশগুলোর জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা নিয়ে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বিশ্বজুড়ে কূটনৈতিক প্রচারণা চালাচ্ছেন। আর তার সেই বার্তাটি হচ্ছে- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি দাঙ্গাবাজ দেশ, যাকে বিশ্বাস করা যায় না।
শুল্ক স্থগিতাদেশের সময় চীন ছাড়া সবদেশকে বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করার জন্য ট্রাম্প যে ৯০ দিনের সময়সীমা দিয়েছেন, সেই সময়ের মধ্যে চীনা কর্মকর্তারা বিদেশী সরকারগুলোকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ঠেলে দেওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, একবার এই চুক্তিগুলো কার্যকর হয়ে গেলে, তিনি চান মার্কিন মিত্ররা ‘একটি দল হিসেবে চীনের সাথে যোগাযোগ করুক’, যাতে মার্কিন পক্ষ আলোচনায় আরো বেশি সুবিধা পায়।
দক্ষিণ কোরিয়া থেকে শুরু করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পর্যন্ত মার্কিন মিত্ররা নিরাপত্তার জন্য ওয়াশিংটনের উপর নির্ভর করে এবং অর্থনৈতিকভাবে ট্রাম্পকে সন্তুষ্ট করার জন্য তাদের উৎসাহ রয়েছে। অবশ্য চীন আরো সমান তালে শুল্ক যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ট্রাম্পের শেষ বাণিজ্য যুদ্ধের পর থেকে বেইজিং মার্কিন রপ্তানি থেকে তার অর্থনীতিকে মুক্ত করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। দেশটিতে নিবেদিতপ্রাণ এবং সক্রিয় সৈন্য সংখ্যার বিচারে বিশ্বের বৃহত্তম সামরিক বাহিনী রয়েছে।
শি ট্রাম্পের সাথে ফোনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন এবং তার সরকার ‘পাল্টাপাল্টি’ শুল্ক বাতিলের দাবি জানাচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র জোর দিয়ে বলছে যে, অন্য পক্ষ, অর্থাৎ চীনকে উত্তেজনা কমানোর প্রথম পদক্ষেপ নিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে, চীন নিজেকে নিয়মভিত্তিক ব্যবস্থার একজন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে উপস্থাপন করছে এবং অন্যান্য দেশকে ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে বেইজিংয়ের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছে।
সাংহাইয়ের ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর আমেরিকান স্টাডিজের পরিচালক উ জিনবো বলেন, “এটি কেবল চীন-মার্কিন সম্পর্কে নয়। এটি আসলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে।”
গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাজনীতিবিদদের সাথে দেখা করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেওয়া উ জানান, অন্যান্য সরকারেরও বুঝতে হবে বেইজিংয়ের প্রচেষ্টা তাদের উপকার করেছে।
তিনি বলেন, “যদি চীন আমেরিকার বিরুদ্ধে না দাঁড়াত, তাহলে আমেরিকা কীভাবে তাদের ৯০ দিনের বিরতি দিত। চীনের উপর শুল্ক আরোপের ফলে ট্রাম্প অন্যান্য দেশের উপর শুল্ক আরোপ বন্ধ করার জন্য আবরণ পেয়েছেন। তাদের এটা উপলব্ধি করা উচিত।”
চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই সোমবার ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত ব্রিকস ব্লকের দেশগুলোকে ট্রাম্পের দাবি প্রতিহত করার জন্য বেইজিংয়ের সাথে যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, “আপনি যদি নীরব থাকেন, আপস করেন এবং পিছু হটতে চান, তাহলে এটি কেবল বুলিকে আরো আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে সাহায্য করবে।”
তার এই বক্তব্যের কয়েক ঘন্টা পরে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইংরেজি সাবটাইটেলসহ একটি ভিডিওতে ওয়াশিংটনকে ‘সাম্রাজ্যবাদী’ শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, গত শতাব্দীতে জাপানি রপ্তানি সীমিত করার মার্কিন পদক্ষেপ তোশিবার মতো কোম্পানিগুলোকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
ওয়াং ই বলেছেন, “একজন ধর্ষকের কাছে মাথা নত করা ঠিক তৃষ্ণা নিবারণের জন্য বিষ পান করার মতো, এটি কেবল সংকটকে আরো গভীর করে তোলে। চীন পিছু হটবে না যাতে দুর্বলদের কণ্ঠস্বর শোনা যায়।”
ঢাকা/শাহেদ