চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপ পর্বেই মুখোমুখি হচ্ছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান। এই ম্যাচ ঘিরে সমর্থকদের উন্মাদনা ছিল তুঙ্গে। ম্যাচটি কোথায় অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়ে দীর্ঘদিন আলোচনা চললেও শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে—হাইব্রিড মডেলে ম্যাচটি হবে দুবাইয়ে।  

আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হবে ভারত-পাকিস্তানের মহারণ। এই হাইভোল্টেজ লড়াইয়ের টিকিট বিক্রি শুরুর মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যেই শেষ হয়ে গেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, শুধু ভারত-পাকিস্তান ম্যাচই নয়, দুবাইয়ে অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ-ভারতসহ চারটি ম্যাচের সব টিকিট কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিক্রি হয়ে গেছে।  

আইসিসির সাম্প্রতিক টুর্নামেন্টগুলোতে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের টিকিট মুহূর্তেই শেষ হয়ে যাওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ হয় না, ফলে কেবল আইসিসির ইভেন্টেই তাদের মুখোমুখি হতে দেখা যায়। এর ফলে এই ম্যাচের প্রতি আগ্রহ আরও বেড়েছে।  

টিকিট বিক্রি শুরু হয় ৩ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায়। অনলাইন ও বুথের দুই মাধ্যমেই টিকিট পাওয়া যাচ্ছিল। তবে চাহিদার তীব্রতার কারণে অনেক সমর্থকই টিকিট পাননি। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা আইএনএসকে এক সমর্থক বলেন, ‘লাইন যে লম্বা হবে, তা বুঝতে পারছিলাম। কিন্তু টিকিট শেষ হয়ে যাবে এত দ্রুত, তা কল্পনাও করিনি! লাইনে দাঁড়িয়ে যখন নিজের জায়গা নিশ্চিত করলাম, তখন দেখি মাত্র দুটি ক্যাটাগরির টিকিট বাকি, যা আমার বাজেটের বাইরে।’

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ