পশ্চিমবঙ্গে আম্বানিসহ বড় শিল্পপতিদের সাড়ে চার লাখ কোটি রুপি বিনিয়োগের প্রস্তাব
Published: 6th, February 2025 GMT
ভারতের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতিরা পশ্চিমবঙ্গে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছেন। সেই সঙ্গে বিদেশি বিভিন্ন বড় কোম্পানিও রাজ্যটিতে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে। সব মিলিয়ে ৪ লাখ ৪০ হাজার ৫৯৫ কোটি রুপির বিনিয়োগ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা বাংলাদেশের ৬ লাখ কোটি টাকার মতো। এ ব্যাপারে দুই দিনে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে ২১২টি।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে কলকাতায় অষ্টম বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান। গতকাল বুধবার কলকাতার উপশহর রাজারহাটের নিউটাউনের বিশ্ববঙ্গ কনভেনশন সেন্টার হলে দুই দিনের এই সম্মেলন শুরু হয়।
এবারের সম্মেলন বিশ্বের নবম শীর্ষ এবং ভারত ও এশিয়ার শীর্ষ বিলিয়নিয়ার বা শতকোটিপতি ব্যবসায়ী মুকেশ আম্বানি ৫০ হাজার কোটি রুপির বিনিয়োগ প্রস্তাব দেন, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা। ভারতের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী রিলায়েন্স গ্রুপের কর্ণধার জানান, তাঁরা এই রাজ্যে ডেটা সেন্টার, খুচরা ব্যবসা, কেব্ল ল্যান্ডিং স্টেশন ও সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পে নতুন করে ৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চান।
শিল্পপ্রতিষ্ঠান জেএসডব্লিউ বিদ্যুৎ খাত ও দুর্গাপুর বিমানবন্দরের উন্নয়ন প্রকল্পে ১৬ হাজার কোটি রুপি বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে। ভারতের প্রথম সারির আরেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান অম্বুজা নেওটিয়া গোষ্ঠী এই রাজ্যের হেলথ কেয়ার, হসপিটালিটি, পর্যটন ও রিয়েল স্টেট প্রকল্পে ১৫ হাজার কোটি রুপির বিনিয়োগের প্রস্তাব রেখেছে। আরপি-এসজি এনার্জি স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে ১০ হাজার কোটি রুপি বিনিয়োগের পরিকল্পনা তুলে ধরেছে। এ ছাড়া মাঝারি আকারের বেশ কয়েকটি শিল্পগোষ্ঠীও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ ভারতের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে রিলায়েন্স শিল্পগোষ্ঠীর কর্ণধার মুকেশ আম্বানি ছাড়াও আইটিসি শিল্পগোষ্ঠীর চেয়ারম্যান সঞ্জীব পুরী, শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েঙ্কা, অম্বুজা নেওটিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান হর্ষবর্ধন নেওটিয়া, জেএসডব্লিউ গ্রুপের চেয়ারম্যান সজ্জন জিন্দাল, শিল্পপতি হর্ষবর্ধন আগরওয়াল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী, ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেন উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে ২৫ জন বিদেশি রাষ্ট্রদূতসহ ৪০টি দেশের দুই শতাধিক ব্যবসায়ী প্রতিনিধি যোগ দিয়েছেন।
কলকাতায় অষ্টম বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন রিলায়েন্স গ্রুপের কর্ণধার মুকেশ আম্পানি। গতকাল বুধবার কলকাতার রাজারহাটের নিউটাউনের বিশ্ব বঙ্গ কনভেনশন সেন্টারে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।