বগুড়ার ক্রীড়াঙ্গনের আঁতুড়ঘর খ্যাত টাউন ক্লাবটি ভেঙে ফেলেছেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। গত বৃহস্পতিবার রাতে বগুড়া শহরের সাত মাথায় অবস্থিত ক্লাবটি ভেঙে ফেলা হয়।

টাউন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শামীম কামাল বলেন, ক্লাবটি কার্যত অরাজনৈতিক সংগঠন। জেলা ক্রীড়া সংস্থায় নিবন্ধিত এই ক্লাবে ফুটবল, ক্রিকেট ও কাবাডির আলাদা দল আছে। ১৮৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত টাউন ক্লাবের গৌরবের নানা অর্জন আছে। বগুড়ার ক্রীড়াঙ্গনের আঁতুড়ঘর এই টাউন ক্লাব।

স্থানীয় লোকজন বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা প্রথমে সাতমাথা টেম্পল সড়কে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এ সময় শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালও ভাঙচুর করা হয়। পরে শহরের সাতমাথায় জেলা জাসদের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। রাত পৌনে নয়টার দিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা স্লোগান দিয়ে কবি কাজী নজরুল ইসলাম সড়কে জেলা জাতীয় পার্টির কার্যালয় ভাঙচুর করেন। এরপর রাত পৌনে ১০টার দিকে এক্সকাভেটর দিয়ে বগুড়া টাউন ক্লাব ভবনও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা.

.., ঢাকা...’ বলে স্লোগান দেন ছাত্র-জনতা।

বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, টাউন ক্লাব বগুড়ার ক্রীড়াঙ্গনে প্রথম ক্লাব। এই ক্লাব অনেকবার কুচবিহারের মহারাজা টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়ে স্বর্ণের শিল জিতেছে। কলকাতার মাঠকাঁপানো মাহবুবার রহমানের (বড় কালু) খেলার হাতেখড়ি এই টাউন ক্লাব থেকেই। পরে তিনি কলকাতার ওরিয়ন ক্লাবের হয়ে প্রথম বিভাগ ফুটবল লিগেও খেলেন। এ ছাড়া টাউন ক্লাবের হয়ে খেলেছেন আফজাল হোসেন, আজগর হোসেন, অমলেষ সেন, ফজলুলসহ জাতীয় পর্যায়ের অনেক খেলোয়াড়। এটা শুধু ভেঙে ফেলা হয়নি, বগুড়ার ক্রীড়াঙ্গনের মানুষের বুকে বুলডোজার চালিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

অবিভক্ত ভারতবর্ষে কুচবিহার মহারাজা কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে পাঁচ দফা চ্যাম্পিয়ন হয়ে স্বর্ণের শিল জিতেছে বগুড়া টাউন ক্লাব। রংপুরে অনুষ্ঠিত গৌর গোবিন্দ মহারাজা কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট এবং সৈয়দপুর রেলওয়ে কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টেও একাধিকবার শিল জেতার গৌরব এই ক্রীড়া সংগঠনের।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ক ষ ব ধ ছ ত র জনত ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

ডাকসুর বিবৃতি: বিএনপি তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে

জুলাই সনদে সই করলেও বিএনপি ধারাবাহিকভাবে সংস্কার কার্যকর করার বিরোধিতা করে তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে, এমন বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। রোববার বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই বিপ্লব ছিল বৈষম্য, অবিচার ও ফ্যাসিবাদী শাসনকাঠামোর বিরুদ্ধে এ দেশের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার সম্মিলিত বিপ্লব। শুধু সরকার পরিবর্তন নয়, বরং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার, ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ ও একটি বৈষম্যহীন-ন্যায়ভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষা ছিল বিপ্লবের মূল ভিত্তি। নতুন প্রজন্ম চেয়েছিল এমন একটি বাংলাদেশ, যেখানে কোনো প্রকার বৈষম্য ও রাজনৈতিক একচেটিয়া কর্তৃত্বের জায়গা থাকবে না। কিন্তু দুঃখজনকভাবে জুলাই সনদে সই করলেও বিএনপি ধারাবাহিকভাবে সংস্কার কার্যকর করার বিরোধিতা করে তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে।

ডাকসুর বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিশেষত বিএনপি এমন সব মৌলিক সংস্কারের বিরোধিতা করেছে, যা সরাসরি ছাত্র-জনতার স্বপ্নের সঙ্গে জড়িত। পিএসসি, দুদক, ন্যায়পাল ও মহাহিসাব নিরীক্ষকের মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ ও দলীয় প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নিয়োগ নিশ্চিত করার সংস্কার প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তারা ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায়। কোনো রাজনৈতিক দলের বিরোধিতা বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রভাব রাষ্ট্রগঠনমূলক সংস্কারের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে ছাত্র-জনতা সেই বাধা অতিক্রমে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নেবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ