ইউএসএআইডি কর্মীদের ছুটিতে পাঠাতে ট্রাম্পের পরিকল্পনা আদালতে স্থগিত
Published: 8th, February 2025 GMT
আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মার্কিন সংস্থা ইউএসএআইডির দুই হাজার ২০০ কর্মীকে সবেতন ছুটিতে পাঠাতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যে পরিকল্পনা, তা কার্যকর হওয়ার কয়েকঘণ্টা আগেই তা আটকে দিয়েছেন এক বিচারক।
শুক্রবার স্থানীয় সময় মধ্যরাত থেকে হাজারো কর্মীকে ছুটিকে পাঠানোর এ পরিকল্পনা আদালতে চ্যালেঞ্জ করেছিল দুটি ইউনিয়ন; তার শুনানিতে বিচারক কার্ল নিকোলস ট্রাম্পের পরিকল্পনা কার্যকরে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। আদালতের এই আদেশ আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
অন্যদেশে উন্নয়নকাজে মার্কিন সরকারের প্রধান শাখা ইউএসএআইডির কর্মীসংখ্যা প্রায় ১০ হাজার, এর মধ্যে দুই তৃতীয়াংশই কাজ করে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে।
আরো পড়ুন:
বাইডেনের নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিল করেছেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রে আবারো বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ১০
গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের সব বিদেশি সহায়তা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন। এরপর মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশ্বজুড়ে ইউএসএআইডির প্রকল্পগুলো স্থগিত করার নির্দেশ দেয়। সংস্থাটির কম্পিউটার সিস্টেমও বন্ধ করে দেয়া হয়। এছাড়া কর্মীদের আকস্মিক ছাঁটাই করা বা ছুটিতে রাখা হয়েছে।
ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, আপাতত ৬১১ কর্মী সংস্থাটিতে কাজ করবেন। এর বাইরে অন্যদের চাকরি থাকবে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।
বিশ্বব্যাপী মানবিক সহায়তার সবচেয়ে বড় একক প্রদানকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। ইউএসএআইডির বার্ষিক বাজেট প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার, যা মোট মার্কিন সরকারি বার্ষিক ব্যয়ের শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ- ৬.
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ট্রাম্প প্রশাসন সরকারি ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে সরকারের যেসব সংস্থাকে টার্গেট করেছে, ইউএসএআইডি তার অন্যতম। এই ব্যয় কমানোর জন্য যারা কাজ করছে, সেই ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সির (ডিওজিই) নেতৃত্ব দিচ্ছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক।
শুক্রবার বিচারক নিকোলসের আদেশ এসেছে ইউএসএআইডির কর্মীদের প্রতিনিধিত্ব করা দুটি ইউনিয়ন আমেরিকান ফরেন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ও আমেরিকান ফেডারেশন অব গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের এক জরুরি আবেদনের প্রেক্ষিতে।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে নিয়োগ পাওয়া বিচারক নিকোলস শুক্রবার রিপাবলিকান প্রশাসনের পরিকল্পনায় সাময়িক স্থগিতাদেশ দিয়ে বলেন, আদেশের লিখিত রূপ পরে মিলবে, সেখানে বিস্তারিত থাকবে।
যদিও এই দুই হাজার ২০০-র বাইরেও ইউএসএআইডির আরও প্রায় ৫০০ কর্মী এখনই ছুটিতে আছেন।
মামলায় অনুদান ও চুক্তি পুনরায় চালু এবং ইউএসএআইডি ভবন পুনরায় খুলে দেয়ারও আবেদন জানানো হয়েছিল, কিন্তু এসব বিষয়ে বিচারকের কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউএসএআইড র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা
আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।
শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।
অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’
স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।
ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’
আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।