আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মার্কিন সংস্থা ইউএসএআইডির দুই হাজার ২০০ কর্মীকে সবেতন ছুটিতে পাঠাতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যে পরিকল্পনা, তা কার্যকর হওয়ার কয়েকঘণ্টা আগেই তা আটকে দিয়েছেন এক বিচারক।

শুক্রবার স্থানীয় সময় মধ্যরাত থেকে হাজারো কর্মীকে ছুটিকে পাঠানোর এ পরিকল্পনা আদালতে চ্যালেঞ্জ করেছিল দুটি ইউনিয়ন; তার শুনানিতে বিচারক কার্ল নিকোলস ট্রাম্পের পরিকল্পনা কার্যকরে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। আদালতের এই আদেশ আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

অন্যদেশে উন্নয়নকাজে মার্কিন সরকারের প্রধান শাখা ইউএসএআইডির কর্মীসংখ্যা প্রায় ১০ হাজার, এর মধ্যে দুই তৃতীয়াংশই কাজ করে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে।

আরো পড়ুন:

বাইডেনের নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিল করেছেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রে আবারো বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ১০

গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের সব বিদেশি সহায়তা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছেন। এরপর মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশ্বজুড়ে ইউএসএআইডির প্রকল্পগুলো স্থগিত করার নির্দেশ দেয়। সংস্থাটির কম্পিউটার সিস্টেমও বন্ধ করে দেয়া হয়। এছাড়া কর্মীদের আকস্মিক ছাঁটাই করা বা ছুটিতে রাখা হয়েছে।

ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, আপাতত ৬১১ কর্মী সংস্থাটিতে কাজ করবেন। এর বাইরে অন্যদের চাকরি থাকবে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।

বিশ্বব্যাপী মানবিক সহায়তার সবচেয়ে বড় একক প্রদানকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। ইউএসএআইডির বার্ষিক বাজেট প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার, যা মোট মার্কিন সরকারি বার্ষিক ব্যয়ের শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ- ৬.

৭৫ ট্রিলিয়ন ডলার।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ট্রাম্প প্রশাসন সরকারি ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে সরকারের যেসব সংস্থাকে টার্গেট করেছে, ইউএসএআইডি তার অন্যতম। এই ব্যয় কমানোর জন্য যারা কাজ করছে, সেই ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সির (ডিওজিই) নেতৃত্ব দিচ্ছেন ধনকুবের ইলন মাস্ক।

শুক্রবার বিচারক নিকোলসের আদেশ এসেছে ইউএসএআইডির কর্মীদের প্রতিনিধিত্ব করা দুটি ইউনিয়ন আমেরিকান ফরেন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ও আমেরিকান ফেডারেশন অব গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের এক জরুরি আবেদনের প্রেক্ষিতে।

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে নিয়োগ পাওয়া বিচারক নিকোলস শুক্রবার রিপাবলিকান প্রশাসনের পরিকল্পনায় সাময়িক স্থগিতাদেশ দিয়ে বলেন, আদেশের লিখিত রূপ পরে মিলবে, সেখানে বিস্তারিত থাকবে।

যদিও এই দুই হাজার ২০০-র বাইরেও ইউএসএআইডির আরও প্রায় ৫০০ কর্মী এখনই ছুটিতে আছেন।

মামলায় অনুদান ও চুক্তি পুনরায় চালু এবং ইউএসএআইডি ভবন পুনরায় খুলে দেয়ারও আবেদন জানানো হয়েছিল, কিন্তু এসব বিষয়ে বিচারকের কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।

ঢাকা/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউএসএআইড র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে ইরানের নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সোমবার সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

অন্যদিকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে, ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ