মহাজ্ঞানী দেশি এবার দাঁড়িয়েছে। প্রেগনেন্ট বৌ নিয়ে তাকে একটু ঢিমা তালে চলতে হবে- এতক্ষণে যেন খবর হয়েছে তার! তবে আমার দিকে তাকিয়ে চোখ বড় বড় করে বলল, There are only two places in the world where we can live happy: at home and in Paris. এরপর আগের মতোই চোখ বড় বড় করে বলল, আমি না, আর্নেস্ট হেমিংওয়ে বলেছে। চেনেনই তো তাকে!
আমিও হেয়ালি করে বললাম, অবশ্যই, কতই না দেখা হয় ওনার সাথে আমার ডালাসে। এবার দেখা হলে জিজ্ঞেস করে নেব। তিনি কেন এমন কথা বলেছেন। তবে আমি বলব, ‘এট হোম এন্ড ইন বাংলাদেশ’। আপনার বৌয়ের কাছে ‘এট হোম এন্ড ইন ভেনেজুয়েলা’। প্যারিসে কি আছে আমাদের নিজের? এদিক দিয়ে ঢুকে ওদিক দিয়ে বেরিয়ে যাব। ছোট থেকে কল্পনায় বা বই পুস্তকে অথবা ছবিতে দেখে আসা একটা জায়গা, যা দেখতে দেখতে স্বপ্ন হয়ে গিয়েছিল, এই বেড়ানো হচ্ছে তা কে একবার ছুঁয়ে দেখা, ক্ষণিকের কিছু, চিরদিনের আবাসস্থল জাতীয় কিছু নয়।
লোকটি বলল, ভাই আপনি এতো বিখ্যাত জনকে নাকচ করে দিলেন! আমিও বললাম, দিলাম। এটাই তো আমার বাক স্বাধীনতা। চিন্তার স্বাধীনতা। সবার কথা সবাইকে মানতে হবে কেন? আমার সময়কালে আমার কাছে যা গ্রহণযোগ্য মনে হবে আমি তাই তো মনবো। আপনি যদি বলেন, বানান দেখি এরকম একটা টাওয়ার, আমি তা পারবো না, আর এটাই এর বিশেষত্ব। স্থায়িত্ব। এজন্যই এটি অনন্য। কত আগে মানুষ এটি বানিয়েছে কিভাবে সেটা আসলেই ভাববার বিষয়। উড়োজাহাজও বানাতে পেরেছে এর ২ বছর পরে, বুঝুন তাহলে অবস্থাটা! ১৮৮৭ সালের ২৮ জানুয়ারি শুরু করে ১৮৮৯ সালের মার্চে শেষ করেছে। আমি তখন জন্মাতেও পারিনি। বিলিভ মি আমি তখন জন্মাতেও পারিনি।
দেশি লোক আমার কথাটা শুনে হাসছেন। চেয়ে দেখলাম বৌটিও হাসছেন। খেয়াল করলাম ভাষাটা তো ছিল ইংলিশ, তাই বুঝেছে। আমার মেয়ে আর বর এগিয়ে গেছে। একে কথার মারপ্যাচে ফেলে আমি দৌড়ে গেলাম ওদের কাছে। পিছনে কোটেশন বক্স পরে রইল।
আমি ওদের কাছাকাছি পৌঁছাতেই আমার বর হেসে বলল, ওনাকে বাসায় যাওয়ার দাওয়াত ঠিকানা সব দিয়ে এসেছো তো! বলেছ তো ওই বাচ্চা হওয়া মাত্র যেন তোমাকে ছবি পাঠায় ! আমি শুধু মনে মনে বললাম, এ এক আজব পাবলিক। বুঝতে পারছি আমার খেজুরা আলাপ হালকা করে অপছন্দ হয়েছে তার। আজব পাবলিক তার মেয়েকে বলল, তোমার মা লোকাল বাসের মতন জায়গায় জায়গায় থামবে, শত জনের সাথে আলাপ করবে, তারপর হেলেদুলে নেচে নেচে পিছে পিছে আসবে।
আমি এসেছি দৌড়ে, সে বলছে হেলেদুলে। আরো বলছে, তাড়াতাড়ি লাইনে আগাও, আমাদের স্লট পার হয়ে গেলে এরপর কী করতে হবে কে জানে? এদিক ওদিক অনেক লাইন। সিঁড়ি লিফ্ট একাধিক। যারা টিকেট ইতিমধ্যেই অনলাইনে কেটে ফেলেছে তাদের লাইন তো ভিন্ন হওয়ার কথা। ওরা বাপ-বেটি সাইন বোর্ড পড়ে পড়ে বুঝতে চাইছে। আমি যথারীতি জন আলাপে ব্যস্ত হয়ে গেলাম। আমি আশেপাশের মানুষকে জিজ্ঞেস করে নিতে থাকলাম, সামনের লোকের টিকেট আছে না টিকেট ছাড়াই দাঁড়িয়ে গেছে টিকেটের জন্য, সেটা জানলেই তো বুঝা হয়ে গেলো এই লাইনটা ঠিক কিনা। মানুষকে আমি বিরক্ত করছি এরকম ভাব নিয়ে বাপ-বেটি আমার দিকে তাকিয়েছিল কিন্তু আমি ওদের অতো পাত্তা দিলাম না। একটা মজার জিনিস এতে আমি পেলাম তা হচ্ছে, যে মহিলা দুই মিনিট আগে বলেছিল এটাই যাদের টিকেট আছে তাদের লাইন সেই কোত্থেকে ফিরে এসে আমাকে জানালো অন্য দিকের লাইনটিই আমাদের জন্য। কারণ এটা নতুন করে টিকেট কাটার লাইন। আমাকে এতটা খুঁজে নিয়ে বলার দরকার ছিল না, কিন্তু বলেছে। মানুষের এই সুন্দর রুপগুলো রুপা দিয়ে কেনা যায় না।
এরপর যখন লিফটে উঠতে গেলাম ওদের পরিবারের সদস্যদের জায়গা হচ্ছে না দেখে আমরা সরে বেরিয়ে গেলাম, ওরা উঠুক, আমরা লিফটে উঠবো ওদের পরের বার। ওদের সৌজন্যতার কারণে আমরাও সৌজন্যতা দেখিয়েছি। আমরাও অনেক রূপবান ধনী চিত্তের, বিত্তের হয়তোবা নই, কিন্তু আপন বৃত্তের বাহিরে বৃহৎ বলয়ে আমরাও রক্ষক আমাদের উচ্চ সভ্যতার। পারস্পরিক সম্প্রীতির মাধ্যমে অচেনা অজানা দুটো পরিবারের অদৃশ্য এক বন্ধন যা এনেছে মুখে হাসি। নিঃসন্দেহে কার্টেসি খুবই প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ আমাদের এই সভ্য সমাজে। সৌজন্যতাবোধের অতি মাদকীয়তার আবেশে ভরপুর এই উন্নত বিশ্ব।
৭ হাজার টন ওজনের এই স্থাপনাটিতে সিঁড়ির ধাপও আছে ১৭৯২টি। আমরা যাবো লিফটে করে। কে যাবে সিঁড়ি বেয়ে এতো উপরে। এর উচ্চতা ৩২০ মিটার (১০৫০ ফুট)। ১৯৩০ সাল পর্যন্ত আইফেল টাওয়ার ছিল পৃথিবী সবচেয়ে উঁচু স্থাপনা। শুনেছি কোনো এক সময়ে এক অতি উৎসাহী সাইকেল চড়ে আইফেল টাওয়ারের সিঁড়ি বেয়ে নামতে গিয়ে সোজা জেলে গিয়ে ঢুকেছে। তবে সাইকেল নিয়ে উঠলো কিভাবে উপরে সেটা জানার চেষ্টা করাতে আমার বর বললো, তোমাকে আমি আরেকবার নিয়ে আসবো প্যারিসে, সে-বার জেনে নিও ।
আমরাও লিফটে উঠলাম, উঠতে থাকলাম উপরের দিকে। উঠতেই থাকলাম। নিচের সবকিছু ছোট থেকে ছোট হতে থাকলো। কি আজব, কত উপর থেকে আমরা দেখতে পাচ্ছি অপরূপ প্যারিস। যা কিছু আমরা মাটিতে ঘুরে বেরিয়ে দেখেছি তাই উপর থেকে দেখছি। ভিন্ন এক আঙ্গিক থেকে। টাওয়ারটির চুড়ো থেকে ৭৫ কিলোমিটার পর্যন্ত এক নজরে দেখে নেওয়া যায়। এটিই এর আকর্ষণ। এতো উপরে উঠার সুযোগ যখন ছিল না সেই সময়ের সেই সব মানুষেরা কখনো ভাবেই নি হয়তোবা এতো উপর থেকে এতো কিছু দেখা যায়, যাবে। তাদের নতুন প্রজন্ম দূর আকাশে দাঁড়িয়ে দেখবে তাদের বাড়ি ঘর উপর থেকে।
লিফটের একপাশে বসে আছে এক চালক, একটি মেয়ে। সারাদিন সে কেবল আকাশে ওঠে আর নামে। কেমন লাগে তার এই কাজ? কত রকম কাজ যে করতে হয় মানুষকে এক জীবনে। মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করলাম, নাম কী তোমার? সে কেবল হাসলো। আমার কথা বুঝতে পারেনি। আমার মেয়ে বললো, ও ইংরেজি বোঝে না মা। আমার বর বললো, ওর নাম দিলরুবা। দেব নাকি আমার বরকে এই ১০০ তলা থেকে এক ধাক্কা, নিচে ফেলে দিলে ধরবেন কি আপনারা? সে কিন্তু আমাকে রাগিয়ে দিয়ে নিজে খুব হাসছে। শুনেছি, ১৯৭২ সালে আমেরিকায় জন্মগ্রহণকারী ‘এরিকা আয়া’ তার ব্যক্তিগত জীবনে বিরক্ত হয়ে ২০০৭ সালে আমাদের সকলের প্রিয় জড় বস্তু আইফেল টাওয়ারকে বিয়ে করে বসেন এবং এরপর থেকে তার নাম হয়ে যায় এরিকা আইফেল। সেই পাগলী এদিক ওদিক আছে কিনা চেয়ে দেখলাম, নাই। কত রকম কাণ্ডই না মানুষ করতে পারে !
যখন আমরা ডেকে নামলাম তখন নিজেকে অসাধারণ কিছু দেখার জন্য জন্য প্রস্তুত তো করেই রেখেছিলাম। এক নজরে চারদিকের সব কিছু। নজরের ভিতর সব। সিন্ নদী বয়ে চলে যাচ্ছে বহুদূর। কাল রাতে নৌ-বিহারে গেছি ওই নদীতে। নদী থেকে রাতের চকমকে এই টাওয়ারের আগুন ধাঁধানো রূপ না দেখলে অনেক কিছুই অদেখা হয়ে থাকতো এই জীবনে। প্রতি ঘণ্টায় একবার করে এই বিজলিবাতি ঝলমল করে উঠে। রাতের রূপ আর দিনের রূপ ভিন্ন। সকল রূপেই সে অপরূপা ।
ডেকের একধারে একটা জায়গা থেকে সবাই ছবি তুলতে চাইছে। কারণ দূরে দেখা যাচ্ছে আভন্যু দে শঁজেলিজে, আর্ক ডে ট্র্যেম্ফে। আমিও অপেক্ষায়। কিন্তু ওই সেই শাড়ি পরিহিতা দাদিমা ছবি তুলছেন তার নাতনির। বুড়ি চোখে দেখে কিনা সন্দেহ। কিন্তু নাতনীটিকে তো ছবি তুলে দিতে হবে, নিশ্চয়ই ওই ফেইসবুকের জন্য। পরিষ্কারভাবে তার ফোনের ক্যামেরাতে আমি তার পিছনে দাঁড়িয়ে দেখতে পাচ্ছি ফ্রেমের ভিতর এই দিক আছে তো ওই দিক নাই। দাদিমা দিগবিদিক জ্ঞানহারা। হাত বাড়িয়ে ফোনটা নিয়ে দিলাম ছবি তুলে। ভয়াবহ কিছু ছবি তোলা থেকে তাকে পরিত্রান দিলাম। তারপর আমরা দাঁড়িয়ে গেলাম ছবি তুলতে। অবাক কান্ড দাদিমা বুড়িটি ফোকলা দাঁতে হেসে বললো, তোমরা তিনজন দাঁড়াও আমি তোমাদের একটা ফ্যামিলি পিকচার তুলে দেই। আমি তো সাথে সাথে না করতে চাইছিলাম। কিন্তু ওই যে দয়ার সাগর আমার বর, তাকে শিখিয়ে দিলো কিভাবে তার এত্ত ভারী ক্যামেরাতে ক্লিক করতে হবে। দাদিমা তা পারলেন, করলেন। আমাদের তিনজনের ওইখানের সবচেয়ে সুন্দর একমাত্র ছবিটি দুর্দান্ত একটা স্মৃতি হয়ে রইলো। নাতনীটি পাশে দাঁড়িয়ে কেবল চেয়ে চেয়ে হাসলো।
ডেকে ঘুরতে ঘুরতেই দেখলাম জটলা পাকিয়েছে একটা জায়গায়, এগিয়ে দেখি, ঐ একই রকমের পোশাকের দলের ক্ষুদ্রতম সেই শিশুটি। একা। দড়ি ছিড়ে ভেগেছে মনে হয়। ঘিরে আছে যারা তারা ভাবছে একে নিয়ে কি করা যাবে। সিকিউরিটিকে খবর দিয়েছে কয়েকজন। আমি এদিক ওদিক চেয়ে দেখলাম বাকিগুলা কই। দেখলাম না কাউকে। বাচ্চাটি কাঁদতে শুরু করেছে। আমি কোলে তুলে নিলাম- কি আদূরে বাচ্চাটা। বাকিরা কাছে আসতে চাইছিলো না খুব সম্ভবত কোন বিপদের না আবার পড়তে হয় তাই ভেবে। জালিয়াতির কি শেষ আছে এই প্যারিসে! ভিক্টর লাস্টিক নামের চেক প্রজাতন্তের এক অতি ধূর্ত লোক ২ বার জালিয়াতি করে পরিত্যাক্ত ধাতু হিসাবে বিক্রি করেছে এই টাওয়ার।
প্যারিসে গিয়ে দুঃসাহসিক আত্মবিশ্বাসের সাথে দু’বার আইফেল টাওয়ার বিক্রি করে দিয়ে তার নামই হয়ে গেছে ‘দ্য ম্যান হু সোল্ড আইফেল টাওয়ার টোয়াইস’ বা ‘দু’বার আইফেল টাওয়ার বিক্রি করে দেয়া মানুষটি’। তাহলে এখানে কে কিভাবে কি রকম ধরনের চালবাজি করছে তাই নিয়ে সবাই সন্দিহান থাকবেই। কিন্তু আমি একে এই শিশুকে চিনি। আমি যে দেশ থেকে বড়ো হয়ে এসেছি সেখানে সবার বাচ্চাকেই আমরা কোলে তুলে নিতে পারি কিছু না ভেবেই। এরা অনেক ভাবে। এদের প্রাইভেসি লেভেল অন্যরকম। দূরে দেখতে পেলাম হাপুস হাপুস করে ছুটে বেড়াচ্ছে এর দলবল এর খোঁজে। আমি হাত নাড়াতেই ছুটে পাশে এলো। সিকিউরিটির লোকজনও সাথে।
আমার বর বললো এবার তোমাকেও ধরে নিয়ে যাবে, ওদের বাচ্চা কোলে নিয়েছো এই অপরাধে। এতক্ষণ এই বাচ্চার জন্য তার দরদ ছিল আমার থেকেও বেশি, এখন বলে আমাকে পাচার করা হবে কোথায় না কোথায়। এই লোককে আমার ধাক্কা মারতেও আর ইচ্ছে হচ্ছে না। আপনারা এসে প্লিজ একে জোরে একটা ধাক্কা দিন। আমাকে অনেক ধন্যবাদ তো দিলোই নিজেদের গল্পও বললো। চারটা বাচ্চা নিয়ে একটা পরিবার ছিল, তারপরে বাপ্ একটা, মা আরেকটা বিয়ে করলো, ওখানে আবার দুইটা দুইটা করে চারটা বাচ্চা এলো, সাথে অতিরিক্ত এলো পার্টনারের আগের বিয়ের একটা বা দুইটা বাচ্চা, তাই এই বিশাল বাহিনী, সবাই একসাথে এসেছে। আমার বর বললো, তুমি এদের যোগ বিয়োগ গুনভাগ শেষ করো আমি দেখি চারদিক, ছবি তুলি গিয়ে। আমি এই বিশাল পরিবারকে কোন দিকের কি ইত্যাদির হিসাব মিলাতে গিয়ে বেশ ধাঁধায় পরে গেলাম এবং এটি ঠিক হলো না, যে পর্যন্ত না আমি দোতলায় নেমে ওদের রেস্টুরেন্টে একটা স্মুদি খেলাম। আমার বর অবশ্য থেকে থেকেই আমার দিকে চেয়ে হাসতে লাগলো।
খুব অবাক লেগেছিলো, ডেকের একটা বদ্ধ জানালা দিয়ে মুখ ঢুকাতেই যখন দেখলাম গুস্তাভ আইফেল এবং টমাস এডিসন উভয়েরই দু’টো মোমের মূর্তি। বসে যেন আলাপ করছেন তারা। শুনেছিলাম আগেই এই আইফেল টাওয়ারে গুস্তাভ আইফেলের একটা এপার্টমেন্ট ছিল, সেটাও দেখলাম। সৃষ্টির ভেতর বাস করেছেন তার স্রষ্টা, কেমন ছিল তার সেদিনের সেই অনুভূতি, জানা নেই তা! বহু উপর থেকে কি তিনিও তখন চেয়েছিলেন রাতের কোনো আলোর দিকে কিংবা মহাকাশের কোনো নক্ষতের দিকে।
বেরিয়ে যেতে গিয়ে হঠাৎ দেখলাম দৌড়ে আসছে সেই দড়িবাঁধা শিশুটি, হঠাৎই এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে একটা হাগ্ দিলো। তার থ্যাংকস এটি। বাপ মা-ই বলেছে, তাই এসেছে, এদের ভদ্রতা অপরিসীম। লৌহ মানবী দি আইফেল টাওয়ার কি ভাবে আমরাও তাকে হাগ্ দেই? অনেক মায়ায়? লোহার জন্য মমতা!!! না, তা না।এ মায়া আমার আমাদের বহুদিনের কল্পনা আর জল্পনার বিষয়টির সম্মুখ দর্শনের। আমার মায়া হচ্ছে, আমাকে যে অবাক করেছে, তাকে দেখবার জন্য যে তৃষ্ণা আমাতে বইছে, তাতেই এই মায়া ধাবমান, ধাইছে, ধেয়ে গিয়ে মিলছে তৃপ্তিতে। আমি আনন্দিত- আমি একে ছুঁয়েছি। ছুঁয়ে দেখে এসেছি। এ যেন বলছে আমাদের বিদ্রোহী কবি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায়,
‘‘বল বীর-
চির-উন্নত মম শির!
আমি বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির উন্নত শির!’’
তারা//
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপর থ ক আম দ র আম র ব পর ব র র জন য আম র ক র একট আমর ও
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে এটিএম বুথে ধর্ষণের অভিযোগ, অভিযুক্ত পলাতক
গাজীপুরের শ্রীপুরে অধিক বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এক নারী পোশাক শ্রমিককে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একটি এটিএম বুথের নিরাপত্তা প্রহরীর বিরুদ্ধে।
সোমবার (১৬ জুন) সকালে ওই নারী শ্রমিকের বাবা বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
রবিবার (১৫ জুন) সকালে শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ গ্রামের এমসি বাজার এলাকায় তালহা স্পিনিং মিল সংলগ্ন একটি ব্যাংকের এটিএম বুথে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ ।
ভুক্তভোগী নারী স্থানীয় একটি কারখানায় ৬ হাজার টাকা বেতনে কাজ করতেন। অভিযুক্ত নিরাপত্তা প্রহরী মো. লিটন (৩৫) তালহা স্পিনিং মিল সংলগ্ন বুথে দায়িত্ব পালন করতেন।
লিটন ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার ডুবাইল গ্রামের মৃত আব্দুল আউয়ালের ছেলে। বর্তমানে তিনি মুলাইদ গ্রামের আতাব উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া থাকেন এবং ফাস্ট সলিউশন লিমিটেড নামের একটি নিরাপত্তা নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের অধীনে চাকরি করতেন।
থানায় দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, এটিএম বুথে টাকা তোলার সূত্র ধরে এই নারী শ্রমিকের সঙ্গে পরিচয় হয় লিটনের। একপর্যায়ে লিটন ভুক্তভোগীকে ১২ হাজার টাকা বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রবিবার সকালে তার বাবার মোবাইলে ফোন করে ডেকে আনেন। সকাল ৬টার দিকে বুথে গেলে লিটন তাকে ভেতরে একটি ছোট কক্ষে বসিয়ে রাখেন এবং জানান যে, নতুন চাকরির উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসে তার সাক্ষাৎকার নেবেন।
ভিকটিমের বাবা দুইবার মেয়ে চাকরির বিষয়ে খোঁজ নিলে লিটন জানান, চিন্তার কিছু নেই, সব ঠিক আছে। তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেব। এরপর আনুমানিক সকাল ১০টার দিকে লিটন কক্ষে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। বাড়ি ফেরার পথে মেয়ে তার বাবাকে ঘটনাটি জানায়।
ঘটনার বিষয়ে ফাস্ট সলিউশন লিমিটেডের সুপারভাইজার মো. হানিফের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মোবাইল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল বারিক জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং অভিযুক্ত লিটন পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। দ্রুতই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরো জানান, ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সম্পন্ন করা হয়েছে।
ঢাকা/রফিক/টিপু