হোয়াইটওয়াশের দ্বারপ্রান্তে শ্রীলঙ্কা
Published: 8th, February 2025 GMT
গলে অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে চলমান দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় এবং শেষ ম্যাচের তৃতীয় দিন শেষেই জয়ের সুবাস পাচ্ছে অজিরা। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) ৩ উইকেটে ৩০৩ রান নিয়ে খেলা শুরু করা অস্ট্রেলিয়া নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৪১৪ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিকদের অসাধরণ বোলিংয়ে। লঙ্কানরা ১৫৭ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে। তবে অজিদের জন্য পাতা স্পিন ফাঁদে নিজেরা পড়ে এখন নিশ্চিত হারের সম্মুখীন হয়েছে লঙ্কানরা।
শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংসেও তেমন কোন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। ৮ উইকেটে ২১১ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করে তারা। স্বাগতিকরা দুই উইকেট হাতে রেখেই কেবল ৫৪ রানে এগিয়ে রয়েছে।
শনিবার সকালে অস্ট্রেলিয়াকে বিপদে ফেলে দেন প্রাবাত জয়সুরিয়া। এই বাঁহাতি স্পিনার দিনের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংকে ধসিয়ে দেন। অ্যালেক্স ক্যারির সঙ্গে ২৫৯ রানের জুটি গড়া স্টিভেন স্মিথের বিদায়ের পর আর মাত্র ৬৪ রানই যোগ করতে পারে অজিরা। স্মিথ থেমেছেন ১৩১ রানে অন্যদিকে ক্যারি কাটা পড়েন ১৫৬ রানে। দুটি উইকেটই পেয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারে ১১তম বার ৫ উইকেট নেওয়া প্রবাত।
আরো পড়ুন:
চারে এসে সফল শান্ত-হৃদয়
৪ থেকে ৬ জন ক্রিকেটার ধরে রাখার পক্ষে তামিম
এরপর সফরকারীদের ম্যাথু কুনেমান ও ন্যাথান লায়নের চমৎকার স্পিনের সামনে এলমেলো হয়ে যায় দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামা শ্রীলঙ্কা। এই দুই স্পিনারের দাপটে অস্ট্রেলিয়া এখন হোয়াইটওয়াশের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। শ্রীলঙ্কার হয়ে সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। তিনি ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন সাজঘরে ফিরেন তখন দলীয় সংগ্রহ ১৯৮ রান। শ্রীলঙ্কার শেষ আশার প্রদীপ হয়ে টিকে আছেন কুশল মেন্ডিস। প্রথম ইনিংসে হার না মানা ৮৫ রান করা মেন্ডিস তৃতীয় দিন শেষে ৪৮ রানে অপরাজিত রয়েছেন।
এদিকে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলতে নামা সাবেক অধিনায়ক দিমুত করুনারত্নে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪ রান করে ফিরে যান।
এই ম্যাচ জিতলে ২০ বছর পর শ্রীলঙ্কাকে তাদের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ করবে অস্ট্রেলিয়া। সবশেষ এই কীর্তি গড়েছিল তারা ২০০৩-০৪ মৌসুমে, জিতেছিলেন ৩ টেস্টের সবগুলো।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
৪২ বছর পর নিউ জিল্যান্ডের কাছে হোয়াইটওয়াশ ইংল্যান্ড
১৯৮৩ সাল আবার মনে করাল ইংল্যান্ড। নিউ জিল্যান্ডে গিয়ে সেবার ইংল্যান্ড ৩-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল। ৪২ বছর পর একই অভিজ্ঞতা হলো এবার তাদের।
আগেই সিরিজ নিশ্চিত করা নিউ জিল্যান্ড এবার আরো চেপে ধরেছিল ইংল্যান্ডকে। তবুও লড়াই করে ওয়েলিংটনে অতিথিরা ২২২ রানের পুঁজি পায়। হোয়াইটওয়াশের মিশনে থাকা নিউ জিল্যান্ডের ব্যাটিং তেমন ভালো হয়নি। লো স্কোরিং ম্যাচ জমে উঠে। শেষ পর্যন্ত ৪৪.৪ ওভারে হাতে ২ উইকেট রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় কিউইরা। ১৯৮৩ সালের পর প্রথম নিউ জিল্যান্ড ইংল্যান্ডকে ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ করল।
টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ইংল্যান্ড চরম বিপর্যয়ে পড়ে। ৯৭ রানে ৬ উইকেট হারায় তারা। ১০২ রানে তাদের শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান জস বাটলার (৩৮) আউট হন। তখন ধারণা করা হচ্ছিল অল্পতেই গুটিয়ে যাবে সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
কিন্তু সেখানে ঢাল হয়ে দাঁড়ান ব্রাইডন চার্স ও জেমি ওভারটন। দুজন ৫৮ রানের জুটি গড়েন। যেখানে ব্রাইডন আক্রমণাত্মক ক্রিকেট উপহার দিয়ে ৪ ছক্কা ও ১ চারে ৩০ বলে ৩৬ রান করেন। ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ রানের জুটি আসে তাদের ব্যাটেই।
শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ওভারটন আউট হন ৪১তম ওভারে। ৬২ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কায় ৬৮ রান করেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এর আগে জেমি স্মিথ (৫), বেন ডাকেট (৮), জো রুট (২) ও হ্যারি ব্রুক (৬) দ্রুত আউট হন। দলের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পারেন পাঁচ নম্বরে নামা জ্যাকব মিচেল। তবুও ১১ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।
নিউ জিল্যান্ডের বোলিং ছিল নিয়ন্ত্রিত। ৬৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে সেরা ছিলেন ব্লায়ার টিকনার। ৩ উইকেট পেয়েছেন জ্যাকব টাফি। ২টি পেয়েছেন জ্যাক ফলকস।
জবাব দিতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৭৮ রান পায় কিউইরা। ডেভন কনওয়ে ৩৪ ও রাচীন রাভিন্দ্রা ৪৬ রান করেন। এরপর ছন্দ হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় স্বাগতিকরা। কিন্তু ডার্ল মিচেলের অনবদ্য ৪৪ ও শেষ দিকে মিচেল স্টানারের ২৭ রানে নিউ জিল্যান্ড লড়াইয়ে ফেরে। শেষ দিকে জ্যাক ফলকসের ১৪ ও ব্লায়ার টিকনারের ১৮ রানে নিউ জিল্যান্ডের জয় নিশ্চিত হয়।
ইংলিশদের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন ওভারটন ও স্যাম কারান।
এই সিরিজে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং একটুও ভালো হয়নি। প্রথম ম্যাচে ২২৩ ও দ্বিতীয়টিতে ১৭৫ রানে গুটিয়ে যায়। নিউ জিল্যান্ড জয় পায় যথাক্রমে ৪ ও ৫ উইকেটে। শেষ ম্যাচে খানিকটা প্রতিদ্বন্দ্বীতা গড়লেও হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পারেনি ইংল্যান্ড।
বল হাতে ৪ উইকেট ও ব্যাটিংয়ে ১৮ রান করে ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন টিকনার। ১৭৮ রান করে সিরিজ সেরা ডার্ল মিচেল।
ঢাকা/ইয়াসিন