গ্রেপ্তার সাবেক এমপি চয়ন ইসলাম দুই মাস আগে শ্রীপুরে ভাড়া বাড়িতে ওঠেন
Published: 10th, February 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরের তেলিহাটি ইউনিয়নের মাটির মসজিদ এলাকার একটি বাড়ি থেকে গতকাল রোববার রাতে সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) চয়ন ইসলামকে (৬১) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। এর আগে ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা বাড়িটি ঘিরে রাখেন। সংগঠনটির কর্মীরা জানান, পাঁচতলা ওই ভবনের চতুর্থ তলায় দুই মাস ধরে ছিলেন চয়ন ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী।
চয়ন ইসলাম সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি শাহজাদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি আত্মগোপনে যান। নভেম্বরে চাঁদাবাজির অভিযোগে আদালতে চয়ন ইসলামসহ পাঁচজনের নামে মামলা হয়। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলি করে হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে।
উপজেলার ইউনিয়নের মাটির মসজিদ এলাকার খাইরুল ইসলামের বাড়ি থেকে চয়ন ইসলামসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার অন্যজনের নাম জাহাঙ্গীর আলম (৫০)। তাঁর কাছ থেকে ইয়াবা বড়ি ও ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাম পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। জাহাঙ্গীর শ্রীপুরের টেংরা পশ্চিমপাড়া এলাকার হোসেন আলীর ছেলে। তিনি শ্রমিক লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
সাবেক সংসদ সদস্য চয়ন ইসলামের সন্ধান পাওয়ার বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুর জেলার আহ্বায়ক সদস্য আশরাফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি বিশ্বস্ত সূত্র গতকাল এ বিষয়ে আমাদের তথ্য দেয়। দ্রুত খোঁজখবর করে ওই বাড়িতে সাবেক এমপির থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হই। সঙ্গে সঙ্গে শ্রীপুর থানায় আমরা খবর দিই। পুলিশ রাত সাড়ে ৯টার দিকে ওই বাড়িতে আসে। সেখানে আগে থেকেই অবস্থান নেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা। কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে আসেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। পুলিশ এসে বাড়ি ঘেরাও করেন।’
সেখান থেকে দিবাগত রাত ১২টার দিকে চয়ন ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আশরাফুল ইসলাম আরও বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা পুলিশের সঙ্গে বাড়ির মূল ফটকে প্রবেশ করেন। চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটে বেশ কিছুক্ষণ দরজা নক করি। এক পর্যায়ে ভেতর থেকে দরজা খুলে দেন চয়ন ইসলামের স্ত্রী পরিচয়ে এক নারী। দরজা খুলতেই সেখানে চয়ন ইসলামকে দেখা যায়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজের পরিচয় দেন।’
শ্রীপুর পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক মামুন আকন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা খোঁজ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি পুলিশ ও স্থানীয় ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের জানান। সবার উপস্থিতিতে অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
আরও পড়ুনগাজীপুরের শ্রীপুর থেকে আটক সিরাজগঞ্জ -৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য চয়ন ইসলাম১৫ ঘণ্টা আগেনাম-পরিচয় গোপন রাখার শর্তে স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, চয়ন ইসলামের ছেলে গাজীপুরের শ্রীপুরের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেন। একই প্রতিষ্ঠানে পড়েন ওই বাড়ির মালিক ও একসময় শ্রমিক লীগের রাজনীতি করা খাইরুল ইসলামের ছেলে। খাইরুল ও জাহাঙ্গীর পরস্পরের পরিচিত। সেই সুবাদে দুই মাস আগে ওই বাড়িতে ওঠেন চয়ন ইসলাম, সঙ্গে তাঁর স্ত্রীও ছিলেন।
গাজীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (কালিয়াকৈর সার্কেল) আফজাল হোসেন খান বলেন, ‘চয়ন ইসলামের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানায় দুটি মামলা আছে। আমরা তাঁকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করেছি। তাঁকে শাহজাদপুর থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চয়ন ইসল ম র গ র প ত র কর ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বিভিন্ন দলের
ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল। অবিলম্বে এই হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে দুনিয়ার শান্তিকামী দেশ ও বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে এসব দলের নেতারা এই দাবি জানান। তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের রাজনৈতিক সামরিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে চেষ্টা করছে। যুদ্ধবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখনই থামতে হবে। অন্যায়ভাবে ইরানের শিশু-নারী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর বোমা ও মিসাইল হামলা বন্ধ করতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাষ্ট্রীয় ভয়ানক সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিধিবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। জাতিসংঘকেও এরা পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে।