ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ইউরোপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবে ট্রাম্প প্রশাসন
Published: 10th, February 2025 GMT
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের উপায় খুঁজতে চলতি সপ্তাহে ইউরোপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তারা। গতকাল রোববার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস এ তথ্য জানিয়েছেন।
টেলিভিশন চ্যানেল এনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাইক ওয়ালৎস বলেন, রাশিয়ার অর্থনীতি ভালো অবস্থায় নেই। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমিরি পুতিনকে আলোচনার টেবিলে আনতে মস্কোর ওপর শুল্ক, কর ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে প্রস্তুত ট্রাম্প। চলতি সপ্তাহের সাক্ষাতে ইউক্রেনে কিছু মার্কিন সহায়তা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনা শুরু করবে ট্রাম্প প্রশাসন। একই সঙ্গে ইউক্রেনকে সমর্থনের জন্য ইউরোপীয় মিত্রদের আরও বড় ভূমিকা পালন করতে হবে।
সাক্ষাৎকারে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের ওই ক্ষতিগুলো পুষিয়ে নিতে হবে। এ জন্য ইউক্রেনের প্রাকৃতিক সম্পদ, তাদের তেল–গ্যাস কেনা এবং তারাও আমাদেরটা কেনার শর্তে ইউক্রেনীয়দের সঙ্গে আমরা একটি অংশীদারত্ব করতে যাচ্ছি।’
মাইক ওয়ালৎস বলেন, ‘ওই আলোচনা চলতি সপ্তাহে শুরু হচ্ছে। আর আমি মনে করি, এখানে একটি অন্তর্নিহিত নীতি হলো—ইউরোপীয়দের এটা ধরে নিতে হবে যে যুদ্ধ আরও সময় ধরে চলবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এটি শেষ করতে চলেছেন।’
মাইক ওয়ালৎসের এই সাক্ষাৎকারের আগে সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্টের খবরে বলা হয়েছিল, ইউক্রেন ইস্যুতে আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধানের দিকে এগিয়ে যেতে পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন ট্রাম্প। পরে দুজনের আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘আমি তা বলতে চাই না। আমরা যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টা করছি। আমি প্রেসিডেন্ট থাকলে এই যুদ্ধ কখনোই বাধত না। তবে আমাদের অগ্রগতি হয়েছে। সেগুলো আপনাদের আমি বলতে পারব না।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় বসার আগে থেকেই দ্রুত ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের পক্ষে ছিলেন ট্রাম্প। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই যুদ্ধ বন্ধ করতে পারবেন বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। যদিও পরে ওই ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা ছয় মাসে পরিণত হয়। ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে মস্কোর সঙ্গে আলোচনা করছে ওয়াশিংটন। তবে এতে কিয়েভের অংশগ্রহণ নেই। সে সময় ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে কোনো শান্তিচুক্তির বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন ভলোদিমির জেলেনস্কি।
আজ সোমবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসংক্রান্ত একটি সম্মেলনে যোগ দেবেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স। সেখানে সরকারি কর্মকর্তারা থাকবেন। এই সম্মেলন থেকে ভ্যান্স যাবেন জার্মানির মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে। সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। মিউনিখে থাকবেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এবং ইউক্রেন ও রাশিয়াবিষয়ক ট্রাম্পের বিশেষ প্রতিনিধি কেইথ কেলগ। পরে আগামী বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে ন্যাটোর একটি বৈঠকে যোগ দেবেন হেগসেথ।
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে জেলেনস্কির উপদেষ্টা আন্দ্রি ইয়ারমাকের। তিনি বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে ইউক্রেনের অবস্থান কী, তা তুলে ধরতে এই সম্মেলনকে ব্যবহার করবে কিয়েভের প্রতিনিধিদল। বারবার রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকাতে কী কী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়া যায়, সে বিষয়ে আলোচনার আশা করছে কিয়েভ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন য দ ধ য দ ধ বন ধ ইউর প
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বিভিন্ন দলের
ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল। অবিলম্বে এই হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে দুনিয়ার শান্তিকামী দেশ ও বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে এসব দলের নেতারা এই দাবি জানান। তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের রাজনৈতিক সামরিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে চেষ্টা করছে। যুদ্ধবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখনই থামতে হবে। অন্যায়ভাবে ইরানের শিশু-নারী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর বোমা ও মিসাইল হামলা বন্ধ করতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাষ্ট্রীয় ভয়ানক সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিধিবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। জাতিসংঘকেও এরা পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে।