পাঁচ বছর বয়সে বাবা পাড়ি দিয়েছেন পরপারে। তারও আগে মা চলে গেছেন অন্যের ঘরে। দেখভাল করতেন দাদি। দুই ভাই, এক বোনের সংসারে বড় ভাই আর দাদিও প্রয়াত হয়েছেন। একমাত্র বোন থাকে মায়ের সঙ্গে। এমন নিঃসঙ্গ ও অসহায় ছেলে আবুল কাশেমের পড়াশোনাও এগোয়নি খুব বেশি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ২০ বছর বয়সী ছেলেটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বুধবার বেলা তিনটার দিকে মারা গেলেন।

নিহত আবুল কাশেম গাজীপুর মহানগরের দক্ষিণ কলমেশ্বর এলাকার প্রয়াত হাজি জামালের ছেলে। শুক্রবার রাতে মহানগরীর ধীরাশ্রম দক্ষিণখান এলাকায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রদের ওপর হামলা এবং তাঁদের আটকে মারধরের যে ঘটনা ঘটেছিল, তাতে আবুল কাশেমসহ ১৭ জন আহত হন। পরে কাশেমসহ গুরুতর আহত ৭ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

আরও পড়ুনগাজীপুরে সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেলের বাড়িতে হামলায় আহত একজনের মৃত্যু৫ ঘণ্টা আগে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুর শাখার সমন্বয়ক মো.

আবদুল্লাহ বলেন, আবুল কাশেমকে হত্যার প্রতিবাদে আজ বুধবার রাতে গাজীপুরের শিববাড়ী মোড় থেকে ডিসি অফিস পর্যন্ত মশাল ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজবাড়ী মাঠে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে এবং বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মহানগরীর বোর্ডবাজার–সংলগ্ন আল-হেরা সিএনজি পাম্প মাঠে আরেক দফা জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় আজ আরও ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গাজীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ পর্যন্ত এ ঘটনায় ১৬০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আগের মামলার সঙ্গে এখন হত্যা মামলার ধারাও যুক্ত করা হবে।

গাজীপুরে নিহত আবুল কাশেমের বাড়িতে এলাকাবাসী ও স্বজনদের ভিড়। বুধবার বিকেলে গাজীপুর মহানগরীর কলমেশ্বর এলাকায়

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বাবা পটুয়া কামরুল হাসান স্মরণে মেয়ে শুমোনা হাসানের গান

ভালোবাসা, স্মৃতি ও উত্তরাধিকারকে কেন্দ্র করে এক আবেগঘন পরিবেশে পটুয়া কামরুল হাসানের কন্যা শুমোনা হাসান তার বাবাকে উৎসর্গ করে একটি হৃদয়স্পর্শী গান প্রকাশ করেছেন।

বাবা দিবস উপলক্ষে আজ দ্য ডেইলি স্টার সেন্টারে একটি অনুষ্ঠানে ‘কত দূর বাবা তোমার বাড়ি’ শিরোনামে গানটি প্রকাশ করা হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শুমোনার পরিবার, ঘনিষ্ঠজন, এবং সম্মানিত গণমাধ্যমকর্মীরা।

গানটি শুমোনার নিজস্ব রচনা, সুর এবং কণ্ঠে পরিবেশিত। এতে ফুটে উঠেছে একজন কন্যার তার বাবার সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো, তাদের ভালবাসা, সংগ্রাম এবং অনন্য সম্পর্কের গল্প। গানের প্রতিটি কথা ও সুর যেন এক আবেগের যাত্রাপথ।

অনুষ্ঠানে শুমোনা বলেন, ‘এই মুহূর্তটি আমার এবং আমার পরিবারের জন্য এক বিজয়ী এবং আবেগময় সময়। বাবার আত্মা সবসময় আমাকে পথ দেখিয়েছে। এই গানটি তার প্রতি আমার ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতার ছোট্ট বহিঃপ্রকাশ।’

শুমোনা জানান, ভবিষ্যতেও তিনি এই ধারা অব্যাহত রেখে তাঁর বাবার স্মৃতিকে সম্মান জানাতে চান সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ