‘ওর মৃত্যুতে দেশবাসী ছাড়া কাঁদার মতো কেউ নেই’
Published: 12th, February 2025 GMT
পাঁচ বছর বয়সে বাবা পাড়ি দিয়েছেন পরপারে। তারও আগে মা চলে গেছেন অন্যের ঘরে। দেখভাল করতেন দাদি। দুই ভাই, এক বোনের সংসারে বড় ভাই আর দাদিও প্রয়াত হয়েছেন। একমাত্র বোন থাকে মায়ের সঙ্গে। এমন নিঃসঙ্গ ও অসহায় ছেলে আবুল কাশেমের পড়াশোনাও এগোয়নি খুব বেশি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ২০ বছর বয়সী ছেলেটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বুধবার বেলা তিনটার দিকে মারা গেলেন।
নিহত আবুল কাশেম গাজীপুর মহানগরের দক্ষিণ কলমেশ্বর এলাকার প্রয়াত হাজি জামালের ছেলে। শুক্রবার রাতে মহানগরীর ধীরাশ্রম দক্ষিণখান এলাকায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রদের ওপর হামলা এবং তাঁদের আটকে মারধরের যে ঘটনা ঘটেছিল, তাতে আবুল কাশেমসহ ১৭ জন আহত হন। পরে কাশেমসহ গুরুতর আহত ৭ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুনগাজীপুরে সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেলের বাড়িতে হামলায় আহত একজনের মৃত্যু৫ ঘণ্টা আগেবৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুর শাখার সমন্বয়ক মো.
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় আজ আরও ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গাজীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ পর্যন্ত এ ঘটনায় ১৬০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আগের মামলার সঙ্গে এখন হত্যা মামলার ধারাও যুক্ত করা হবে।
গাজীপুরে নিহত আবুল কাশেমের বাড়িতে এলাকাবাসী ও স্বজনদের ভিড়। বুধবার বিকেলে গাজীপুর মহানগরীর কলমেশ্বর এলাকায়উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ ধসে ১০ শ্রমিক আহত
ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ ধসে অন্তত ১০ শ্রমিক আহত হয়েছেন। তাঁদের উদ্ধার করে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ‘বিদ্রোহী’ ছাত্রাবাসের পাশে একটি ১০ তলা ছাত্রাবাস নির্মিত হচ্ছে। নির্মাণাধীন ছাত্রাবাসের নিচতলায় একটি বারান্দার ছাদ ঢালাইয়ের কাজ করছিলেন শ্রমিকেরা। আজ সকাল থেকে ঢালাইয়ের কাজ চলতে থাকে। কিন্তু বিকেল সোয়া চারটার দিকে বিকট শব্দে ধসে পড়ে পুরো ছাদ। এ সময় সেখানে কাজ করা অন্তত ১০ শ্রমিক আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে একজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) এস এম জিয়াউল বারী বলেন, আহত অবস্থায় ১০ শ্রমিককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। তাঁদের মধ্যে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, আজ দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিল। ছাদ ঢালাই দেওয়ার জন্য খুঁটিগুলো ছিল দুর্বল। অনেক স্থানে লোহার পাইপের পরিবর্তে খুঁটি হিসেবে বাঁশ ও পাটের দড়ি ব্যবহার করা হয়। দুর্বল কাঠামোর কারণেই ছাদ ধসে যেতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মাহবুবুর রহমান বলেন, ১০ তলা ভবনের নিচে বারান্দার অংশের ছাদ ঢালাইয়ের কাজ চলছিল। নির্মাণকাজ করছিল সিএসআই নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ছাদ ধসে কয়েকজন শ্রমিক আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়ায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কী কারণে ধসে পড়ল, কারও গাফিলতি আছে কি না, তা তদন্তে দেখা হবে। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।