ভারতে জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কমেছে
Published: 15th, February 2025 GMT
ভারতে জানুয়ারি মাসে হোলসেল প্রাইস ইনডেক্স বা পাইকারি মূল্যসূচক (ডব্লিউপিআই) তথা মূল্যস্ফীতি কমেছে। এই মাসে দেশটির পাইকারি বাজারে জিনিসপত্রের দাম তথা মূল্যস্ফীতি কমে ২ দশমিক ৩১ শতাংশে নেমেছে; যা আগের মাস ডিসেম্বরে ছিল ২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য এবং বস্ত্র ও পোশাকপণ্যের দামের কারণেই এখনো মূল্যস্ফীতির পরিস্থিতি চলছে।
গতকাল শুক্রবার ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে এই তথ্য পাওয়া গেছে। তবে দেশটিতে পাইকারি মূল্যসূচক গত বছরের একই মাসের চেয়ে অনেক বেশি রয়েছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে সে দেশে ডব্লিউপিআই মূল্যস্ফীতির হার ছিল মাত্র শূন্য দশমিক ২৭ শতাংশ।
ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ডব্লিউপিআই মূল্যসূচক এ বছরের জানুয়ারিতে কমে ৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ হয়েছে, যা ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ছিল ৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
এদিকে জ্বালানির দামও কমে এসেছে। এই খাতে মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ২ দশমিক ৭৮ শতাংশ, যা আগের মাস ডিসেম্বরে ছিল ৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
ম্যানুফ্যাকচারিং বা উৎপাদন খাতের ডব্লিউপিআই অবশ্য গত ডিসেম্বর মাসের ২ দশমিক ১৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৫১ শতাংশ হয়েছে।
এদিকে ভারতে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বছরের পর বছর উচ্চ পর্যায়ে থাকলেও পয়েন্ট টু পয়েন্ট বা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় সর্বশেষ জানুয়ারিতে তা কমে ৬ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে নেমেছে, যা এর আগের মাস ডিসেম্বরে ছিল ৮ দশমিক ৯ শতাংশ। এই হ্রাস মূলত সবজির দাম কমার ফলেই ত্বরান্বিত হয়েছে। পতনের জন্য দায়ী ছিল, যা আগে খাদ্য মূল্যস্ফীতিকে বাড়িয়ে রেখেছিল। সবজির দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। যেমন সবজির মূল্যস্ফীতি গত ডিসেম্বরে যেখানে ছিল ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ, সেখানে জানুয়ারিতে তা মাত্র ১১ দশমিক ৩৫ শতাংশে নেমেছে।
মূল্যস্ফীতি মোটামুটি ইতিবাচক থাকলেও শিল্প খাতের উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি মন্থর হওয়ার লক্ষণ দেখা গেছে। খুচরা পর্যায়ে ডিসেম্বরে শিল্প উৎপাদনের সূচক (আইআইপি) কমে মাত্র ৩ দশমিক ২১ শতাংশে নেমেছে, যা চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড স ম বর ২ দশম ক বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
আরো পড়ুন:
নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা
সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।
বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।
অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ