ফেনী নদীর ভাঙনে সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নে কয়েকটি গ্রামের পাঁচ শতাধিক বাড়িঘর ও স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়িবাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছেন। ভাঙন রোধে স্থানীয়রা নদীর বাঁক সোজাকরণ ও ড্রেজিংয়ের দাবি জানিয়েছেন।
‘আগে সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়ন থেকে নদী ছিল আরও দুই কিলোমিটার পূর্বে মিরসরাইয়ের দিকে। কিন্তু ভাঙনের কারণে নদী এখন আমিরাবাদ ইউনিয়নে ঢুকে পড়েছে; স্কুল, মাদ্রাসা, বাড়িঘর সব ভেঙে নিয়ে যাচ্ছে। আমার দুই কানি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।’ কথাগুলো বলছেন, ‘সোনাগাজীর আমিরাবাদ ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল হালিম।
একই ইউনিয়নের বাসিন্দা ওমর কাজি মোহাম্মদ বলেন, ‘আমাদের ১২ কানি জমি ছিল তা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। কাগজের দলিলে থাকা বাড়িঘর, মুরগির খামার, গরুর খামার ও ফসলি জমি সবকিছু নদীতে চলে গেছে। নদীর পাড়ে যে বাড়িঘরগুলো দেখছেন এগুলো সব সরকারি জায়গায় নির্মাণ করা। বর্তমানে দুই কানি জমি অবশিষ্ট আছে আমাদের, তা দিয়ে কোনো রকম জীবনযাপন করছি।’
স্থানীয় কৃষক মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘নদীর মাঝখানে মিরসরাই উপজেলার লোকজনের মৎস্য প্রকল্পের কারণে নদীর পূর্ব অংশের পানির চাপে পশ্চিম অংশে ভাঙন তীব্র হয়েছে। আমার তিনবার বাড়িঘর ভেঙেছে। ফেনী অংশের লোকজনকে বাঁচাতে বাঁকা নদী সোজা করতে হবে।’
নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার জন্য স্থানীয় এলাকাবাসী নদীর পাড়ে দফায় দফায় মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। তারপরও কোনো কাজ হচ্ছে না।
আমিরাবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দা নুর উদ্দিন বলেন, ‘আমরা নদীর পাড়ে যেখানে দাঁড়িয়েছি, সেখান থেকে দুই কিলোমিটার পূর্বে ফসলি জমি ছিল। নদীর পূর্বে পাশে মিরসরাইয়ের লোকজন নদীর পাড়ে মাছ চাষ করছেন। তারা নদীর মধ্যে বাঁধ দিয়ে চর দখলে নেওয়ায় পানি পশ্চিম দিকে গড়িয়ে ফেনীর অংশে যাচ্ছে এবং নদী ভেঙে যাচ্ছে। বাঁকা নদী সোজা ও খনন করার জন্য একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছে। কিন্তু তা করছে না। দ্রুত কাজ করার জন্য অনুরোধ করছি।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাজেদুর রহমান বলেন, ‘মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর ভাঙন নিয়ে গবেষণা চলছে। নদীর পূর্ব পাশে বিশাল চর জেগেছে। সরকার এ চরকে কীভাবে সঠিক ব্যবহারে আনতে পারে সে বিষয়ে আমরা রিপোর্ট দেব। আশা করছি নদী খনন ও বাঁকা নদী সোজা করে নদী ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারব।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দলের প্রতি অনুগত থাকার অঙ্গীকার, জামায়াতে যোগ দিলেন মেজর (অব.) আ
বিএনপির সাবেক নেতা, সাবেক এমপি ও মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেছেন।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দলের প্রাথমিক সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি জামায়াতে যোগ দেন।
মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নীতি ও আদর্শ, দেশপ্রেম এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দলটির অবিচল অবস্থানের প্রতি গভীর আস্থা ও সন্তোষ প্রকাশ করেন।
দলটিতে যোগ দিয়ে তিনি ইসলাম ও ইসলামী মূল্যবোধ, দেশের স্বার্থ এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অবশিষ্ট জীবন অতিবাহিত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিয়ম-নীতি, আদর্শ, দলীয় শৃঙ্খলা ও আনুগত্যের প্রতি সর্বদা অনুগত থাকার অঙ্গীকার করেন।
ডা. শফিকুর রহমান এ সময় তাকে ফুল দিয়ে বরণ করেন এবং তার দীর্ঘ নেক হায়াত কামনা করেন।
যোগদান অনুষ্ঠানে সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল, সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীণ রাজনীতিক। বিএনপিতে থাকা অবস্থায় দলটির বিরুদ্ধে মন্তব্য করাসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি আলোচিত হন।
বিএনপি থেকে দুইবার কিশোরগঞ্জ-২ আসন থেকে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন//