আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা শুধু গতানুগতিক ব্যাংকিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। সমাজের ক্ষমতায়ন, উদ্ভাবনের প্রসার এবং ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য পরবর্তী প্রজন্মকে প্রস্তুত করে তুলতেও ভূমিকা রাখছে। দেশের তরুণ সমাজ এবং সম্ভাবনাময় উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা বিভিন্ন উদ্ভাবনী পণ্য এবং সেবা নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক রয়েছে এই যাত্রায় পথিকৃৎ হিসেবে।
ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ব্যাংকিং প্রয়োজনের বিষয়টি মাথায় রেখে ব্র্যাক ব্যাংকের উদ্ভাবনী পণ্য, সেবা এবং উদ্যোগ সম্পর্কে ব্যাংকটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘ব্র্যাক ব্যাংক সব সময় দেশের তরুণ সমাজের অপার সম্ভাবনায় বিশ্বাসী। তরুণ প্রজন্মের জন্য নেওয়া আমাদের অনেক উদ্যোগ দেশের ব্যাংকিং খাতেই প্রথম। আমরা বিশ্বাস করি, তরুণ প্রজন্মকে এখনই অর্থনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত করার উপযুক্ত সময়, যাতে তারা তাদের পূর্ণ সম্ভাবনার বিকাশ ঘটাতে পারেন। ’
মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপ ‘আস্থা’
ব্র্যাক ব্যাংকের ফ্ল্যাগশিপ ডিজিটাল অ্যাপ ‘আস্থা’ তরুণ প্রজন্মের জন্য সুযোগ-সুবিধার সমাহার নিয়ে এসেছে।  ‘আস্থা’ অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা নিজেদের স্মার্টফোন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি প্রদান, গ্যাজেট কেনা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও এমএফএসে ফান্ড ট্রান্সফার, লোনের জন্য আবেদন এবং ব্যালান্স রিচার্জসহ আরও অনেক কাজ সহজেই করতে পারছেন। ‘আস্থা’ অ্যাপের ফিচার ‘আস্থা লাইফস্টাইল’-এর মাধ্যমে  ওটিটি এন্টারটেইনমেন্ট, মিউজিক, ই-পেপার, ই-বুক, ক্যারিয়ার পরামর্শ এবং শিক্ষামূলক গাইডলাইনও উপভোগ করতে পারছেন।
আগামী স্টুডেন্ট ব্যাংকিং সার্ভিসেস
শিক্ষার্থীদের জন্য ব্র্যাক ব্যাংকের আছে ‘আগামী স্টুডেন্ট ব্যাংকিং সার্ভিসেস’। এটি স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজাইন করা একটি বিশেষ ফাইন্যান্সিয়াল সল্যুশন। শিক্ষার্থীদের জন্য এই সেভিংস অ্যাকাউন্টে রয়েছে ডিপিএস-এফডি খোলার সুবিধা এবং বিদেশে পড়তে যাওয়ার ক্ষেত্রে ক্রেডিট কার্ড, স্টুডেন্ট ফাইল ও স্টুডেন্ট লোনের সুবিধা। 
ফ্রিল্যান্সার ম্যাট্রিক্স অ্যাকাউন্ট
বাংলাদেশে দ্রুত বর্ধনশীল ফ্রিল্যান্সিং খাতের কথা মাথায় রেখে ব্র্যাক ব্যাংক চালু করেছে ‘ফ্রিল্যান্সার ম্যাট্রিক্স অ্যাকাউন্ট’। বিশেষভাবে তৈরি ফ্রিল্যান্সারদের জন্য এটিই দেশের প্রথম ব্যাংকিং সার্ভিস। সার্ভিসটি ফ্রিল্যান্সারদের ফরেন কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট আরও সহজ করার পাশাপাশি তাদের আন্তর্জাতিক লেনদেনে ইন্টারন্যাশনাল ডেবিট কার্ড সুবিধাও দিচ্ছে। 
মিলেনিয়াল টাইটেনিয়াম কার্ড
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো মিলেনিয়ালদের জন্য ব্র্যাক ব্যাংক চালু করেছে এক্সক্লুসিভ ক্রেডিট কার্ড– ‘মাস্টার কার্ড মিলেনিয়াল টাইটেনিয়াম কার্ড’।  কার্ডটি ডিজিটাল-ফার্স্ট মিলেনিয়ালদের অভিনব এবং বিশেষায়িত ব্যাংকিং সল্যুশন প্রদানের মাধ্যমে তাদের নানা রকম লাইফস্টাইল চাহিদা পূরণ করছে।
প্লাটিনাম ফ্লেক্সি ক্রেডিট কার্ড
তরুণ পেশাজীবীদের ট্রাভেল, ডাইনিং এবং শপিংয়ে বিশেষ ডিসকাউন্ট ও সহজ ইএমআই সুবিধাসহ আকর্ষণীয় লাইফস্টাইল সুবিধা দিচ্ছে এই ভিসা প্লাটিনাম ফ্লেক্সি ক্রেডিট কার্ড। 
ইয়াং লিডার্স প্রোগ্রাম
ইয়াং লিডার্স প্রোগ্রাম (ওয়াইএলপি) ব্র্যাক ব্যাংকের একটি ব্যতিক্রমধর্মী রিক্রুটমেন্ট প্রোগ্রাম। এটি নতুন গ্র্যাজুয়েটদের ক্লাসরুম প্রশিক্ষণ, মেন্টরশিপ এবং বিভিন্ন ব্যাংকিং ফাংশনে হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ দিয়ে থাকে। আর্থিক খাতে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গড়ে তোলার জন্য এই প্রোগ্রামটি ডিজাইন করা হয়েছে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রজন ম র দ র জন য র জন য ব

এছাড়াও পড়ুন:

জামিন দেওয়াকে কেন্দ্র করে আদালতে হাতাহাতি, স্টেনোগ্রাফার আহত

লক্ষ্মীপুরে আদালতে একটি জামিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে একজন বিচারকের আদালত বর্জন করেছে আইনজীবীরা। এ সময় আইনজীবীদের সাথে আদালতের কর্মচারীদের হাতাহাতি ও এজলাসে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এতে আহত হন ওই এজলাসের স্টেনোগ্রাফার আশরাফুজ্জামান। 

রবিবার (১৫ জুন) দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আদালত বর্জন করায় ভোগান্তিতে পড়েন বিচারপ্রার্থীরা। 

জানা গেছে, রায়পুর প্রিন্সিপাল কাজী ফারুকী স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আহম্মেদ কাউসার উদ্দিন জামান (৩৫) এর বিরুদ্ধে গত ৬ জুন সদর থানায় চুরির মামলা দায়ের করেন তারই প্রতিবেশি জেলা জজ আদালতের আইনজীবী আবু তৈয়ব। মামলায় আরও দুইজনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় আসামি কাউসার ও রুবেল গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। এরপর গত ১০ জুন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক এম সাইফুল ইসলাম তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এ নিয়ে তাৎক্ষণিক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দসহ আইনজীবীরা। 

মামলায় অভিযোগ আনা হয়, বাদী এবং আসামিদের মধ্যে পূর্ব বিরোধ রয়েছে। ৫ জুন দিবাগত গভীর রাতে আসামিরা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে বাদীর ভবনের সামনে থাকা একটি লোহার গেট কেটে নিয়ে এবং গেটের পিলার ভেঙে একটি পিক-আপ গাড়িতে করে রায়পুরের দিকে নিয়ে যায়। রায়পুর বাসাবাড়ি এলাকায় গেলে পিকআপ গাড়িটি টহল পুলিশ আটক করে। পরে গাড়িটি জব্দ ও চালক রুবেলকে আটক করে পুলিশ। মামলায় বাদী আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

আদালত সূত্র জানায়, গত ৯ জুন আসামিদের জামিন প্রার্থণা করা হয়। এতে আসামিপক্ষ উল্লেখ করেন, মামলার বাদি আইনজীবী হওয়ায় আদালতে তাদের পক্ষে কোন আইনজীবী জামিন শুনানিতে অংশ নিতে ইচ্ছুক নয়। আসামিরা তাদের পক্ষে আইনজীবী না পেয়ে জামিন শুনানির জন্য লক্ষ্মীপুর লিগ্যাল এইড অফিসে আইনি সহায়তা চান। সেখান থেকে দুইজন আইনজীবীকে শুনানি করতে বলা হলেও তারা অন্য আইজীবীদের দ্বারা হেনস্তার ভয়ে জামিন শুনানিতে অংশ নেননি। অন্যদিকে বাদী পক্ষের আইনজীবী আসামিদের বিরুদ্ধে জামিনের বিরোধিতা করেন। 

আদালত সূত্র আরও জানায়, আসামিরা ৯ জুন জামিনের জন্য আবেদন করলে পরদিন ১০ জুন নথি প্রাপ্ত সাপেক্ষে জামিন শুনানির জন্য রাখা হয় এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। 

বিষয়টি নিয়ে আদালতের পর্যালোচনায় উঠে আসে, ঈদুল আজহার বন্ধে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় এবং গ্রেপ্তারের পর থেকে আসামিরা জামিনের শুনানির সুযোগ পাননি। চারদিন তাদের হাজতবাস হয়েছে। ৬ জুন আসামি গ্রেপ্তার হলেও বাদী একজন আইনজীবী হওয়ায় আসামিরা জামিন শুনানির জন্য কোন আইনজীবী পাননি এবং লিগ্যাল এইড অফিসের আইনজীবীরাও শুনানিতে অংশ নিতে অনীহার বিষয়টি পরিষ্কার হওয়ায় ১৪ জুন পর্যন্ত ঈদের ছুটিতে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় জামিন অযোগ্য ধারায় গুরুতর অভিযোগ না থাকায় উভয় পক্ষের শুনানি অন্তে উভয় দরখাস্ত নিষ্পত্তি করা হলো। 

আদালত আসামিদের রিমান্ড না মঞ্জুর করে চারদিনের হাজতবাস ও ঈদ বিবেচনা করে আসামি কাউসার ও রুবেলকে ১০০ টাকা বন্ডে একজন গণ্যমান্য ব্যক্তির জিম্মায় জামিন মঞ্জুর করেন। তাদের জামিন হওয়ায় পর থেকেই আইনজীবীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করে। এ ঘটনায় তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে বিচারকের অপসারণের দাবি জানান।

ঈদের বন্ধ শেষে রবিবার (১৫ জুন) আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়। আইনজীবী সমিতি বৈঠক করে ওই আদালতের বিচারক এম সাইফুল ইসলামের আদালতের বর্জনের ঘোষণা দেন। এদিন সকাল থেকে ওই বিচারকের কক্ষে বিচারপ্রার্থীরা এসে উপস্থিত হয়। 

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বিচারপ্রার্থী জানান, আদালতের বিচারক এজলাসে বসা ছিলেন। এ সময় ৭-৮ জন আইনজীবী কক্ষে ঢুকে আদালত বর্জনের ঘোষণা দেন। এতে হট্টগোল দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিচারক আদালত কর্মচারীদের দরজা বন্ধ করে দিতে বলেন। এ সময় আইনজীবী ও কর্মচারীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আহত হন এজলাসের স্টেনোগ্রাফার আশরাফুজ্জামান। এতে বিচারকার্য সম্পন্ন না করেই এজলাস থেকে নেমে যান বিচারক। 

আহত আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘‘আইনজীবীরা হট্টগোল করায় বিচারকের নির্দেশে আমি দরজা বন্ধ করতে গেলে আমার ওপর আইনজীবীরা হামলা করে। এতে আমার বাম চোখের পাশে রক্তাক্ত জখম হয়।’’  

উপস্থিত আইনজীবীদের মধ্যে অ্যাডভোকেট আশিকুর রহমান জানান, কয়েকজন আইনজীবী এজলাসে গিয়ে আদালত বর্জনের বিষয়টি জানিয়ে দিতে গিয়েছেন। আদালত কর্মচারীরা উল্টো তাদের ওপর হামলা করেছে। এতে তিনি নিজেও আহত হন।

ঢাকা/লিটন/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ