বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা কর্মসূচিতে অর্থায়ন বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র
Published: 16th, February 2025 GMT
বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার উন্নয়নে বরাদ্দকৃত ২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের জন্য নির্ধারিত বড় ধরনের সহায়তা অর্থায়ন বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে ভারতের ২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কর্মসূচিও বাতিল ঘোষণা করা হয়।
রোববার ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন দপ্তর ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি (ডিওজিই) এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন এই দপ্তর বাজেট কমানোর অংশ হিসেবে অর্থায়ন বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন নতুন প্রশাসন আন্তর্জাতিক সহায়তা খাতে ব্যাপক কাটছাঁট করছে। তারই অংশ হিসেবে ভারত ও বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ তহবিল বাতিল করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি ও গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার উন্নতির লক্ষ্যে বরাদ্দ করা ২৯ মিলিয়ন ডলারের কর্মসূচি বাতিল হয়েছে। এছাড়া, ভারতের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর লক্ষ্যে বরাদ্দ ২১ মিলিয়ন ডলারের তহবিলও বাতিল করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভারত ছাড়াও এই অর্থায়ন বাতিলের প্রভাব পড়বে আরও কয়েকটি দেশে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দেশগুলো মোজাম্বিক ১০ মিলিয়ন ডলার, কম্বোডিয়া ২.
এছাড়া, বিশ্বের আরও কয়েকটি দেশ ও অঞ্চলের জন্য নির্ধারিত সহায়তাও বাতিল করা হয়েছে।
ইলন মাস্ক এই পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, “বাজেট কাটছাঁট না করলে আমেরিকা দেউলিয়া হয়ে যাবে”। তিনি মনে করেন, এটি প্রশাসনের পরিকল্পিত বাজেট সংস্কারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের কয়েকদিন পরেই ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা বাতিলের ঘোষণা আসে। যদিও সেই বৈঠকের পর দুই নেতা যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক জোরদারের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছিলেন, তবে ওই আলোচনায় এই সহায়তা বাতিলের বিষয়ে কোনো উল্লেখ ছিল না।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে, ২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকায় পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে কাজ করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ, ভারতসহ সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইলন ম স ক র র জন ত ক ব ত ল কর বর দ দ
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’