ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ঘুমের ওষুধ না দেওয়ায় অস্ত্র নিয়ে হামলা, ভাঙচুর
Published: 16th, February 2025 GMT
চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ঘুমের ওষুধ না দেওয়ায় ওষুধের দোকানে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। পিটিয়ে আহত করা হয়েছে ফার্মাসিস্ট ফজলুল হক ও মার্কেট মালিক আব্দুল জব্বারকে। শনিবার সন্ধ্যায় মধুপুর পৌর শহরের ময়মনসিংহ সড়কের সোহাগ ফার্মেসিতে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রতিবাদে আজ রোববার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। একই দিন মধুপুর থানায় ১২ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় অজ্ঞাতপরিচয়ে আসামি করা হয়ে ১৫-২০ জনকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পৌর শহরের সওদাগর পাড়ার মাহফুজ, জুয়েল, সুলতান, সোহাগ, নাদিমদের নেতৃত্ব ২০-২৫ জন কিশোর তরুণ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সোহাগ ফার্মেসিতে হামলা করে। হাতের অস্ত্র দিয়ে ওষুধের দোকানের মালিক ফজলুলকে আঘাত করে। ফেরাতে গিয়ে আহত হন মার্কেটের মালিক আব্দুল জব্বার। এ সময় হামলাকারীরা দোকানে ঢুকে তছনছ করে ও লুটপাট চালায়। মালিক ফজলুল হক দোকান ভাঙচুর, দেড় লাখ টাকা ও ওষুধপত্র লুটের অভিযোগ করেছেন।
আহত ফজলুল হকের ছেলে সোহাগ বলেন, ঘটনার আগে সওদাগর পাড়ার এক লোকের সঙ্গে সামান্য বিষয় নিয়ে তার কথা-কাটাকাটি হয়। পরে ফার্মেসিতে গিয়ে ঘুমের ওষুধ চায় ওই লোক। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ঘুমের ওষুধ দিতে অস্বীকৃতি জানালে বাগবিতণ্ডা শুরু করে। এক পর্যায়ে হামলা চালায়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে মধুপুর শিল্প ও বণিক সমিতির আয়োজনে প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে। সমিতির কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে বাসস্ট্যান্ডের আনারস চত্বরে গিয়ে সমাবেশ করা হয়। সমাবেশে বক্তব্য দেন সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এনামুল হক, সাধারণ সম্পাদক মিনজুর রহমান নান্নু সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদ সরকার, রবি প্রমুখ। দ্রুত দোষীদের আটক করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তারা। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।
সমাবেশে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য দেন মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমরানুল কবির। জড়িতদের আটকের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। মধুপুরকে যে কোনো মূল্যে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসমুক্ত রাখার ঘোষণা দিয়ে সকলের সহায়তা কামনা করেন এ পুলিশ কর্মকর্তা। অন্যদিকে ওষুধ ব্যবসায়ী সমিতিও শনিবার রাতেই মাইকিং করে দুই দিনের প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করে।
মামলার পর থেকে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার এড়াতে গা ঢাকা দিয়েছে আসামিরা। যে কারণে বক্তব্য জানতে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি।
মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমরানুল কবির জানান, দ্রুত বিচার আইনে মামলা হয়েছে। ১২ জনের নাম উল্লেখসহ ১৫-২০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয়ে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ক্ষমা চাওয়ার পরই খেলতে রাজি হয়েছিল পাকিস্তান
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে টসের আগ পর্যন্ত দারুণ নাটকীয়তায় ঘেরা ছিল পাকিস্তানের ড্রেসিং রুম। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি তোলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তবে আইসিসি সে দাবি আমলে নেয়নি। শেষ পর্যন্ত নিজের ভুল স্বীকার করে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগা ও দলের ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান পাইক্রফ্ট। এরপরই মাঠে নামতে রাজি হয় পাকিস্তান দল।
ঘটনার সূত্রপাত ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থেকে। টসের সময় দুই অধিনায়কের করমর্দন হয়নি। আরও বড় বিতর্ক তৈরি হয় ম্যাচ শেষে। জয়ী ভারতের ক্রিকেটাররা করমর্দন এড়িয়ে দ্রুত ড্রেসিং রুমে ফিরে যান। সালমান আলী আগার নেতৃত্বে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলেও সূর্যকুমার যাদব, শিভাম দুবেসহ পুরো ভারতীয় দল সেই শিষ্টাচার মানেনি।
আরো পড়ুন:
আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য
আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান
এমন ঘটনার প্রতিবাদে পাকিস্তান অধিনায়ক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বর্জন করেন। পরে আইসিসির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানায় পিসিবি। তাদের দাবি ছিল, ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ইচ্ছাকৃতভাবেই দুই অধিনায়কের হাত মেলানো আটকান, যা আইসিসির আচরণবিধি ও ক্রিকেটের স্পিরিটের পরিপন্থী।
যদিও আইসিসির ব্যাখ্যা ছিল ভিন্ন। তারা জানায়, এসিসির কর্মকর্তাদের নির্দেশেই কাজ করেছেন পাইক্রফ্ট। কিন্তু পাকিস্তান নড়েচড়ে বসে। এমনকি জানিয়ে দেয়, পাইক্রফ্ট দায়িত্বে থাকলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামবে না তারা। এই হুমকির কারণে ম্যাচের শুরুর সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় আয়োজকরা।
লাহোরে রমিজ রাজা, নাজাম শেঠিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। পরে সমঝোতার পথ খোঁজা হয়। অবশেষে পাইক্রফ্ট স্বীকার করেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণেই পরিস্থিতি এতদূর গড়ায়, এবং তিনি পাকিস্তান অধিনায়ক ও ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান। তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান দল।
বুধবার রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের সেই শেষ ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে সুপার ফোরে ভারতের সঙ্গী হয় সালমান-শাহীনরা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভারে ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় আরব আমিরাত।
ঢাকা/আমিনুল