দিনাজপুরের বিরামপুরে ভুট্টা ক্ষেত থেকে উদ্ধারকৃত রক্তমাখা লাঠি ও দড়ির রহস্য উদঘাটন করেছে বিরামপুর থানা পুলিশ। ভুট্টা ক্ষেতে পড়ে থাকা মোবাইলের সিমের সূত্র ধরে এর রহস্য উন্মোচন করে পুলিশ। মোবাইলের আসল মালিককে খুঁজে পেয়েছে পুলিশ।

এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় সাইদুল ইসলাম (৪৮) নামের এক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ।

রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আটক সাইদুল ইসলামকে জেলা আদালতের মাধ্যমে জেলখানায় পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মমতাজুল হক।

এর আগে শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে ওই এলাকার একটি ভুট্টা ক্ষেত থেকে রক্তমাখা লাঠি, দড়ি, সিমসহ মোবাইল ফোন ও বোতলভর্তি প্রেট্রোল পাওয়া যায়।

সাইদুল ইসলাম উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের দামারপাড়া গ্রামের হেসাব উদ্দিনের ছেলে। তিনি ১৭ বছর ধরে উপজেলার জোতবানী ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। সাইদুল উপজেলার কাটলা বাজারের একজন কসমেটিকস ব্যবসায়ী। তিনি মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

এ ঘটনায় আহত বুলবুল আহমেদ একই উপজেলার জোতবানী গ্রামের মাহাতাব উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি। আহত বুলবুল ব্যবসায়ী সাইদুলের দুঃসম্পর্কের মামা।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, শুক্রবার দুপুরে উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের পলি খিয়ারমামুদপুর গ্রামের একটি পাকা সড়কের পাশে রক্তমাখা দড়ি এবং দক্ষিণ মাধুপুর গ্রামে জনৈক আনোয়ার হোসেনের ভুট্টাখেত থেকে রক্তমাখা বাঁশের লাঠি ও সিমসহ একটি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়। এছাড়া একই সময়ে ওই পাকা সড়ক ও ভুট্টাখেতের মাঝামাঝি অংশের একটি আলপথের পাশে পেট্রোলভর্তি এক লিটারের দুটি বোতল জব্দ করে পুলিশ। 

তিনি বলেন, “ভুট্টাখেত থেকে উদ্ধার করা মুঠোফোনে থাকা সিমের মালিকের নাম-পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। সিমটি উপজেলার জোতবানী গ্রামের বুলবুলি বেগমের নামে নিবন্ধিত। শুক্রবার রাতে দক্ষিণ মাধুপুর গ্রামের ভুট্টাখেতে সাইদুল বুলবুলকে বাঁশের লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এতে সে রক্তাক্ত হয়েছে বলে জানায় আহত বুলবুল।”

ওসি মমতাজুল হক আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে সাইদুল ও বুলবুলের মধ্যে মাদকসংক্রান্ত বিষয়ে আগে থেকে দ্বন্দ্ব ছিল। এরই সূত্র ধরে শুক্রবার রাতে বুলবুলকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে ভুট্টাখেতে ডেকে নিয়ে লাঠি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে সাইদুল। তবে দুজন এখনো পুরোপুরি সত্য কথা বলেননি বলেই মনে হচ্ছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।

ঢাকা/মোসলেম/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁওয়ে শহিদুল ইসলাম শহিদকে হত্যার মামলায় অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ। এ মামলায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ২৩১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল হক গত বুধবার (৩০ জুলাই) আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। 

শনিবার (২ আগস্ট) চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব আহমেদ অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন

চবি ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলার সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা কোনো মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল করা হলো।

২০২৪ সালের ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগরীর বহদ্দারহাটে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় একাধিক পিস্তল, শটগানসহ ভারী অস্ত্র দিয়ে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিলেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা।

এর আগে নিউ মার্কেট মোড়ে সমাবেশ করে ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে ষোলশহর মেয়র গলিতে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বাসভবনে হামলা চালায়। এর পর বহদ্দারহাট মোড়-সংলগ্ন সাবেক সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনে হামলা হয়। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হন অটোরিকশাচালক শহিদ। তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শহিদের ভাই শফিকুল ইসলাম চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন।

আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ৩০২ ধারায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। উল্লেখযোগ্য অপর আসামিরা হলেন— চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, এম এ লতিফ, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, আবদুচ ছালাম, দিদারুল আলম দিদার, এস এম আল মামুন ও নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চসিকের সাবেক কাউন্সিলর এসরারুল হক, নুর মোস্তফা টিনু, সলিমুল্লাহ বাচ্চু, জিয়াউল হক সুমন ও নুরুল আজিম রনিসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

আগামী ২৫ আগস্ট বাদীর উপস্থিতিতে অভিযোগপত্রের ওপর শুনানি হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে। অভিযোগপত্রে ১২৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৮ জন সাধারণ মানুষ, ৯৯ জন পুলিশ ও ১ জন চিকিৎসক।

ঢাকা/রেজাউল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ