ভারতের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে আছেন পাঁচ স্পিনার ও চার পেসার। দুবাইয়ের কন্ডিশনের কথা ভেবে তিন পেসার ও তিন স্পিনার নিয়ে একাদশ সাজাতে পারে ভারত। 

এর মধ্যে পেস অলরাউন্ডার হার্ডিক পান্ডিয়ার একাদশে জায়গা অনেকটাই নিশ্চিত। রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে অক্ষর প্যাটেল বা ওয়াশিংটন সুন্দরের একজন থাকবেন একাদশে। অন্য স্পিনার কে হবেন? কুলদীপ যাদব নাকি বরুণ চক্রবর্তী? 

ভারতের সংবাদ মাধ্যম ক্রিকব্লগার দাবি করেছে, রোহিত শর্মার পছন্দ বাঁ-হাতি লেগ স্পিনার কুলদীপ যাদবকে। ওদিকে কোচ গৌতম গম্ভীর একাদশে বরুণ চক্রবর্তীকে রাখতে চান।

পূর্বে বরুণ চক্রবর্তীর সঙ্গে আইপিএল খেলেছেন গম্ভীর। কেকেআরের লেগ স্পিনারকে কোচিংও করিয়েছেন তিনি। গম্ভীরই নাকি বরুণকে নতুন করে ফর্মে ফিরিয়েছেন। তাকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছেন। যে কারণে ডানহাতি লেগ স্পিনারকে একাদশে রাখার পক্ষে গম্ভীর।

ভারতের একাদশে যদি কুলদীপ থাকেন সেক্ষেত্রে অক্ষর প্যাটেলের জায়গায় ওয়াশিংটন সুন্দরের সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তা না হলে তিন স্পিনারই হবেন বাঁ-হাতি। কিন্তু গম্ভীর আবার অক্ষরকে একাদশে রাখতে চান। মিডল অর্ডারে তাকে ছয় নম্বরে ব্যাটিংও করিয়েছেন গম্ভীর। যে কারণে অক্ষর-জাদেজা ও বরুণের জুটি গড়তে চান তিনি।

আরও একটি জায়গা নিয়ে আছে আলোচনা। একাদশে ঋষভ পান্ত থাকবেন নাকি কেএল রাহুল। তবে রাহুলকেই একাদশে রাখার পক্ষে কোচ-অধিনায়ক। তিনি ডানহাতি ও বাঁ-হাতি ব্যাটার সমন্বয় করে ব্যাটিং অর্ডার সাজানোর পক্ষে। যে কারণে হার্ডিকের আগে নামানো হতে পারে অক্ষরকে।  

ওপেনিংয়ে রোহিত শর্মা ও শুভমন গিল ডানহাতি। তিনে বিরাট কোহলি ডান হাতে ব্যাটিং করেন। চারে শ্রেয়াস আইয়ারের ব্যাটিং স্টাইলও একই। পাঁচে কেএল রাহুল খেললে তিনিও ডানহাতে ব্যাটিং করেন। গম্ভীর ছয়ে অক্ষর প্যাটেলকে খেলিয়ে সাতে হার্ডিক পান্ডিয়াকে খেলাতে চান। তেমনটা হলে আটে পুরোদস্তুর অলরাউন্ডার জাদেজাকে পাচ্ছে ভারত।

ভারতের সম্ভাব্য একাদশ: রোহিত শর্মা, শুভমন গিল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, কেএল রাহুল, অক্ষর প্যাটেল, হার্ডিক পান্ডিয়া, রবীন্দ্র জাদেজা, মোহাম্মদ শামি, হার্শিত রানা, বরুণ চক্রবর্তী।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গম ভ র

এছাড়াও পড়ুন:

এই সরকারও আমলাতন্ত্রের চাপে!

চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান নতুন যে জন-আকাঙ্ক্ষা তৈরি করেছে, সেখানে নিশ্চিত করেই জনপ্রশাসন সংস্কারের প্রশ্নটি নাগরিকদের কেন্দ্রীয় একটি চাহিদা। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার যেভাবে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মতোই পদ ছাড়া পদোন্নতি দিচ্ছে, তাতে উদ্বিগ্ন না হওয়ার কোনো কারণ নেই। কেননা, আগের সরকার কর্তৃত্ববাদী ও স্বৈরাচারী হয়ে উঠেছিল যে কয়টা স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে, তার অন্যতম আমলাতন্ত্র।

জনপ্রশাসনকে রাজনীতিকরণের বৃত্ত ভেঙে জনবান্ধব করার একটা বড় সুযোগ এনে দিয়েছিল অভ্যুত্থান। কিন্তু শুরু থেকেই অন্তর্বর্তী সরকার আমলাতন্ত্রের ওপর অতিনির্ভরশীল হয়ে ওঠায় সেই সুযোগ অনেকটাই হাতছাড়া হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের বিরোধিতার কারণে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের বড় কোনো সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে পারেনি সরকার। অন্যদিকে বেতন বাড়াতে গঠন করা হয়েছে বেতন কমিশন। কিছু মুখকে সরিয়ে দেওয়া ছাড়া জনপ্রশাসনে সেই পুরোনো চর্চা অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে পদ ছাড়া পদায়নের ক্ষেত্রে জনপ্রশাসনে যেভাবে আগের সরকারের চর্চার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়েছে, সেটা যারপরনাই দুঃখজনক।

প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, উপসচিব স্তরে যেখানে আগে থেকেই পদের চেয়ে ৬০০ কর্মকর্তা বেশি রয়েছেন, সেখানে আগস্ট মাসে নতুন করে ২৬৮ জনকে এই পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত সচিব পদেও পদোন্নতির আলোচনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক সরকারের আমলে জনপ্রশাসনে হরেদরে পদোন্নতি দেওয়ার অনেক নজির আছে। এর কারণ একটাই, আমলাতন্ত্রকে তুষ্ট রাখা। অন্তর্বর্তী সরকার এই চর্চায় ছেদ ঘটাতে পারবে, সেটাই সবাই প্রত্যাশা করেছিল।

পরিহাসের বিষয় হচ্ছে, জনপ্রশাসনে পদ ছাড়া পদোন্নতি দেওয়ার পর বেশির ভাগ কর্মকর্তাকে আগের জায়গাতেই রেখে দেওয়া হয়। এর মানে হচ্ছে তাঁরা আগের দায়িত্বই পালন করেন, কিন্তু মাঝখান থেকে বেতন-ভাতা বাড়ে। উপসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা তিন বছর চাকরি পাওয়ার পর বিনা সুদে গাড়ি কেনার জন্য ঋণসুবিধা পান। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে অবসরে যাওয়া সরকারি কর্মকর্তাদের যেভাবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, তার দৃষ্টান্তও খুব বেশি নেই। অবসরে যাওয়া প্রশাসন ক্যাডারের ‘বঞ্চিত’ ৭৬৪ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে ও অন্য ক্যাডারের ‘বঞ্চিত’ ৭৮ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়েছে।

জনপ্রশাসনের মেধাবী ও যোগ্য কর্মকর্তারা পদোন্নতি পেয়ে পরের ধাপে যাবেন, সেটা স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু পদ না থাকার পরও কেন পদায়ন করা হবে? এ ক্ষেত্রে সরকারকে পর্যালোচনা করে দেখা প্রয়োজন, জনপ্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে পদ বাড়ানো যায় কি না। আবার যেখানে এমনিতেই পদের বিপরীতে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সংখ্যা বেশি, সেখানে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া কতটা যৌক্তিক?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও জনপ্রশাসনবিশেষজ্ঞ সালাউদ্দিন এম আমিনুজ্জামান বলেছেন, জনপ্রশাসনে পদ ছাড়া পদোন্নতি দেওয়া যায় না। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে মেধাবীদের পদোন্নতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। এরপরও কেন এমন পদোন্নতি—সেই ব্যাখ্যায় তিনি বলেছেন, সরকার সম্ভবত আমলাতন্ত্রের চাপে রয়েছে। এই ধারণা শুধু তাঁর একার নয়, নাগরিক পরিসরের
বিস্তৃত একটি ধারণাও। অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই এর পরিষ্কার ব্যাখ্যা হাজির করা উচিত।

মাথাভারী আমলাতন্ত্র সরকারি সেবা নাগরিকের কাছে ঠিকভাবে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বড় একটা বাধা। অন্যদিকে সরকারকে এখানে বিশাল ব্যয়ের বোঝা বহন করতে হয়। ফলে মাঠ প্রশাসন থেকে শুরু করে সিনিয়র সচিব পর্যন্ত একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ ও গতিশীল জনপ্রশাসনই সবাই প্রত্যাশা করে। জনপ্রশাসনের সব স্তরে পদোন্নতি রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, মেধার ভিত্তিতেই হতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ