পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা চলতি মাসেই, বললেন ট্রাম্প
Published: 19th, February 2025 GMT
চলতি মাসেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
গতকাল মঙ্গলবার সৌদি আরবে মার্কিন ও রুশ কর্মকর্তারা তাঁদের প্রথম দফার আলোচনার জন্য মিলিত হওয়ার পর সাংবাদিকদের ট্রাম্প এ কথা বলেছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে নিয়ে আক্রমণাত্মক বক্তব্যও দিয়েছেন ট্রাম্প। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনা থেকে কিয়েভকে বঞ্চিত করার অভিযোগও খারিজ করেছেন তিনি।
ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের পাম বিচে নিজস্ব মালিকানাধীন মার-এ-লাগো রিসোর্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি, এ যুদ্ধ থামানোর মতো ক্ষমতা আমার আছে এবং আমি মনে করি কাজটা ভালোভাবে চলছে। তবে আজ আমি শুনলাম “ওহো, আমাদের তো আমন্ত্রণ জানানো হয়নি” এমন কথাটি। ভালো কথা, আপনারা তো তিন বছর সেখানে ছিলেন। আপনাদের উচিত ছিল এর অবসান ঘটানো।’
ট্রাম্প বলেছেন, রিয়াদে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের নেতৃত্বাধীন আলোচনার পর একটি সমঝোতা চুক্তিতে পৌঁছানোর ব্যাপারে তিনি ‘অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী’।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট মনে করেন রাশিয়া ‘হিংস্র বর্বরতা’ বন্ধ করতে চায়।
ট্রাম্পের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, যেকোনো শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবে রাশিয়া ইউক্রেনে নির্বাচনের ডাক দিলে তাঁর প্রশাসন সমর্থন করবে কি না। জবাবে ট্রাম্প বলেছেন, ইউক্রেনে জেলেনস্কির প্রতি মাত্র ৪ শতাংশ মানুষের সমর্থন আছে। তবে নিজের এ দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেননি তিনি। ট্রাম্প আরও উল্লেখ করেন, সামরিক আইনের আওতায় ইউক্রেনের নির্বাচনগুলো স্থগিত করা হয়েছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে কিয়েভ ইনস্টিটিউট অব সোসিওলজি একটি জনমত জরিপ চালিয়েছিল। ওই জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৫২ শতাংশ বলেছে, তাঁরা জেলেনস্কিকে ভরসা করেন, যা ওই বছরের ফেব্রুয়ারির জরিপের চেয়ে ১২ শতাংশ কম।
ট্রাম্প ‘হ্যাঁ, আপনারা জানেন, যখন আপনারা আলোচনার টেবিলে বসতে চান.
ট্রাম্পের এ বক্তব্যের আগে জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনকে বাদ রেখে ওয়াশিংটন ও মস্কো যেন চুক্তির শর্তাবলি নির্ধারণ না করে তা নিশ্চিত করতে চায় কিয়েভ।
তুরস্ক সফরকালে সাংবাদিকদের জেলেনস্কি বলেন, ‘কীভাবে ইউক্রেনের যুদ্ধ শেষ করা যায় সে বিষয়ে ইউক্রেনকে বাদ রেখে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।’ তুরস্ক সফরে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন জেলেনস্কি।
রিয়াদে মঙ্গলবারের আলোচনার সময়, রুবিও এবং লাভরভ যত দ্রুত সম্ভব ইউক্রেনের সংঘাতের অবসানের লক্ষ্যে কাজ শুরু করার জন্য নিজ নিজ পক্ষ থেকে উচ্চপর্যায়ের দল নিযুক্ত করার ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।