নির্বাচনে হেরে অভ্যুত্থানচেষ্টা, বলসোনারোর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের
Published: 19th, February 2025 GMT
ব্রাজিলের কট্টর ডানপন্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ এনেছেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল। ২০২২ সালের নির্বাচনে নিজের পরাজয়ের পর অভ্যুত্থানের চেষ্টা চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। বলসোনারোর পাশাপাশি আরও ৩৩ ব্যক্তির বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আনা হয়েছে।
৬৯ বছর বয়সী বলসোনারো এবং ওই ৩৩ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৫টি অভিযোগ আনা হয়েছে। এগুলোর সবই বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভাকে ক্ষমতা গ্রহণ থেকে দূরে রাখাসংক্রান্ত।
ব্রাজিলের অ্যাটর্নি জেনারেল পাওলো গোনেত ব্রাঙ্কো বিভিন্ন নথি ও আদান-প্রদানকৃত বার্তার ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগগুলো দায়ের করেছেন। তাঁর কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অভিযোগগুলোর মধ্যে ‘সশস্ত্র অপরাধমূলক সংগঠন’ পরিচালনাসংক্রান্ত একটি অভিযোগ আছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, বলসোনারো এবং তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ওয়াল্টার ব্রাগা নেতোর নেতৃত্বে সংগঠনটি পরিচালিত হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বেসামরিক ও সামরিক কর্মীরাসহ অন্য ব্যক্তিদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে সমন্বিতভাবে ২০২২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ ফলাফলকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।
কেন্দ্রীয় পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া ৮০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে কৌঁসুলির কার্যালয় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুই বছরের তদন্তের পরে গত বছর ওই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। এতে বলা হয়েছে, ক্ষমতাকে আঁকড়ে রাখতে ‘পুরোপুরি সচেতনভাবে ও সক্রিয়ভাবে’ ষড়যন্ত্রে অংশ নিয়েছিলেন বলসোনারো।
বলসোনারো তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছেন। বলেছেন, তিনি নিগ্রহের শিকার।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে সিনেটর ফ্লাভিও বলসোনারো লিখেছেন, ‘অভ্যুত্থানচেষ্টার অভিযোগটি মনগড়া। বলসোনারোর বিরুদ্ধে একেবারেই কোনো প্রমাণ নেই।’
বলসোনারোকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করার ঘোষণা আসার পর তাঁর আইজীবী দল এ ব্যাপারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে তাঁরা বলেছেন, বলসোনারো কখনোই এমন পরিকল্পনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না।
ব্রাজিলের অ্যাটর্নি জেনারেল ব্রাঙ্কোর কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ইলেকট্রনিক ভোটিং ব্যবস্থায় আক্রমণের মধ্য দিয়ে ২০২১ সালে এ ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল। ২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট গ্রহণের সময় বিরোধী দলের প্রার্থীদের ভোট দেওয়া থেকে ভোটারদের বিরত রাখার জন্য নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে মোতায়েন করা হয়েছিল।
সুপ্রিম কোর্ট এখন অভিযোগগুলো যাচাই করবে এবং বলসোনারোর বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম শুরু করবে কি না, সে সিদ্ধান্ত নেবে।
অভিযোগ দায়েরের কয়েক ঘণ্টা আগে, বলসোনারো ব্রাসিলিয়ায় সাংবাদিকদের বলেছেন, অভিযুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে তাঁর কোনো ধরনের মাথাব্যথা নেই।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আসামে বিস্ফোরণের ষড়যন্ত্র মামলায় পরেশ বড়ুয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
ভারতের আসামে গত বছর একাধিক ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণ ঘটানোর ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে উলফা (আই) নেতা পরেশ বড়ুয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ। সংস্থাটি শনিবার গুয়াহাটির আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
পরেশ বড়ুয়া নিষিদ্ধঘোষিত বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (ইনডিপেনডেন্ট ) চেয়ারম্যান এবং স্বঘোষিত কমান্ডার ইন চিফ। চার্জশিটভুক্ত অন্য দুজন হলেন অভিজিৎ গগৈ ও জাহ্নু বড়ুয়া।
গত বছর আসামে স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন ব্যাহত করতে গুয়াহাটির দিসপুর লাস্ট গেটে একাধিক আইইডি পুঁতে রাখা হয়েছিল। এর সঙ্গে এই তিনজনের যোগসূত্র পাওয়া গেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এ ঘটনা তদন্তের ভার নেয় এনআইএ।
এনআইএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হতাহত করা, সম্পত্তি ধ্বংস করা, ভারতের ঐক্য ও অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি তৈরি এবং মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর উদ্দেশ্যে আইইডি স্থাপন করা হয়েছিল।