চার বছরের বেশি সময় ধরে আড়ালে আছেন পপি। একসময় শোনা যায়, বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন এই চিত্রনায়িকা। সম্প্রতি একটি জিডিকে ইস্যু করে আবার আলোচনায় পপি। তখনই জানিয়েছিলেন, বিয়ে-স্বামী-সন্তান নিয়ে আপাতত কিছুই বলবেন না। অবশেষে মুখ খুললেন এই তারকা।
প্রথম আলো বিনোদনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিয়ে, মাতৃত্ব ও সিনেমা নিয়ে কথা বলেন এই অভিনেত্রী। জীবনের এ পর্যায়ে এসে নিজের অনুভূতি, অভিজ্ঞতার কথা জানালেন সাক্ষাৎকারে। বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে আমি ভালোবাসার পাগল। অনেকে ভাবত আমি অহংকারী; কিন্তু মোটেও আমি তা ছিলাম না। সেই ভালোবাসা যখন আমার পরিবার থেকে না পেয়ে স্বামী-সন্তানের কাছ থেকে পাই, নীরবে কাঁদি। পৃথিবীতে এখন নিজেকে সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে করি।’

বিভীষিকাময় পরিস্থিতি আমাদের বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে: পপি

দর্শকের কাছ থেকে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা পেয়েছেন জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘এই চলচ্চিত্র অঙ্গনের প্রত্যেকটা মানুষ, এফডিসির ইটপাথরের কাছে কৃতজ্ঞ। কারণ, আমি যা-ই হয়েছি, ইন্ডাস্ট্রির মানুষের সাপোর্ট না পেলে এতটা সাফল্য পেতাম না। ভালো ভালো ছবিতে কাজ করতে পারতাম না। ভালো কাজ না করলে অর্থনৈতিকভাবে সফল হতে পারতাম না। আমি ফিল্ম ব্যাকগ্রাউন্ডের মেয়ে নই। আমাকে নিজে থেকে সব শিখতে হয়েছে। অল্প বয়সে সিনেমায় অভিনয় শুরু করি। তখনই আয়রোজগার শুরু। সত্যি বলতে, পরিবারের কোনো ভালোবাসা পাইনি। তাদের কাছে আমি টাকা কামানোর মেশিন ছিলাম। অথচ আমি ভাইবোনদের নিঃস্বার্থভাবে ভালোবেসেছি। নিজের কোনো শখ-আহ্লাদও পূরণ করিনি।’

যাদের জন্য এত করলাম, তাদের হিংসার আগুনে আমি পুড়ে মরছি: পপিবছরের পর বছর ‘নিখোঁজ’ পপির খবর মিলেছে জিডি সূত্রে

দীর্ঘ সাক্ষাৎকারের কথা প্রসঙ্গে পপি জানান, তিনি তাঁর মতো সংসার শুরু করেন। স্বামীর সঙ্গে ধানমন্ডিতে থাকতেন। তাঁর ভাষ্যে, ‘আমার সংসার বাঁচানোর জন্য আমি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরপর আমার স্বামী যেভাবে চেয়েছে, সেভাবেই জীবনটাকে গুছিয়ে নিয়েছি। আমি কিন্তু অনেকবার বলেছিও, বিয়ের পর আমি সিনেমা ছেড়ে দেব। আমার স্বামী না চাইলেও সিনেমায় কাজ করব না।’

পপির সঙ্গে তাঁর মা ও বোনের দ্বন্দ্বের শুরু, সমাধান কীপপির বিরুদ্ধে অভিযোগ: সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে যা জানাল পুলিশ

তিনি বলেন, ‘ফিল্মের কাজে সবার সঙ্গে মিশেছি ঠিকই, কিন্তু আপনজন কেউ ছিল না। বরাবরই আমি পরিবার–অন্তঃপ্রাণ মানুষ। অথচ এই আমার কাছে পরিবারের সবাই অচেনা হয়ে গেল। সম্পত্তি ও টাকাপয়সা নিয়ে জটিলতা শুরু হয়। জটিলতার এই পুরো সময়ে আদনান আমাকে ছায়ার মতো আগলে রেখেছে। কোনো জটিলতাই আমাকে স্পর্শ করতে দেয়নি। আমার হাতটা শক্ত করে ধরে বলেছিল, “আমি আছি, নো টেনশন।” ওই সময়ে এমন একজন বন্ধুকে যদি না পেতাম, আমার জীবনটাই বিপন্ন হয়ে যেত।

২০২০ সালের দিকে আবার জটিলতা শুরু হয়। তখনো ভাবলাম, আমাকে মা-বোনেরা বাঁচতে দেবে না। বাসা থেকে বের হয়ে পড়ি। যোগাযোগ করি আদনানের সঙ্গে। এরপর আমার জায়গাজমির দলিল, ব্যাংকের কাগজপত্র ও প্রয়োজনীয় সব ডকুমেন্ট পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার করি। বলতে পারেন, রীতিমতো জীবন বাঁচাতে বাসা থেকে পালিয়ে গেলাম। তখন আমার সামনে দুটি পথ খোলা, হয় আত্মহত্যা করতে হতো, নয়তো ওদের হাতে খুন হয়ে যেতে.

..। আদনানই তখন আমাকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছে। পরিস্থিতির কারণে আমরা বিয়ে করতে বাধ্য হই। ২০২০ সালের নভেম্বরে বিয়ে করি বাসায় কাজি ডেকে।’
(পূর্ণাঙ্গ সাক্ষাৎকারটি কাল প্রকাশ করা হবে)

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম র স পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রেন থেকে পড়ে ৮ দিন ধরে হাসপাতালে ছেলে, ফেসবুকে ছবি দেখে ছুটে এলেন মা

প্রতিদিনের মতো কাজ শেষে গতকাল সোমবার বাসায় ফিরছিলেন নাজমা বেগম। ঢাকার টঙ্গী এলাকায় থাকেন তিনি। পরিচিত এক ব্যক্তি তাঁকে হঠাৎ ফোন করে জানান, তাঁর নিখোঁজ ছেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। দ্রুত ওই ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করেন নাজমা। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিও দেখান নাজমাকে। সে ভিডিওতে দেখতে পান, তাঁর ১০ দিন ধরে নিখোঁজ ছেলে আবদুল্লাহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।

ছেলের খোঁজ পেয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ছুটে আসেন তিনি। রেলস্টেশন থেকে সরাসরি চলে আসেন চমেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগে। এখানেই ৮ দিন ধরে ভর্তি আবদুল্লাহ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৮ সেপ্টেম্বর আহত অবস্থায় আবদুল্লাহকে হাসপাতালে আনা হয়। সে সময় তার নাম-ঠিকানা কিছুই জানা যায়নি। অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবেই হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডে নেওয়া হয় তাকে। পরদিন তার অস্ত্রোপচার হয়। গত শনিবার আবদুল্লাহর জ্ঞান ফেরে। এরপর নিজের ও বাবা-মায়ের নাম আর বাসার ঠিকানা জানায় সে।

চিকিৎসকেরা সেই সূত্রে ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ নানাভাবে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেন। ফেসবুকে আবদুল্লাহর ছবি দিয়ে খোঁজ চাওয়া হয় বাবা-মায়ের। সেই ছবি পরিচিতদের মাধ্যমে দেখেন নাজমা বেগম। এরপর ছুটে আসেন চট্টগ্রামে। হাসপাতালে এসেই নার্সদের সহায়তায় যান নিউরোসার্জারি বিভাগে। সেখানে হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ)চিকিৎসাধীন আবদুল্লাহকে দেখেন।

আজ বিকেলে হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডের সামনে কথা হয় আবদুল্লাহর মা নাজমা বেগমের সঙ্গে। সকালেই চট্টগ্রাম পৌঁছেছেন তিনি। জানালেন, তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে ১০ বছর বয়সী আবদুল্লাহ সবার বড়। ছোট মেয়ের বয়স পাঁচ ও আরেক ছেলের বয়স দুই। আবদুল্লাহ সুস্থ আছে জেনে স্বস্তি পেলেও দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি। কারণ, এটিই প্রথমবার নয়, এর আগেও কয়েকবার ঘর থেকে কিছু না বলে বেরিয়ে যায় সে।

নাজমা বেগম বলেন, প্রায়ই আবদুল্লাহ ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। এদিক–সেদিক চলে যায়। পরে আবার ফিরে আসে। এর আগেও ঢাকার আশপাশে এদিক-সেদিক চলে গিয়েছিল সে। ৬ সেপ্টেম্বর সে ভাত খাওয়া থেকে উঠে হঠাৎ চলে যায়। সে ফিরে আসবে এই আশায় থানায় যাননি। কিন্তু ১০ দিন হয়ে যাওয়ায় এদিক–সেদিক খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। ঢাকায় বিভিন্ন স্টেশনে ছেলের খোঁজে গেছেন বলে জানান নাজমা।

চমেক হাসপাতালে চিকিৎসকেরা আবদুল্লাহর বরাত দিয়ে জানান, বাসা থেকে বেরিয়ে সে কক্সবাজার যাচ্ছিল। পথে চট্টগ্রামে ট্রেন থামলে সে ট্রেন থেকে পড়ে যায়। চিকিৎসার পর এখন সুস্থ হয়ে উঠছে সে।

চিকিৎসকেরা জানান, আবদুল্লাহকে যখন আনা হয় তার মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল। তার মাথার এক পাশের হাড় ভেঙে গিয়েছিল। ট্রেন থেকে পড়ার কারণে মাথায় আঘাত লাগে। হাড়ের কিছু অংশ মস্তিষ্কের ভেতরে গেঁথে যায়। অস্ত্রোপচারও সফল হয়েছে। তবে জ্ঞান না ফেরায় তার পরিচয় জানা যায়নি। জ্ঞান ফেরার পর তার তথ্য নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করা হয়।

শুরু থেকে আবদুল্লাহর অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসা করেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিউরোসার্জারি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক মু. ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, ‘তার হাড় ভেঙে মস্তিষ্কের ভেতরে চলে গিয়েছিল। অস্ত্রোপচারের পর স্বাভাবিকভাবে সেটি জোড়া দেওয়া হয়েছে। এখন সে পুরোপুরি সুস্থ। তাকে আমরা আজ-কালের মধ্যে ডিসচার্জ করে দেব। শিশুকে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিতে পেরে আমরাও আনন্দিত।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সত্যি কি ‘মণিহার’ বন্ধ হচ্ছে
  • চট্টগ্রাম চেম্বারে ‘পরিবারতন্ত্র’ পুনর্বহালের অভিযোগ
  • পাকিস্তানি খেলোয়াড়ের থ্রো লাগল আম্পায়ারের মাথায়, এরপর যা হলো
  • ফের রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার 
  • আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে: অঙ্কিতা
  • সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপলেন ট্রাম্প
  • ‘আমি থানার ওসি, আপনার মোবাইল হ্যাকড হয়েছে’
  • কালিয়াকৈরে এক মাসে ২০ ডাকাত গ্রেপ্তার 
  • জুভেন্টাস-বরুশিয়ার ৮ গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচে জয় পায়নি কেউ
  • ট্রেন থেকে পড়ে ৮ দিন ধরে হাসপাতালে ছেলে, ফেসবুকে ছবি দেখে ছুটে এলেন মা