তাদের কাছে আমি টাকা কামানোর মেশিন ছিলাম
Published: 19th, February 2025 GMT
চার বছরের বেশি সময় ধরে আড়ালে আছেন পপি। একসময় শোনা যায়, বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন এই চিত্রনায়িকা। সম্প্রতি একটি জিডিকে ইস্যু করে আবার আলোচনায় পপি। তখনই জানিয়েছিলেন, বিয়ে-স্বামী-সন্তান নিয়ে আপাতত কিছুই বলবেন না। অবশেষে মুখ খুললেন এই তারকা।
প্রথম আলো বিনোদনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিয়ে, মাতৃত্ব ও সিনেমা নিয়ে কথা বলেন এই অভিনেত্রী। জীবনের এ পর্যায়ে এসে নিজের অনুভূতি, অভিজ্ঞতার কথা জানালেন সাক্ষাৎকারে। বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে আমি ভালোবাসার পাগল। অনেকে ভাবত আমি অহংকারী; কিন্তু মোটেও আমি তা ছিলাম না। সেই ভালোবাসা যখন আমার পরিবার থেকে না পেয়ে স্বামী-সন্তানের কাছ থেকে পাই, নীরবে কাঁদি। পৃথিবীতে এখন নিজেকে সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে করি।’
দর্শকের কাছ থেকে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা পেয়েছেন জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘এই চলচ্চিত্র অঙ্গনের প্রত্যেকটা মানুষ, এফডিসির ইটপাথরের কাছে কৃতজ্ঞ। কারণ, আমি যা-ই হয়েছি, ইন্ডাস্ট্রির মানুষের সাপোর্ট না পেলে এতটা সাফল্য পেতাম না। ভালো ভালো ছবিতে কাজ করতে পারতাম না। ভালো কাজ না করলে অর্থনৈতিকভাবে সফল হতে পারতাম না। আমি ফিল্ম ব্যাকগ্রাউন্ডের মেয়ে নই। আমাকে নিজে থেকে সব শিখতে হয়েছে। অল্প বয়সে সিনেমায় অভিনয় শুরু করি। তখনই আয়রোজগার শুরু। সত্যি বলতে, পরিবারের কোনো ভালোবাসা পাইনি। তাদের কাছে আমি টাকা কামানোর মেশিন ছিলাম। অথচ আমি ভাইবোনদের নিঃস্বার্থভাবে ভালোবেসেছি। নিজের কোনো শখ-আহ্লাদও পূরণ করিনি।’
যাদের জন্য এত করলাম, তাদের হিংসার আগুনে আমি পুড়ে মরছি: পপিবছরের পর বছর ‘নিখোঁজ’ পপির খবর মিলেছে জিডি সূত্রেদীর্ঘ সাক্ষাৎকারের কথা প্রসঙ্গে পপি জানান, তিনি তাঁর মতো সংসার শুরু করেন। স্বামীর সঙ্গে ধানমন্ডিতে থাকতেন। তাঁর ভাষ্যে, ‘আমার সংসার বাঁচানোর জন্য আমি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরপর আমার স্বামী যেভাবে চেয়েছে, সেভাবেই জীবনটাকে গুছিয়ে নিয়েছি। আমি কিন্তু অনেকবার বলেছিও, বিয়ের পর আমি সিনেমা ছেড়ে দেব। আমার স্বামী না চাইলেও সিনেমায় কাজ করব না।’
পপির সঙ্গে তাঁর মা ও বোনের দ্বন্দ্বের শুরু, সমাধান কীপপির বিরুদ্ধে অভিযোগ: সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে যা জানাল পুলিশতিনি বলেন, ‘ফিল্মের কাজে সবার সঙ্গে মিশেছি ঠিকই, কিন্তু আপনজন কেউ ছিল না। বরাবরই আমি পরিবার–অন্তঃপ্রাণ মানুষ। অথচ এই আমার কাছে পরিবারের সবাই অচেনা হয়ে গেল। সম্পত্তি ও টাকাপয়সা নিয়ে জটিলতা শুরু হয়। জটিলতার এই পুরো সময়ে আদনান আমাকে ছায়ার মতো আগলে রেখেছে। কোনো জটিলতাই আমাকে স্পর্শ করতে দেয়নি। আমার হাতটা শক্ত করে ধরে বলেছিল, “আমি আছি, নো টেনশন।” ওই সময়ে এমন একজন বন্ধুকে যদি না পেতাম, আমার জীবনটাই বিপন্ন হয়ে যেত।
২০২০ সালের দিকে আবার জটিলতা শুরু হয়। তখনো ভাবলাম, আমাকে মা-বোনেরা বাঁচতে দেবে না। বাসা থেকে বের হয়ে পড়ি। যোগাযোগ করি আদনানের সঙ্গে। এরপর আমার জায়গাজমির দলিল, ব্যাংকের কাগজপত্র ও প্রয়োজনীয় সব ডকুমেন্ট পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার করি। বলতে পারেন, রীতিমতো জীবন বাঁচাতে বাসা থেকে পালিয়ে গেলাম। তখন আমার সামনে দুটি পথ খোলা, হয় আত্মহত্যা করতে হতো, নয়তো ওদের হাতে খুন হয়ে যেতে.
(পূর্ণাঙ্গ সাক্ষাৎকারটি কাল প্রকাশ করা হবে)
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকতে না পেরে বিদেশ চলে যান পিয়া বিপাশা
লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে পা রাখেন পিয়া বিপাশা। এরপর অভিনয় করেছেন মিউজিক ভিডিও, নাটক ও সিনেমায়। কিন্তু হুট করেই নাই হয়ে গেলেন। পরে জানা গেল অভিনেত্রী আমেরিকায়। গেল পাঁচ বছর সেখানেই বাস করছেন তিনি। সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রবাসজীবনসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
পিয়া বিপাশা জানান, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভালোবাসা তৈরি হয়। তারপর তাঁরা বিয়ে করেন। দুজনে মিলে বিয়ে করলেও আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেওয়ার ইচ্ছা।
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভালো লাগত না। কারণ, লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটা সিনেমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়নি। এরপর আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসলে কাজ করতে চেয়েছিলাম টাকা কামানোর জন্য। কাজ না করতে পারলে টাকা কামাব কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।’
বিপাশার কথায়, ‘টাকা রোজগারের জন্য আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেছিলাম। কারণ, আমার একটা মেয়ে ছিল। মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকার বিষয় ছিল। পরে দেখলাম, যেভাবে কাজ হয়, আমাকে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমেরিকায় চলে আসার। এখানে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। অনেক টাকাও আয় করছি।’
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন আমার এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও হয়। যতটুকুই করি, আমার মেয়ে ও হাজব্যান্ড ওরাই বলে। আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি। টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, ভালো স্বামী—সবই আমার হয়েছে। টাকা নিয়ে এখন কোনো চিন্তা নেই আমার—যা আয় করি, তা ব্যয় করার সময় পাই না।’
পিয়া বিপাশা জানান, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের যেসব পোস্ট করেন, তার জন্য বেশ ভালো সম্মানী পান। তাঁর দাবি, এই সম্মানী কখনো দুই হাজার ডলার, আবার কখনো তিন হাজার ডলারের মধ্যে।
২০১৩ সালে ‘দ্বিতীয় মাত্র’ নাটকে তাহসান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করতেন। বই পড়ার সময় গল্পের নায়িকার চরিত্রে নিজেকে কল্পনাও করতেন। বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছিলেন। ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’ নামের সেই ছবি মুক্তি পায়। এরপর ‘রাজনীতি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। পরে সেই ছবিতে পিয়া বিপাশার পরিবর্তে অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন।