কবিতাপ্রেমীদের আনন্দ দেবে ‘অসীমের ভেলা’
Published: 20th, February 2025 GMT
হাজার বছর ধরে বাঙালি তার মনের ভাব ও সৃষ্টিশীলতাকে যেভাবে প্রকাশ করেছে এবং সময়ে–সময়ে বাংলা কবিতা যেভাবে বাঁক নিয়েছে, তার এক অসাধারণ সংকলন ‘অসীমের ভেলা’। যা পড়ে কবিতাপ্রেমীরা আনন্দ পাবেন। কবিতা সংগ্রহটি নিয়ে আলোচনায় এভাবেই বক্তারা নিজেদের ভাবনাগুলো জানান। যেখানে কবিতা নিয়ে আলোচনার সঙ্গে ছিল কবিতা আবৃত্তিও।
গতকাল বুধবার রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে বাতিঘরের বিপণন কেন্দ্রে আয়োজিত হয় আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ সম্পাদিত ‘অসীমের ভেলা’ শীর্ষক সংকলনের পাঠ উন্মোচন। বাতিঘরের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সাহিত্য জগতের নানাজন উপস্থিত ছিলেন।
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ নিজের এই সংকলন সম্পর্কে বলেন, তিনি যে কদিন বেঁচে থাকবেন, তত দিন এই সংকলনের সংস্কার চলতে থাকবে। তিনি কবিতা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোনো নীতি–আদর্শ, আধুনিক–অনাধুনিক, কোনো দলাদলি বিবেচনায় নেননি; বরং যেটাকে শিল্প মনে করেছেন, সেটাই নিয়েছেন।
নারী কবিদের কবিতা স্থান পাওয়া প্রসঙ্গে এই শিক্ষাবিদ বলেন, পরবর্তী সংস্করণে বেগম রোকেয়া, কামিনী রায়সহ অন্য কবিদের কবিতা রাখবেন। তবে সেটা নারী বিবেচনায় নয়, কবিতার গুণেই রাখবেন। দলমত, ধারা নয়, শিল্পগুণই তাঁর কাছে মুখ্য।
তাঁর সংকলনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা সবচেয়ে বেশি, এ প্রসঙ্গে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, জীবনের প্রতিটা মুহূর্তে রবীন্দ্রনাথের কবিতার লাইন রয়েছে। তিনি রবীন্দ্রনাথের একটি কবিতা পড়েও শোনান। সংকলন প্রসঙ্গে বলেন, প্রতিদিন সকালে উঠে তিনি এই সংকলন থেকে দু–তিনটা কবিতা পড়েন, এতে তাঁর দিনটা সুন্দর হয়ে যায়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক ও কবি সাজ্জাদ শরিফ হাজার বছর ধরে বাঙালির মনের ভাব ও সৃষ্টিশীলতার যে প্রকাশ, তা এই সংকলনের মধ্যে অনেকটা প্রকাশ পেয়েছে। বাংলা কবিতার নানা সংকলন রয়েছে। ভালো যেসব সংকলনের কথা সামনে আসে, তাতে অবশ্য বাংলাদেশ কম থাকে; কিন্তু এই অসীমের ভেলায় সেটা নেই।
সাজ্জাদ শরিফ দুটো কবিতা পড়ে শোনান। এ ছাড়া তিনি বলেন, এই সংকলন একটি অসামান্য কাজ। এটা সামনের সংস্করণের মধ্য দিয়ে আরও সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে বলে তিনি আশা করেন।
লেখক ও গবেষক কুদরত ই খুদা বলেন, কবিতা পড়ে যাঁরা আনন্দ পেতে চান, তাঁদের জন্য এটা ভালো সংকলন। এতে অহেতুক পাণ্ডিত্য ও তাত্ত্বিক বিষয় নেই। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের মৌলিক বইয়ের মতোই এটা পড়া যায়। বাংলা কবিতা কখন ভাষাগতভাবে, চিন্তাগতভাবে কীভাবে বাক্ নিচ্ছে, তার ধারাবাহিক ইতিহাস পাওয়া যাবে এই সংকলনে।
আরেক গবেষক আসলাম আহসান বলেন, এই সংকলন দল–মত রাজনীতির ঊর্ধ্বে। সংকলনটি প্রাচীনযুগ, মধ্যযুগ এবং আধুনিক যুগে ভাগ করা। তিনি আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের এই সংকলনপ্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা উল্লেখ করে বলেন, এটা তাঁর জন্য একটা শিক্ষাসফর। তিনি নিজেও সংকলন থেকে কবিতা পড়ে শোনান।
পাঠ উন্মোচনের ফাঁকে ফাঁকে কবিতা আবৃত্তি করেন আবৃত্তি শিল্পী রাশেদ হাসান এবং অভিনেত্রী ত্রপা মজুমদার। শুরুতে সূচনা বক্তব্যে সংকলনের পেছনের গল্প তুলে ধরেন বাতিঘরের স্বত্বাধিকারী দীপঙ্কর দাশ। উপস্থিত ছিলেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদারসহ সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনের নানাজন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স কলন র
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলের আগ্রাসনের নিন্দা জানাল ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাস
ইসরায়েলের হামলার ও ক্ষমতার অপব্যবহারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ঢাকায় অবস্থিত ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের দূতাবাস।
সোমবার (১৬ জুন) এক বিবৃতিতে দূতাবাস জানিয়েছে, নিরীহ নারী ও শিশুদের শহীদ করার মতো অমানবিক ঘটনার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা জরুরি।
ইরানি দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই আগ্রাসন জাতিসংঘের সনদের দুই নম্বর ও চার নম্বর অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করেছে। বিশেষ করে এটি ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের জাতীয় সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে সরাসরি সামরিক আগ্রাসনের শামিল।
আরো পড়ুন:
প্যারিস এয়ার শো-তে ইসরায়েলি অস্ত্র নির্মাতারা নিষিদ্ধ
বিশ্লেষণ: ইসরায়েলিরা এখন বুঝতে পারছে ফিলিস্তিনি ও লেবানিজরা কী ভোগ করছে
বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়, জাতিসংঘ সনদের ৫১ নম্বর অনুচ্ছেদের আলোকে ইরানের উপযুক্ত জবাব দেওয়ার অধিকার সংরক্ষণ করে।
দূতাবাসের বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, জাতিসংঘ, ইসলামি দেশগুলো এবং নিরপেক্ষ আন্দোলনরত রাষ্ট্রগুলোকে দ্রুত ও কার্যকর প্রতিক্রিয়া জানানোর আহ্বান জানানো হয়। তারা বলেন, এই আগ্রাসন শুধু ইরানের সার্বভৌমত্ব নয়, বরং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার বিরুদ্ধে একটি গুরুতর হুমকি।
শেষে ইরানি দূতাবাস স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে, এই আগ্রাসনের ভয়াবহ পরিণতির পূর্ণ দায় জায়োনবাদী শাসকদেরই বহন করতে হবে।
ঢাকা/হাসান/সাইফ