ফসলের মাঠে ফুটে উঠলো শহীদ আবু সাঈদের প্রতিকৃতি
Published: 20th, February 2025 GMT
“প্রথমে সুতা দিয়ে আবু সাঈদের অবয়ব তৈরি করি। পরে সেই গঠন অনুযায়ী, রোপণ করা হয় দুই জাতের ধানের চারা। আমার সাথে ধান রোপণে সহযোগিতা করেন আরও কয়েকজন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত শহীদ আবু সাইদকে উৎসর্গ করেই ফসলের মাঠে ফুটিয়ে তুলেছি।”
এভাবেই নিজের অনুভূতির কথাগুলো বলেন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বেকাসাহারা গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মো.
তিনি কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এনামুল বেকাসাহারা গ্রামের মরহুম আবদুল আউয়ালের ছেলে। মা জোহরা বেগম (৬৫) ও দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে তার সংসার। তার শস্যচিত্র দেখতে অনেকেই ভিড় করছেন, প্রশংসাও করছেন কেউ কেউ। এর আগে এনামুল গত বছর একই জমিতে শস্যচিত্রে ‘জাতীয় পতাকা’ ও ২০২২ সালে ‘মা’ শব্দটি ফুটিয়ে তোলায় বেশ আলোচনায় আসেন।
এনামুল হক জানান, ২০২১ সালে প্রথম এক বিঘা জমিতে বেগুনি ধান রোপণ করেন। পরের বছর মাকে ভালোবেসে ব্যতিক্রম কিছু করার পরিকল্পনা করেন। সেই চিন্তা থেকে এক বিঘা জমিতে বাংলায় ‘মা’ শব্দটি শস্যচিত্রে রূপ দেন। তখন তার মা অনেক খুশি হয়েছিলেন। অনেক দর্শনার্থী সেই শস্যচিত্র দেখে প্রশংসা করেছিলেন। সেই উৎসাহ থেকে পরের বছর জাতীয় পতাকার শস্যচিত্র তৈরি করেন। আর এবার আঁকলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত শহীদ আবু সাঈদের প্রতিকৃতি।
উপজেলার টেংরা বাজার পাড় হলেই বেকাসাহারা গ্রামে মাওনা-বরমী আঞ্চলিক সড়কের দক্ষিণ পাশের বিস্তীর্ণ ধানখেতে সবুজ ও বেগুনি রঙের ধানগাছ দিয়ে ফুটিয়ে তোলা শহীদ আবু সাঈদের অবয়ব চিত্র দেখে অনেকে থমকে যান। সড়ক থেকে বিস্তীর্ণ মাঠে তাকালে চোখ জুড়িয়ে যায়। সবুজ ধানের জমিতে যেন দুই হাত প্রসারিত করে বিভিন্ন দাবি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে বুকে বুলেট পেতে নেওয়ার দৃশ্য দেখতে পেয়ে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে মন দিয়ে সেই দৃশ্য উপভোগ করেন দর্শনার্থীরা।
ফসলের মাঠ থেকে আবু সাঈদের ছবি তুলছিলেন ফরিদ হোসেন নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, “বন্ধুর কাছে খবর পেয়ে শস্যচিত্র দেখতে এসেছি। আমার সঙ্গে আরও অনেকেই এসেছেন। চমৎকার উদ্যোগ নিয়েছেন এনামুল হক।”
আরেক দর্শনার্থী ইব্রাহীম খলিল জানান, ধান রোপণের সময় তিনি এ সড়ক ধরে যাচ্ছিলেন। ব্যতিক্রম পদ্ধতিতে ধান গাছ রোপণের দৃশ্য দেখেছেন। এরপর ধান গাছ বড় হওয়া অবস্থায় এই দৃশ্য আবারও দেখতে এসেছেন।
সন্তানের এমন উদ্যোগের বিষয়ে এনামুল হকের মা জোহরা বেগম বলেন, “আমার ছেলে শখ করে এগুলো করেছে। মা হিসেবে বিষয়গুলো আমার ভালো লাগে। খারাপ তো কিছু করছে না। মানুষ তার প্রশংসা করে। আমিও তাকে উৎসাহ দিই।”
এ ব্যাপারে শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুমাইয়া সুলতানা বন্যা বলেন, “কৃষক এনামুল হকের শস্যচিত্রের কথা শুনেছি। এটি সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ। কৃষি শুধু খাদ্য উৎপাদনের মাধ্যম নয়, সৃজনশীলতারও একটি ক্ষেত্র বলা চলে।”
ঢাকা/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দরজার ক্যামেরায় ‘এলিয়েন’
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার এক নারীর বাড়ির দরজায় লাগানো ক্যামেরায় (ডোরবেল ক্যামেরা) ধরা পড়েছে এক ‘রহস্যময়’ অবয়ব, যা ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে এলিয়েন বা ভিনগ্রহের প্রাণী নিয়ে নানা জল্পনা।
ঘটনাটি ঘটেছে ক্যালিফোর্নিয়ার কম্পটন এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দা জেসিকা ওর্তিজ তাঁর বাড়ির বাইরের দিকের দরজায় লাগানো ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিওর একটি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। এতে দেখা যায়, রাতে বাড়ির পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে অস্বাভাবিক আকৃতির একটি ছায়ামূর্তি।
ভিডিও দেখে তাঁর ছেলে তাঁরই মতো হতভম্ব হয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন এই নারী। সংবাদমাধ্যম এনবিসি লস অ্যাঞ্জেলেসকে ওর্তিজ বলেন, ‘আমার ছেলে বিছানা থেকে উঠে পরপর তিনবার ভিডিওটা চালায়। শেষবার দেখে বলে ওঠে, “মা, এটা একটা এলিয়েন। পুলিশে ফোন করো।”’ জবাবে তিনি বলেন, ‘এলিয়েনের জন্য পুলিশ ডাকব? লোকে তো আমাকে পাগল ভাববে!’
ইনস্টাগ্রামে ভিডিওটি ১০ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগের অন্যান্য মাধ্যমেও ভিডিওটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওর নিচে মন্তব্যের ঘরে কেউ কেউ বলেছেন, এটি এলিয়েন বা অন্য কোনো রহস্যময় প্রাণী হতে পারে। কেউ আবার এমন ধারণাও প্রকাশ করেছেন, এটি হয়তো কোনো মানুষ, যাঁর মাথায় টুপি ছিল বা তিনি হালকা রঙের ব্যাগ কাঁধে নিয়ে চলে যাচ্ছিলেন। দূর থেকে ক্যামেরায় তা এলিয়েনসদৃশ ছায়া তৈরি করেছে।
তবে এ পর্যন্ত কেউই নিশ্চিতভাবে বলতে পারেননি যে এই ছায়ামূর্তির প্রকৃত উৎস কী। এখনো ভিডিওর রহস্যময় অবয়বের বিষয়টি অমীমাংসিতই রয়ে গেছে। ওর্তিজ বলেন, ‘আমার ধারণা, এটা এলিয়েনই। আমি বিশ্বাস করি, সৃষ্টিকর্তা এতটাই সৃজনশীল যে শুধু আমাদের দিয়েই জীবন সৃষ্টি থেমে যেতে পারে না।’
পৃথিবীর বাইরেও প্রাণের অস্তিত্ব থাকা নিয়ে মানুষের মধ্যে নানা ধরনের বিশ্বাস আছে। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে পৃথিবীর বাইরেও প্রাণের অস্তিত্ব আছে। তারা মাঝেমধ্যে পৃথিবীতে আসে। তাদের এলিয়েন বা ভিনগ্রহের প্রাণী বলা হয়। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে এই এলিয়েন দেখতে পাওয়ার দাবি করা হয়েছে। তবে বৈজ্ঞানিকভাবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে নিশ্চিত কিছু বলা হয়নি।