বাংলা কবিতাকে তৃণমূল মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে ‘কবিতা আনুক চিত্তের মুক্তি’ এই স্লোগানে পাবনার চাটমোহরে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী কবিতা উৎসব।

শুক্রবার বেলা ১১টায় চাটমোহরের কুমারগাড়া গ্রামে ছায়াঘেরা বাড়ি একান্তের কাঞ্চনতলায় উৎসবের উদ্বোধন করেন কবি ও সাহিত্যিক নাট্যকার নির্দেশক ড. ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়।

এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন একান্তের প্রধান নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদ।

অমর একুশের দলীয় গান দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এরপর একে একে কবিতা আবৃত্তি করেন ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত কবি সাহিত্যিকরা। যাদের সবার কণ্ঠে ছিল একুশের কবিতা। পরে সাংবাদিক ও সঙ্গীত শিল্পী মাসুদ রানার একক চিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন ও ঘুরে দেখেন অতিথিরা। 

উৎসবে অংশগ্রহণ ও কবিতা আবৃত্তি করেন কবি ও সাহিত্যিক নাট্যকার ড.

ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, সাবেক সংস্কৃতি সচিব আক্তারী মমতাজ, বাসসের বার্তা সম্পাদক মাহফুজা জেসমিন, অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন শাহীন, কথা কবিতা আবৃত্তি চর্চাকেন্দ্র, প্রকৌশলী উত্তম কুমার দাস, আশরাফুল হাসান বাবু, এনামুল হক বাবু, রিচি, প্রজ্ঞা, কাজী বুশরা আহমেদ তিথি, মঞ্জুয়ারা রশিদ, রকিবুর রহমান টুকুন, সৈয়দ শহিদুল ইসলাম নাজু, তিতাস রোজারিও, চিত্রা রোজারিও, রানা আহমেদ, লাবণ্য হাসান, মাহফুজ হাসান, শাপলা খাতুন, রোকাইয়াসহ অনেকে।

আয়োজক একান্তের প্রধান নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদ বলেন, আজ বিশ্বব্যাপী চিন্তার, চেতনার, বোধের যে অন্ধকার, তার বিরুদ্ধে মানুষ নানাভাবে লড়াই করছে। গানে, কবিতায়, সাহিত্যে, চিত্রকলায়, রাজনীতিতে বিভিন্নভাবে এ লড়াই চলছে। তার অন্যতম একটি মাধ্যম হলো কবিতা। আর এই কবিতাকে দেশের নানা প্রান্তের মানুষকে যুক্ত করা, অনুপ্রাণিত করা, এর মাধ্যমে তার চিত্তের মুক্তি ঘটলো। মূলত এই লক্ষ্য নিয়ে আমাদের এই আয়োজন।

আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে উৎসবে অংশগ্রহণকারীরা জানান, এমন আয়োজন ছড়িয়ে দেওয়া দরকার।

বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিক নাট্যকার ড. ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দেশে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল বাড়ছে। কথায় কথায় বাংলার মধ্যে ইংরেজি ঢুকে যাচ্ছে। সবমিলিয়ে জগাখিচুড়ির পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। এটি কাম্য নয়। বাংলা ভাষাকে ভালোবেসে গ্রামের মানুষদের সঙ্গে এমন আয়োজন আমাদের আশান্বিত করে, স্বপ্ন দেখায়। এমন আয়োজন সবখানে ছড়িয়ে পড়ুক।

সাবেক সংস্কৃতি সচিব আক্তারী মমতাজ বলেন, আমার খুব ভালো লাগছে এমন একটি আয়োজনে অংশ নিতে পেরে। ঢাকা থেকে আসা আবৃত্তি শিল্পীদের সঙ্গে স্থানীয় আবৃত্তি শিল্পীরা, শিশুরা যেভাবে কবিতা আবৃত্তি করলো তাতে সত্যিই আমিও অভিভূত। এই উদ্যোগকে অভিনন্দন জানাই। এর মাধ্যমে কবিতা ছড়িয়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের মাঝে।

দুই দিনব্যাপী উৎসবের সারাদিন কবিতা আবৃত্তি ও সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। উৎসব শেষ হবে শনিবার।   

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ

ঝমঝম বৃষ্টি, কর্দমাক্ত পথঘাট, খাল-বিলে থৈ থৈ পানি- এমন দৃশ্যপট সামনে না থাকলেও ভেবে নিতে দোষ কি। কারণ, আজ পহেলা আষাঢ়।

রবি ঠাকুরের ভাষায়— ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশও ছেয়ে... আসে বৃষ্টিরও সুবাসও বাতাসও বেয়ে...’।

অবশ্য একেবারে নিরাশ করেনি আষাঢ়। রাজধানীতে সকাল থেকেই আকাশে মেঘের আনাগোনা আর কোথাও হালকা বৃষ্টি জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে বর্ষার আগমন। বর্ষার আগমন যেন স্বস্তি-শান্তি ও আনন্দের। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস নগরবাসীর জীবনে এক আনন্দের বার্তা। 

বাংলার প্রকৃতিতে আলাদা বৈশিষ্টময় বর্ষা ঋতুর আজ যাত্রা শুরু হলো। 

বলা হয়, গ্রীষ্মের খরতাপের ধূসর নাগরিক জীবন আর রুদ্র প্রকৃতিতে প্রাণের স্পন্দন জাগায় বর্ষা। জ্যৈষ্ঠের প্রচণ্ড খরতাপে রুক্ষ প্রকৃতি সজীব হয়ে উঠবে বর্ষার বর্ষণের মৃদঙ্গ-ছোঁয়ায়, এটাই যে সকল বাঙালির চাওয়া। 

আষাঢ়ের রিমঝিম বৃষ্টি গ্রীষ্মের ধুলোমলিন জীর্ণতাকে ধুয়ে ফেলে গাঢ় সবুজের সমারোহে প্রকৃতি সাজে পূর্ণতায়। রঙিন হয়ে পুকুর-বিলে ফোটে শাপলা-পদ্ম। বর্ষা ঋতু তার বৈশিষ্ট্যের কারণে স্বতন্ত্র। বর্ষার প্রবল বর্ষণে নির্জনে ভালোবাসার সাধ জাগে, চিত্তচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। বর্ষার নতুন জলে স্নান সেরে প্রকৃতির মনও যেন নেচে ওঠে। ফুলে ফুলে শোভিত হয় প্রকৃতি। তাই বর্ষাবিহীন বাংলাদেশ ভাবাই যায় না। 

বর্ষা বাঙালি জীবনে নতুন প্রাণসঞ্চারকারী। বৃষ্টিস্নাত কদম ফুলের সৌন্দর্য্য যে দেখেছে, মুগ্ধ নয়নে চেয়ে না থেকে পারেনি। এর বর্ণনায় পল্লীকবি জসীমউদদীন লিখেছেন- ‘বনের ঝিয়ারি কদম্বশাখে নিঝঝুম নিরালায়, / ছোট ছোট রেণু খুলিয়া দেখিছে, অস্ফুট কলিকায়।’

বৃষ্টি হলে গ্রামের নদী নালা পুকুরে জল জমে থৈ থৈ করে। বর্ষা আনন্দ-বেদনার সারথী। সবুজের সমারোহে, মাটিতে নতুন পলির আস্তরণে বর্ষা আনে জীবনেরই বারতা। 

উন্নয়নের নামে চলমান প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসের প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি নিয়ে প্রতি বছরের মতো এ বছরও বর্ষা ঋতুকে বরণ করে নিতে ‘বর্ষা উৎসব’ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। 

রবিবার (১৫ জুন) আষাঢ়ের প্রথমদিনে বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকালে সুর-সংগীতে প্রকৃতি-বন্দনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে উৎসবের কর্মসূচি।

ঢাকা/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কপালে ১৩টি এবং থুতনিতে ৪টি সেলাই করা লাগে
  • দেশের পর এবার বিদেশেও ঈদের সিনেমার মুক্তি
  • বকুলতলায় বৃষ্টির সুর
  • কলকাতায় নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করলেন জয়া
  • বর্ষা উৎসবে বন ও পরিবেশ ধ্বংসের প্রতিবাদ, পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষাসহ কয়েকটি দাবি
  • নাচ-গান-আবৃত্তিতে চারুকলায় বর্ষাবরণ
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরির সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরি সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ
  • কলিজা ঠান্ডা করে দেওয়া ছবি ‘উৎসব’