ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী চলন্ত বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। ‘সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দের’ ব্যানারে আজ শুক্রবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটের আমতলা চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। ক্যাম্পাসের কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্যারিস রোডে এসে মিছিলটি শেষ হয়। পরে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।

সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী রাবেয়া মুহিব। এ সময় বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মেহেদী মারুফ, আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের সদ্য প্রাক্তন শিক্ষার্থী কামরুল হাসান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাকিব হোসেন, ছাত্র গণমঞ্চের আহ্বায়ক নাসিম সরকার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল, দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী শ্রেয়সী, বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী গোপাল রায় প্রমুখ।

আরও পড়ুন‘অভিযুক্ত’ চালক-সুপারভাইজারকে আসামি না করায় প্রশ্ন বাদীর১ ঘণ্টা আগে

সমাবেশে মেহেদী মারুফ বলেন, ‘ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী একটি বাসে আমাদের দুজন বোনকে ধর্ষণ করা হয়েছে। ধর্ষণের পরেও পুলিশ ধর্ষকদের বিরুদ্ধে মামলা নিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আপনি যদি দায়িত্ব পালন করতে না পারেন, তাহলে অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। আপনার মতো একজন অযোগ্য উপদেষ্টাকে আমরা চাই না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আমাদের উদাত্ত আহ্বান, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অতি দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসুন।’

২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে না পারলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগের দাবি জানান কামরুল হাসান (সজীব)। তিনি বলেন, ‘এই অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের কোনো আত্মীয় নয়। অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে আমরা এই সরকারকে দায়িত্ব দিয়েছি, যেন দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়। কিন্তু তারা যদি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, তবে তাদের গদি থেকে নামিয়ে দিতেও আমাদের বেশি সময় লাগবে না।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ঘেঁষে একের পর এক অঘোষিত ভাগাড়, বর্জ্য ফেলে পরিবেশদূষণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের হাড়াতলী এলাকা। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার এই এলাকায় গেলে দূর থেকেই নাকে ভেসে আসে উৎকট দুর্গন্ধ। মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনের পাশে চোখে পড়ে সারি সারি ময়লার স্তূপ। মহাসড়কের পাশ যেন হয়ে উঠেছে ময়লা-আবর্জনা ফেলার ভাগাড়ে।

শুধু হাড়াতলী এলাকাই নয়; ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের বেশ কয়েকটি স্থানে এমন অঘোষিত ভাগাড় গড়ে উঠেছে। মহাসড়কের প্রায় ১০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রয়েছে কুমিল্লা জেলার অংশ। এর মধ্যে অন্তত ২০টি স্থানে একইভাবে ময়লা ফেলা হচ্ছে। কোথাও কোথাও সিটি করপোরেশন, পৌরসভার মতো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান মহাসড়কের পাশে তাদের সংগ্রহ করা ময়লা ফেলছে। এতে মহাসড়কের পাশে বিভিন্ন স্থানে আবর্জনার স্তূপ দিন দিন বাড়তে, মহাসড়ক পরিণত হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা ফেলার ভাগাড়ে। এভাবে পরিবেশদূষণ বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশবাদীরা।

বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কুমিল্লার সভাপতি মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এভাবে বর্জ্য ফেলার কারণে পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যদি সঠিকভাবে করতে না পারে, তাহলে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের কাজটা কী? মানুষ তো ট্যাক্স দেয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য। এভাবে ময়লা-আবর্জনা ফেলা একধরনের অপরাধও। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে এসব বিষয়ে কঠোর হওয়া দরকার।

হাড়াতলী এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, প্রায় দুই বছর আগে স্থানটিতে ময়লা ফেলা শুরু করে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন। এরপর সেটি ধীরে ধীরে পরিণত হয় ভাগাড়ে। দিন যত গেছে, ময়লা ফেলার জায়গাটির আকার ততই দীর্ঘ হয়েছে। এ কারণে ওই স্থান দিয়ে হেঁটে চলাচল করা বেশ দুষ্কর হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন আশপাশের বসবাসকারীরা। ভাগাড়ের আশপাশে অন্তত তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেগুলোর শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও ময়লার দুর্গন্ধে নাকাল।

এভাবে পরিবেশদূষণ বন্ধে আমরা দীর্ঘদিন ধরে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করছি। তবে এ বিষয়ে মূল দায়িত্বটা পালন করতে হবে সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদকে।মোসাব্বের হোসেন মোহাম্মদ রাজীব, উপপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লা

স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ময়লা ফেলতে আমরা বারবার বাধা দিয়েছি, কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। সিটি করপোরেশন সবুজে ঘেরা এলাকাটির বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। এখনো প্রতিদিন ময়লা বাড়ছে। সিটি করপোরেশন বলে, তারা নাকি এখন ময়লা ফেলে না। তাহলে আমাদের প্রশ্ন, ময়লা কারা ফেলছে?’

স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী তাহমিনা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, শ্রেণিকক্ষে বসা যায় না দুর্গন্ধের জন্য। একটু বাতাসেই নাকে ভেসে আসে ময়লার দুর্গন্ধ। কলেজে প্রবেশের সময় নাক চেপে ধরে আসতে হয়। এ ছাড়া পরিবেশও মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে।

জানতে চাইলে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, হাড়াতলীতে তিন মাস ধরে তাঁরা আবর্জনা ফেলছেন না। সিটি করপোরেশনের ফেলা ময়লাগুলো ভেকু দিয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এখন রাতের আঁধারে আশপাশের লোকজন এবং বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলছে। যারা ময়লা ফেলছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার প্রবেশমুখ বালুজুড়ি এলাকায় ময়লার ভাগাড়

সম্পর্কিত নিবন্ধ