তিনি নিজেই নানান কাণ্ড ঘটিয়ে সংবাদের শিরোনাম হন। কখনো কখনো বিতর্কও হয়। গত বছর নিজের মৃত্যুর খবর নিজেই রটিয়েছিলেন। ব্যতিক্রম পোশাকের  কারণে বেশ কয়েকবার আলোচনায় আসেন পুনম পান্ডে । তবে এবার ঘটল অন্য রকম অঘটন। এবার অন্যের কারণে শিরোনামে তিনি।
ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের খবর অনুযায়ী, এক ভক্ত সেলফি তুলতে এসে যৌন হয়রানি করেছেন এই বলিউড তারকাকে। ঘটনার আংশিক দৃশ্যসংবলিত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

যেখানে দেখা যাচ্ছে, একটা লাল রঙের গাউন পরে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে আছেন পুনম। তিনি যখন পাপারাজ্জিদের জন্য পোজ দিচ্ছিলেন তখন পেছন দিয়ে এক ব্যক্তি এসে বলেন যে তিনি ছবি তুলতে চান। কিন্তু তারপরই দেখা যায় পুনমকে জাপটে ধরেন তিনি। এ পর্যায়ে তাঁকে চুমু খাওয়ারও চেষ্টা করেন। আকস্মিক ঘটনায় চমকে ওঠেন তারকা, সরিয়ে নেন নিজেকে।  
ভিডিওতে অবশ্য নানা রকম মন্তব্য আসছে। অনেকের মতে, পুরো ঘটনা বানানো। মন্তব্যের ঘরে একজন লিখেছেন, ‘কী অভিনয় করছেন। দারুণ দারুণ।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘পুরোটাই বানানো। সেটা দেখেও লোকজন রে রে করছে। কী অবস্থা!’ কেউ আবার লোকটিকে উদিত নারায়ণের সঙ্গে তুলনা করেছেন চুমু খেতে যাওয়ার জন্য। আরেকজন লিখেছেন, ‘ভীষণই নিম্নমানের চিত্রনাট্য আর অভিনয়। আরও উন্নতি করতে হবে।’

গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে নিজের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে সংবাদের শিরোনাম হন পুনম। তাঁর অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একটি পোস্টে বলা হয়, ক্যানসারে প্রাণ হারিয়েছেন বিটাউনের এই অভিনেত্রী। এরপর তাঁর ম্যানেজারের বরাতে এনডিটিভি, ইন্ডিয়া টুডেসহ ভারতের শীর্ষ সংবাদমাধ্যমে পুনমের মৃত্যুর খবর আসে। পরে ইনস্টাগ্রামে এক ভিডিও বার্তা দিয়ে পুনম জানিয়েছেন, তিনি বেঁচে আছেন। মূলত জরায়ু ক্যানসার নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতেই মৃত্যুর খবরটি ছড়িয়েছেন।
২০১৩ সালে ‘নাশা’ সিনেমা দিয়ে বলিউডে পুনমের অভিষেক হয়। ২০১১ সালে ভারত বিশ্বকাপ ক্রিকেটের শিরোপা জিতলে নগ্ন হওয়ার ঘোষণা দিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন পুনম পান্ডে। টেন্ডুলকার-ধোনিরা বিশ্বকাপ জিতলে নিজের ওই অবস্থান থেকে সরে আসেন পুনম।

এরপর নিজের কিছু ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করে এবং ‘নাশা’ ছবিতে খোলামেলা অভিনয়ের জন্য আলোচনায় আসেন এই অভিনেত্রী। খোলামেলা পোশাকের কারণে বারবার তাঁকে ঘিরে বিতর্কের ঝড় উঠত। তবে এসব কোনো কিছুকেই পাত্তা দিতেন না তিনি। ২০১৪ সালে গভীর রাতে মুম্বাইয়ের রাস্তায় অশালীন আচরণের অভিযোগে পুনমকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ